• ১১ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ , ২৬শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ , ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সিলেট জেলা রেজিস্ট্রার অফিস যেনো অনিয়ম-দূর্নীতি, টেম্পারিংজালিয়াতি ও ঘুষবাণিজ্যর হেরেম খানায় পরিনত হয়েছে!

risingsylhet.com
প্রকাশিত আগস্ট ৮, ২০২৩
সিলেট জেলা রেজিস্ট্রার অফিস যেনো অনিয়ম-দূর্নীতি, টেম্পারিংজালিয়াতি ও ঘুষবাণিজ্যর হেরেম খানায় পরিনত হয়েছে!

সিলেট জেলা রেজিস্ট্রার অফিস যেনো অনিয়ম-দূর্নীতি, টেম্পারিংজালিয়াতি ও ঘুষবাণিজ্যর হেরেম খানায় পরিনত হয়েছে!

সিলেট জেলা রেজিস্ট্রার অফিস যেনো অনিয়ম-দূর্নীতি, টেম্পারিংজালিয়াতি ও ঘুষবাণিজ্যর হেরেম খানায় পরিনত হয়েছে!

দেশের সরকারী অফিস আদালতের নিয়োগ, পদায়ন বদলি ও অপসারণ প্রচলিত বিধি মোতাবেক চললেও ব্যতিক্রম শুধু সিলেট জেলা রেজিস্ট্রার অফিসে।সিলেট জেলা রেজিস্ট্রার অফিস যেনো অনিয়ম-দূর্নীতি, টেম্পারিংজালিয়াতি ও ঘুষবাণিজ্যর হেরেম খানায় পরিনত হয়েছে।এখানে নিয়ম-বিধির কোনো বালাই নেই।

সিলেট সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের রেকর্ড কিপার প্রণয় ঘোষ। একজন মহা ক্ষমতাধর ও ঘুষখোর হিসেবে সর্বত্র আলোচিত ও সমালোচিত। সিলেট সদর সাব-রেজিস্ট্রার বারবার বদলি হলেও বদলি হন না রেকর্ড কিপার প্রণয় ঘোষ। দীর্ঘ প্রায় ৫ বছর ধরে শক্তভাবে আসন গেড়ে বসে আছেন সদর অফিসের রেকর্ড কিপারের মত জন-গুরুত্বপূর্ণ পদে।
সিলেট সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও দালালের উপদ্রব দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারি কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে দালাল চক্ররা তাদের অপকর্ম প্রকাশ্যে চালিয়ে গেলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিরব দর্শকের ভূমিকায়। ফলে মাস্টার রোল কর্মচারী ও দালালদের নিয়ন্ত্রনেই চলে সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের কার্যক্রম।
অভিযোগ রয়েছে, রেকর্ড কিপার প্রণয় ঘোষ রেকর্ড রুমের ভলিয়ম পাল্টাতে খুই পারদর্শী। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ভলিয়ম খোলে ও পাতা সরিয়ে এই সিরিয়ালে ভূমিখেকো ও ভূমিদস্যু শ্রেণির মানুষের সৃষ্ট বেকডেইটের জাল দলিল ভলিয়মে প্রবেশ করে দিতে পারেন। ফলে ভূমিহারা হতে হয় প্রকৃত ক্রেতা ও দলিল গ্রহীতাদর। এছাড়া ঘষামাঝা ও টেম্পারিংয়েও তিনি খুবই সিদ্ধহস্ত। ভলিয়মে লিপিবদ্ধ দলিলের দাগ খতিয়ান ও মৌজা বদলে দিতে পারেন অতিসহজে। পূরনো ও প্রভাবশালি কর্তাব্যক্তি হওয়ায় অধীনস্তরা তার বিরুদ্ধে মূখ খোলতে সাহস পান না। কেউ প্রতিবাদ করলে বা জালিয়াতির কাজ করতে অস্বীকৃতি জানালে তার উপর নেমে আসে শাস্তির খড়গড়। ভূমির শ্রেণী বদলিয়ে কম টাকায় (ফি) জমির দলিল রেজিস্ট্রি করিয়ে দেওয়ারও অভিযোগ আছে প্রণয় ঘোষের বিরুদ্ধে।

