ঢাকাবুধবার , ১২ মার্চ ২০২৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

সুনামগঞ্জ কর্তৃক বাঁধের কাজ শতভাগ শেষ জেলা প্রশাসনের এমন দাবি প্র ত্যা খ্যা ন

rising sylhet
rising sylhet
মার্চ ১২, ২০২৫ ৭:৩৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সুনামগঞ্জ কর্তৃক বাঁধের কাজ শতভাগ শেষ জেলা প্রশাসনের এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করে সংবাদ সম্মেলন করেছে হাওর ও কৃষকের সংগঠন হাওর বাঁচাও আন্দেলন। তারা এ বিষয়ে সহযোগিতা চেয়ে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা বরাবরে স্মারলিকলিপি দিয়েছে।

হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ সভাপতি অধ্যক্ষ চিত্তরঞ্জন তালুকদারের সভাপতিত্বে ও সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ ওবায়দুল হক মিলনের সসঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের জেলা কমিটির সভাপতি ইয়াকুব বখৎ বাহলুল।

বুধবার সকালে শহীদ জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরীতে সাংবাদিক সম্মেলন করে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে পানি সম্পদ উপদেষ্টা বরাবরে স্মারক লিপি দেওয়া হয়।

এ সময় বক্তব্য রাখেন হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদ উল্লাহ সরকার, সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক একে কুদরত পাশা, বাঁধ বিষয়ক সম্পাদক রাজু আহমেদ, জেলা কমিটির সহ সভাপতি মুর্শেদ আলম, আলীনুর, যুগ্ম সম্পাদক জিয়াউর রহমান, ওবায়দুল মুন্সীসহ অনেকে। তারা বলেন, হাওরের বোর ফসল রক্ষায় প্রাক্কলন পূর্ব থেকেই আমরা কৃষকের পক্ষে বিভিন্ন দাবি জানিয়ে আসছি। যা আপনার প্রচার ও প্রকাশ করেছেন। আমরা বলছি অনতি বিলম্ভে হাওরের বোর ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শেষ করতে হবে। যেসব পিআইসি ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাঁধের কাজ শেষ করতে পারেনি তাদের বিল যেন পরিশোধ করা না হয়। আবার যারা সঠিক সময়ে বাঁধের কাজ শতভাগ শেষ করেছে তাদের শতভাগ টাকা পরিশোধের ও দাবি জানাচ্ছি। অন্যতায় হাওরে বিপর্যয় ঘটলে এর দায় কাবিটা স্কীম বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটিকেই নিতে হবে। আমরা হাওরের বিষয়ে রাপথ সরব রয়েছি প্রয়োজনে হাওরের বিষয়ে আদলতের স্মরাপন্ন হবো। এসময় হাওর বাঁচাও আন্দোলনের আরো বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দরাও উপস্তিত ছিলেন।

বক্তব্যে বলা হয়, চলতি বোরো মৌসুমে ফসলের সুরক্ষায় হাওরে ৫৮৭ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণের জন্য ১২৭ কোটি টাকা বরাদ্দে ৬৮৬টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ি অর্থবছরের ১৫ ডিসেম্বর বাঁধের কাজ শুরু ও ২৮ ফেব্রুয়ারি কাজ শেষ করার কথা। আমরা অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, নির্ধারিত ১৫ ডিসেম্বর নিয়মরক্ষার্থে কয়েকটি বাঁধে লোক-দেখানো কাজ উদ্বোধন করা হয়েছিল। সর্বশেষ মার্চ মাস পর্যন্ত বাঁধের কাজ শুরু করা হয়েছে। তাতে ক্ষতিগ্রস্থ হবেন আমাদের কৃষকরা। ডিসেম্বরে শুরু হয়ে ফেব্রুয়ারিতে যে বাঁধের কাজ শেষ হবে সে বাঁধ আগাম বন্যার চাপ সামলাতে সক্ষম হবে। কিন্তু মধ্য ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে যে সব বাঁধের কাজ শুরু করে নিয়মরক্ষার কাজ করা হয়েছে আগাম বন্যা আসলে প্রথমেই সে বাঁধগুলো ভেঙ্গে যাবে।

