বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে সাইদুল ইসলাম (২৩) নামের এক বাংলাদেশি নিহতের ঘটনায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বিজিবির পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
ঘণ্টাব্যাপী পতাকা বৈঠকে সিলেট সেক্টরের সুনামগঞ্জ-২৮ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন বাংলাদেশের (বিজিবি) পক্ষে নেতৃত্ব দেন- ব্যাটালিয়ন কমান্ডার লে. কর্নেল এ কে এম জাকারিয়া কাদির। অপর দিকে শিংল সেক্টরের ১৯৩ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের পক্ষে নেতৃত্ব দেন বিএসএফ ব্যাটালিয়ন কমান্ড্যান্ট রাজীব কুমার। এ ছাড়া এই বৈঠকে বিজিবির পক্ষে ১২ সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধিদল এবং ভারতের ১৯৩ ব্যাটালিয়ন বিএসএফের পক্ষে ১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি প্রতিনিধিদল উপস্থিত ছিলেন।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) রাতে বিজিবির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে দুপুরে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার লাউরগড় বিওপির দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত পিলার ১২০৩/৮-এসের নিকটবর্তী সায়েদাবাদ-নালিকাটা বর্ডার হাট এলাকায় বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
পতাকা বৈঠকে বুধবার সন্ধ্যায় মাছিমপুর সীমান্তে বাংলাদেশি যুবক সাইদুল ইসলামকে ভারতের অভ্যন্তরে ফায়ারের বিষয়ে প্রতিবাদ জানান এবং এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চান সুনামগঞ্জ ব্যাটালিয়ন ২৮ বিজিবির অধিনায়ক।
সুনামগঞ্জ ব্যাটালিয়ন ২৮ বিজিবির অধিনায়ক এ কে এম জাকারিয়া কাদির জানান, দুই দেশের পতাকা বৈঠক সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে। পতাকা বৈঠক শেষে মাছিমপুর বিওপির অধীনস্থ গামারীতলায় নিহত হওয়ার ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং সীমান্তবর্তী এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এলাকার বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
প্রতি উত্তরে বিএসএফ কমান্ড্যান্ট জানান, ১৯৩ ব্যাটালিয়ন বিএসএফ করাইগড়া ক্যাম্পের দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় বাংলাদেশি নাগরিকের ওপর ফায়ারের ব্যাপারে বিএসএফ এবং পুলিশের সমন্বয়ে একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। তদন্ত শেষে ফায়ারের সম্পৃক্ততার বিষয়টি জানানো হবে। এ ছাড়া সীমান্তে আহত, নিহত ও ফায়ারিং দুর্ঘটনা বন্ধের বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
উল্লেখ্য, সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার গামাইতলা গ্রামের জয়নাল আবদিনের ছেলে সাইদুল ইসলাম বাংলাদেশি সুপারি নিয়ে উপজেলার মাছিমপুর সীমান্তে দিয়ে ভারতে যাচ্ছিলেন। এ সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) তাকে গুলি করে। পরে সেখানে থাকা সুনামগঞ্জ-২৮ ব্যাটালিয়ন বিজিবির সদস্যরা তাকে উদ্ধার করেন। পরে স্থানীয়রা তাকে প্রথমে বিশ্বম্ভরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।