রাইজিংসিলেট- সিলেটে ৫৯৩টি মণ্ডপে হবে দুর্গাপূজা। সনাতন ধর্মালম্বীদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার আর মাত্র কয়েকদিন বাকী। আগামী ৮ অক্টোবর মহাষষ্ঠীতে দেবীর বোধনের মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। ১২ অক্টোবর দশমীতে বিসর্জন ও শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে শেষ হবে শারদীয় দুর্গাৎসব।
এদিকে, শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপনে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে সিলেটে। এবার এই জেলার ৫৯৩টি মণ্ডপে দুর্গোৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে। উৎসব নির্বিঘ্নে পালনের লক্ষ্যে সিলেট মহানগর ও জেলায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। মণ্ডপগুলোতে নেওয়া হচ্ছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। উৎসবকে ঘিরে মণ্ডপে মণ্ডপে বেড়েছে প্রতিমা শিল্পীদের ব্যস্ততা। অপরদিকে পূজা মণ্ডপ ঘিরে সকল ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ সিলেট মহানগর এবং জেলা শাখা সূত্রে জানা গেছে, সিলেট জেলায় আসন্ন দুর্গোৎসবে মোট ৪৪০টি মন্ডপে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি চলছে। তার মধ্যে সার্বজনীন ৪০৮টি ও পারিবারিক ৩২টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। আর সিলেট মেট্রোপলিটন এলাকায় চলছে ১৫৩টি মন্ডপে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি। তার মধ্যে সার্বজনীন ১৩৬টি ও পারিবারিক ১৭টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
এসব মণ্ডপ ঘিরে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থার জোর প্রস্তুতি শুরু করেছে পুলিশ। পূজা চলাকালীন যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সতর্ক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সাদা পোশাকে গোয়েন্দা তৎপরতাও জোরদার করা হয়েছে। প্রতিটি মণ্ডপের নিরাপত্তায় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে আনসার এবং মণ্ডপের নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন।
নগরীর বল্লব নারায়ণ মৃৎশিল্পালয়ের প্রতিমা কারিগর নন্দলাল বলেন, এবার প্রতিমা তৈরির সংখ্যা একটু কম। দেশের চলমান পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি। এর জন্য হয়তো অন্য বছরের তুলনায় উৎসবের আমেজ একটু কম। সময় ঘনিয়ে আসার উৎসবের আমেজ বাড়বে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ সিলেট মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক চন্দন দাশ বলেন, সিলেট জেলায় শান্তিপূর্ণভাবে পূজা আয়োজনের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। পূজা শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করছি। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটি ও প্রশাসন মিলে দুর্গোৎসব সফল করার জন্য বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. রেজাউল করিম বলেন, সিলেট হচ্ছে সম্প্রীতির নগরী। এ নগরীর শান্তিশৃঙ্খলা এবং সম্প্রীতি বজায় রাখার দায়িত্ব আমাদের সবার। পূজা চলাকালীন মন্দিরের স্বেচ্ছাসেবীদের আইডিকার্ড সঙ্গে রাখতে হবে। সিসিটিভি ক্যামেরা এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সঞ্চালনার জন্য জেনারেটরের ব্যবস্থা রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ধর্মীয় পঞ্জিকা মতে, আগামী ২ অক্টোবর মহালয়ার মধ্য দিয়ে দেবী পক্ষের সূচনা হবে। ১২ অক্টোবর মহাদশমীর বিহিত পূজা অনুষ্ঠিত হবে। সেদিন সন্ধ্যায় বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শারদীয়া দুর্গোৎসবের সমাপ্তি ঘটবে। এবার পৃথিবীতে দশভুজার আগমন হবে দোলায় চড়ে। তিনি কৈলাশে ফিরবেন ঘোটকে (ঘোড়া) চড়ে।