
আল্লামা দেলওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলার আলোচিত সাক্ষী সুখরঞ্জন বালি দীর্ঘদিন পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গিয়ে অপহরণ, গুম ও নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক নায়েবে আমির দেলওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলার আলোচিত সাক্ষী সুখরঞ্জন বালি অভিযোগ দেওয়ার পর বলেন, সাঈদী একজন ভালো লোক ছিলেন। তার জানাজায় গিয়েছিলাম আমি।
তিনি জানান, ওই সময়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাকে অপহরণ, আটক রাখা এবং শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছিল। এ ঘটনায় আইনি প্রতিকার পাওয়ার তার অধিকার রয়েছে।
তিনি প্রসিকিউশন অফিসে এ সংক্রান্ত পূর্ণ বিবরণসহ লিখিত অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। আন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর বরাবর এ অভিযোগ দায়ের করেন বলেও জানা গেছে।
সুখরঞ্জন বালির আইনজীবী পারভেজ হোসেন বলেন, এ অভিযোগে শেখ হাসিনা, সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, ট্রাইব্যুনালের সাবেক বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম, সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ, সাবেক প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত, সাবেক প্রসিকিউটর হায়দার আলীসহ ৩২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
সুখরঞ্জন বালি সাংবাদিকদের জানান, সাঈদির বিরুদ্ধে সাক্ষী দেওয়ার জন্য প্রসিকিউশন পক্ষ থেকে চাপ দেওয়া হয় তাকে। ২০১২ সালের ৫ নভেম্বর সাক্ষ্য দিতে আসলে সাদা পোশাকধারী পুলিশ মাইক্রোবাসে করে তাকে তুলে নিয়ে যায়। গুম করে রাখা হয় ২ মাস ১৭ দিন। পরে সীমান্ত পার করে ভারতে পাঠিয়ে দেয়া হয় তাকে। তখন ভারতে ৫ বছর জেলে ছিলেন তিনি।
সুখরঞ্জন বালি জামায়াতের প্রয়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী ছিলেন। তিনি ২০১২ সালের ৫ নভেম্বর ঢাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সামনের গেটের বাইরের চত্বর থেকে নিখোঁজ হন।
যুদ্ধাপরাধের মামলায় দেলওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। তবে এই মামলাকে কেন্দ্র করে সাক্ষী নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাটি তখন আন্তর্জাতিক পর্যায়েও ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।