
সিলেটে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকে মারধরের ঘটনায় মাছিমপুর এলাকাবাসীর সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে নগরীর মাছিমপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে রাত ১২টার দিকে সেনাবাহিনী সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
স্থানীয় সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য সচিব আজিজুল হোসেন আজিজ তার অনুসারীদের নিয়ে ল’ কলেজ সংলগ্ন এলাকায় আড্ডা দিতেন।
প্রতিদিনের মতো শুক্রবারও আড্ডা দিতে জড়ো হন তারা। কিন্তু তাদের আড্ডাস্থলে গাড়ি পার্কিং করিয়ে রাখেন মাছিমপুর এলাকার বাসিন্দা স্থানীয় আব্দুল হান্নানের ছেলে অপু।
এ নিয়ে আজিজের কর্মী-সমর্থক ও অপর পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ওই সময় ঘটনাস্থলে চলে আসেন আজিজ।
তিনি বিষয়টি মীমাংসা করতে চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে অপু, মঞ্জু, দিপু, মুজিব ও অপিসহ মাছিমপুর এলাকার লোকজন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আজিজের মাথায় আঘাত করেন।
জখম অবস্থায় আজিজকে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাৎক্ষণিক তার মাথায় অস্ত্রোপচার করা হয়। তার মাথায় ১৮টি সেলাই লাগে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল সূত্র।
ঘটনাটি জানাজানি হলে আজিজের অনুসারীরা আবারও ঘটনাস্থলে আসেন। আজিজের অনুসারী ও বিএনপি নেতাকর্মীরা মাছিমপুর এলাকায় দিপুর বাসায় যান।খবর পেয়ে এসময় এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের আক্রমণের চেষ্টা করেন।
এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৫ জন আহত হন। এসময় বিএনপি নেতাকর্মীরা দৌড়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।তাদের ব্যবহৃত অন্তত ৩১টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়।
এ ঘটনার খবর পেয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা উপশহর পয়েন্টে জড়ো হতে শুরু করেন। এতে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
সিলেট মহানগর বিএনপি ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীসহ বিএনপি নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে গিয়ে তারা নেতাকর্মীদের শান্ত রাখার চেষ্টা করেন।
পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিশৃঙ্খলা এড়াতে সকলকে তাড়িয়ে দেয়। এসময় পুলিশ সদস্যরাও ছিলেন।
সংঘর্ষের ঘটনায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করে মাছিমপুর ও সোবহানীঘাট এলাকায়।
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী বলেন, ‘বিএনপি নেতা আজিজের উপর আওয়ামী লীগের এক সন্ত্রাসী হামলা করেছে। সে সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলরের স্বামী।
এ বিষয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, চায়ের দোকানে বসা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছে।
এ বিষয়ে সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক বলেন, পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। তবে কাউকে আটক করা যায়নি।