কর্তৃপক্ষ বা বড়কর্তাকে ম্যানেজ করে আজীবন চাইলে বহাল থাকতে পরবেন একই অফিসের কর্মক্ষত্রে। এখানে চাকরিবিধি’র কোনো বালাই নেই। তাইতো কোনো কর্মকর্তা কর্মচারী বছরকে বছর আনলিমিটেড চাকরি করছেন সিলেট জেলা রেজিস্ট্রার অফিসের অধিনে বিভিন্ন সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে। ব্যাপরোয়া হয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন অনিয়ম দুর্নীতি, টেম্পারিং জালিয়াতি ও ঘুষবাণিজ্য। জালিয়াতির মাধ্যমে অনায়াসে দিয়ে দিচ্ছেন ‘এক গাভির বাছুর অন্য গাভির নিচে’। হয়রানী ও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। অনিয়মের মাধ্যমে রাতারাতি কোটি কোটি টাকার সম্পদ ও বিত্তবৈভবের মালিক হয়ে যাচ্ছেন জেলা রেজিস্ট্রারের অধীন জেলার কয়েকটি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারি। তাদের খুটির জোর ঘুরে ফিওে দেখা দেয় এই প্রশ্ন। বারবার অনিয়ম-জালিয়াতিতে ধরা পড়েও তাদের বদলি হয় না অন্যত্র। অজ্ঞাত কারণে ব্যবস্থা নেওয়া হয়না তাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ভূক্তভোগীদের।

অনিয়ম ও জাল-জালিয়াতির কারণে এ পর্যন্ত পরপর ৩ বার বরখাস্ত হয়েও বারবার একই পদে পুনর্বহাল হয়েছেন তিনি। জেলা রেজিস্ট্রার অন্যদের পোস্টিং মেয়াদ শেষ হতেই বদলি করে নিলেও, অজানা কারণে রেকর্ড কিপার প্রণয় ঘোষকে বদলি বা স্থানান্তর করতে চান না এ অফিস থেকে। আর এ কারণেই অনিয়ম-জালিয়াতির কারখানায় পরিনত হয়ে পড়েছে সিলেট সদর সাব-রেজিষ্ট্রি অফিস এর রেকর্ড রুম। ফলে জনগনের ভূ-সম্পত্তির ডকুমেন্ট নিরাপদ নয় সিলেট সদর সাবরেজিস্ট্রি অফিসে এমন আশংঙ্কা অনেকের।

সূত্রে প্রকাশ, প্রণয় ঘোষ ২০২০ সালের ফেব্রæয়ারিতে সিলেট সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে যোগদান করে প্রায় ৫ বছর ধরে তদবিরের মাধ্যমে এই আসন আঁকড়ে ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন। অথচ বিধি অনুযায়ী ৩ বছর পর তার বদলী হওয়ার কথা। শুধু প্রণয় ঘোষ নয়, সিলেট জেলা রেজিস্ট্রারে অধীন আরেক কর্মচারী তপন কান্তি দে। টিসি মোহরার পদে দীর্ঘ ৫ বছর ধরে জেলার বিশ্বনাথ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে কর্মরত থাকলেও অজ্ঞাত কারণে তাকে বদলী করছেন না সিলেট জেলা রেজিস্ট্রার। অভিযোগ রয়েছে তপন কান্তি দে কাগজে কলমে বিশ্বনাথ অফিসে থাকলেও সিলেট সদর সাবরেজিস্ট্রি অফিসে ঘুষের দালালী করেন এবং বেতন-ভাতা নেন বিশ্বনাথে কর্মরত হিসেবে। তপন ২০১৮ সালের জুলাইতে বিশ্বনাথে যোগদান করে দীর্ঘ প্রায় ৬ বছর ধরে সেখানে পোস্টিং-এ রয়েছেন। তদবিরের মাধ্যমে বদলী টেকিয়ে স্বপদে বহাল থাকাদের মধ্যে আরেকজন সিলেটের বালাগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের অফিস সহকারি আব্দুল মুক্তাদির। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে যোগদান করে দীর্ঘ ৫ বছর ধরে তিনি একইস্থলে বহাল রয়েছেন। তার বিরুদ্ধেও ঘুষ বাণিজ্য ও দুর্নীতির অভিযোগের কোনো অন্তঃনেই। এ বিষয়ে সিলেট জেলা রেজিস্ট্রার মুন্সী মোখলেছুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি নিয়ম ও বিধিবহির্ভুত ভাবে কয়েকজন কর্মচারী কর্মস্থলে দীর্ঘদিন থাকার কথা স্বীকার করে বলেছেন, অচিরেই তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

৫৭ বার পড়া হয়েছে।