
সংসদীয় ফরিদপুর-৪ আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাস ও পুলিশের মামলার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে ফরিদপুরের ভাঙ্গা।
বিক্ষোভ থেকে পরিস্থিতি গড়ায় সহিংসতায়। উপজেলা পরিষদ, ইউএনও কার্যালয়, অফিসার্স ক্লাব, হাইওয়ে থানা ও পৌরসভায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা।
এই সহিংসতায় মাইটিভির সাংবাদিক সারোয়ার হোসেন কুপিয়ে আহত হন। যমুনা টিভির প্রতিনিধি আব্দুল মান্নানসহ আরও কয়েকজন সাংবাদিকও মারধরের শিকার হন। আহত সাংবাদিকরা বর্তমানে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে সড়ক অবরোধ শিথিল থাকলেও সাড়ে ১০টার পর ফের অবরোধ শুরু হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাধায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। দুপুর ১টার দিকে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কয়েক হাজার মানুষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মিছিলে যোগ দেয়। এরপর পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালানো হয়। আহত অবস্থায় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আশ্রয় নেন ভাঙ্গা কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মসজিদে, যেখানে স্থানীয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাদের রক্ষা করেন।
পরে বিক্ষুব্ধরা থানায় হামলা চালিয়ে গাড়ি ও ভবন ভাঙচুর করে। এরপর একে একে উপজেলা পরিষদ, হাইওয়ে অফিস এবং পৌরসভা কার্যালয়ে হামলা হয়। উপজেলা পরিষদে মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
ঘটনার সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সেনাবাহিনী ও পুলিশের উপস্থিতিতেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়নি। দুপুরে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন জড়ো হয়ে হঠাৎ করে সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ে।
ইউএনও মো. মিজানুর রহমান জানান, তিনি ও কর্মকর্তারা নিরাপদ স্থানে অবস্থান করছেন। ইউএনও কার্যালয়, নির্বাচন কার্যালয়সহ বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, সর্বদলীয় ঐক্য পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক ও আলগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ম. ম. সিদ্দিক মিয়াকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ। এ ছাড়া রোববার রাতে ৯০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত ৪ আগস্ট নির্বাচন কমিশনের গেজেটে ফরিদপুর-৪ আসনের আলগী ও হামিরদি ইউনিয়নকে ফরিদপুর-২ আসনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এরপর থেকেই তিন দফায় মহাসড়ক, রেলপথ ও এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করে আসছেন এলাকাবাসী। এতে দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার মানুষের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ তৈরি হয়।