এবার বাঁধের কাজে শুরু থেকেই একধরনের ঢিলেমি লক্ষ্য করা গেছে। মাঠপর্যায়ে গণশুনানি করে প্রকল্প নির্ধারণ ও পিআইসি গঠনের দাবি থাকলেও, সেটি করা হয়নি। স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের প্রভাবে পিআইসি গঠন করা হয়। এতে প্রশাসন ও পাউবো কর্মকর্তাদের একটা যোগসাজশ থাকে। যে কারণে ওই ব্যক্তিরা কাজে গাফিলতি করেন। আমরা মনে করি কাবিটা স্কীম বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটি দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে নিজেরা লাভবান হওয়ার জন্য কৃষকের হাওরের ধানকে হুমকির মূখে ফেলে দিয়েছেন। এবার কৃষকের ধান ঘোলায় তুলতে কোন সমস্যা হলে এর দায় কাবিটা স্কীম বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটিকেই নিতে হবে।

বাঁধের প্রাক্কলন থেকে শুরু করে পিআইসি গঠন পর্যন্ত চলচাতুরীর আশ্রয়নেয় পাউবো এবং প্রশাসন যার ফলে সঠিক সময়ে পিআইসি গঠন প্রক্রিয়া শেষ হয়নি এবং কাজ শুরু করতে দেরী হয়। প্রাক্কলনে কিলো মিটার এর যে মাফ সেটা একটা চালাকী। হাওর বাঁচাও আন্দেলন এর পক্ষ থেকে অক্টোবর নভেম্বর মাসে যে জরিপটি পরিচালনা করা হয় তাতে দেখা যায়, অনেক বাঁধের কিলোমিটারের পর কিলোমিটার মাটি ভরাটের প্রয়োজন নেই। কিন্তু প্রাক্কলনের সময় অক্ষত বাঁধেতে ক্ষতিগ্রস্ত দেখিয়ে সরকারের টাকা নয়-ছয়ের কাজ সেখান থেকে শুরু হয়। হাওরে অনেক বাঁধ রয়েছে যেখানে মাটি ভরাট না করে শুধু দুর্বাঘাস পরিস্কার করে মাটির প্রলেপ দেওয়া হয়েছে।

সরকারের বেধে দেওয়া ২৮ ফেব্রুয়ারি কোন বাঁধের কাজ শেষ হয়নি। আমাদের জরিপে আমরা দেখেছি সে সময় ৫৫-৬০ ভাগ কাজ হয়েছে। এরপর পাউবো ও প্রশাসন গোপনে ১০ মার্চ পর্যন্ত সময় বর্ধিত করেন। কিন্তু ০৯ মার্চ তারিখ জেলা প্রশাসন ও ডিসি সুনামগঞ্জ ফেসবুক ওয়ালে জানানো হয় যেহেতু সুনামগঞ্জ জেলায় কাবিটা বাঁধের কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং এ পর্যায়ে বাঁধের কাজে কোথাও কোন ত্রুটি থাকলে বিস্তারিতসহ পিআইসির নম্বর ও স্থান উল্লেখ করে ইউএনও কে অবহিত করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। কাজ শেষ হয়েছে দাবি করলে আমরা তা প্রত্যাখ্যান করি। আমাদের হিসেবে ১০ মার্চ পর্যন্ত ৭৫-৮০ ভাগ কাজ হয়েছে। ১০ মার্চ আমাদের বিভিন্ন উপজেলা কমিটির নেতৃবৃন্দকে হাওরে পাঠিয়ে আমরা দেখেছি অনেক বাঁধে মাটির কাজ হচ্ছে। তবে কার্যাদেশ অনুযায়ী মাটির কাজ হয়নি। পুরাতন বাঁধকে মেশিন দিয়ে মাটিখুড়ে নতুন করার চেষ্টা করা হয়েছে। অধিকাংশ বাঁধেই ঘাস লাগানো ও দুর্মোজ করা হয়নি। তাহলে কিভাবে জেলা প্রশাসন বলছে বাঁধের কাজ শেষ তা আমরা জানি না।

৪৩ বার পড়া হয়েছে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।