রাইজিংসিলেট- স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে এসেছেন মাহা বাজোয়ার (৩৫) নামে এক পাকিস্তানী নারী। স্বামির বাড়িতে এসেও স্বীকৃতি না পেয়ে এবার নির্যাতনের অভিযোগ এনে স্বামীর বিরুদ্ধে করলেন মামলা। গত বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে চুনারুঘাট থানায় মামলাটি দায়ের করেন তিনি।
মামলায় আসামি করা হয়েছে তার স্বামী সাজ্জাদ হোসেন মজুমদারকে। সে চুনারুঘাট পৌরসভার উত্তর বড়াইল গ্রামের বাসিন্দা। গত ১ মাস যাবত ওই নারী চুনারুঘাটে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, চুনারুঘাট পৌরসভার উত্তর বড়াইল এলাকার শফিউল্লা মজুমদারের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন মজুমদার প্রায় ১০ বছর আগে দুবাইয়ে প্রবাসী ছিলেন। সেখানে পাকিস্তানের নারী মাহা বাজোয়ারের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ২০১৪ সালে তারা বিয়ে করেন। পরে দুবাই থেকে দেশে ফিরে সাজ্জাদ আবার বিয়ে করে সংসার শুরু করেন। মামলার এজাহারে মাহা বাজোয়ার দাবি করেন, তার স্বামী সাজ্জাদ হোসেন মজুমদার অনুমতি না নিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। পাকিস্তানের শরিয়াহ আইন অনুযায়ী ২০১৪ সালে ২ নভেম্বর পাকিস্তানের লাহোরে তাদের বিয়ে হয়।
২০১৮ সালের ২৩ আগস্ট বাংলাদেশের হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার উত্তর বড়াইল এলাকায় স্বামী সাজ্জাদের সঙ্গে তার বাড়িতে আসেন। স্বামীর বাড়িতে প্রায় দুই মাস বসবাসের পর অক্টোবর মাসে দেশে ফিরে যান। দেশে থাকা অবস্থায় তিনি জানতে পারেন, তার স্বামী তার অনুমতি না নিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। তাই তিনি স্বামীর সন্ধান করতে ও স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে গত ১৭ নভেম্বর বাংলাদেশে আসেন। স্বামীর বাড়িতে উঠতে চাইলে তাকে উঠতে দেয়া হয়নি। বাড়ির সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করলেও তিনি আশ্রয় পাননি। পরে স্বামীর বড় ভাই স্বপন হোসেন মজুমদার তার বাড়িতে আশ্রয় দেন।
এ বিষয়ে মাহা বাজোয়ার বলেন, তিনি এক মাস ধরে স্বামীর সন্ধানে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। এখানে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার স্বামীর ভাবি তাকে সিলেটে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যান। সেখানে কিছুদিন চিকিৎসা শেষে গত বুধবার চুনারুঘাটে ফিরে জানতে পারেন সাজ্জাদ তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে বাড়িতে অবস্থান করছেন। সেখানে গেলে ক্ষুব্ধ হয়ে সাজ্জাদ ও তার স্বজনেরা তাকে মারধর করেন। এতে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়েছে। পরে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল করে পুলিশের সহযোগিতায় থানায় আসেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে সাজ্জাদ হোসেন মজুমদার বলেন, মাহা বাজোয়া এখন আমার নেই। সে আমার সঙ্গে প্রতারণা করছে। আমি তাকে ১৯ মাস পূর্বে ডিভোর্স দিয়েছি। এছাড়াও কেউ তাকে নির্যাতন করেনি। সে মিথ্যা অভিযোগে মামলা করেছে।
চুনারুঘাট থানার (ওসি) হিল্লোল রায় বলেন, ওই নারীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার রাতে থানায় মামলা হয়েছে। স্ত্রী হিসেবে স্বামীর স্বীকৃতি পেতে আদালতে আরও দুটি মামলার আরজি করেছেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে পুলিশ।