ফজল উদ্দিন,ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:সুনামগঞ্জের ছাতক-দোয়ারাবাজার নিয়ে গঠিত সংসদীয় আসন সুনামগঞ্জ (৫)।
এ আসনে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে দুই কেন্দ্রীয় নেতাকে ঘিরে নানা জল্পনা কল্পনা ছিল। তাদের সমর্থিত নেতা কর্মীদের মধ্যেও ছিল চরম উত্তেজনা। অবশেষে সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে দলটির মনোয়ন পেয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক,সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য কলিম উদ্দিন আহমেদ মিলন। সোমবার ৩ নভেম্বর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে এ ঘোষনা দেওয়া হয়। ২০০১ সালে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন কলিম উদ্দিন মিলন। এরপর ২০১৮ সালে এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে চমক সৃষ্টি করেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান চৌধুরী মিজান। ওই সময় উত্তেজিত নেতাকর্মীদেরকে রাস্তায় শুয়ে প্রতিহত করে দলীয় সিদ্ধান্তের মুল্যায়ন দিয়ে প্রশংসায় ভেসেছিলেন কলিম উদ্দিন মিলন। এরপর থেকে দুই নেতার আলাদা আলাদা বলয় তৈরী হয়। তবে আওয়ামীলীগের দীর্ঘ ১৬ বছরের দমন-পীড়নের রাজনীতিতে নিজ উপজেলা, জেলা এমন কি বিভাগীয় পর্যায়ে সক্রীয় ভূমিকা পালন করেছেন মিলন। যে কারণে পুরোনোতেই আস্থা রেখেছে বিএনপি এমনটাই মনে করছেন নেতাকর্মীরা। মনোনয়নের খবর পেয়ে আনন্দে ভাসছেন কলিম উদ্দিন মিলনের অনুসারীরা।
কলিম উদ্দিন আহমেদ মিলন তিনবারের সাবেক সংসদ সদস্য। তার রাজনৈতিক জীবন বিশ্লেশন করলে দেখা যায়। ১৯৯৬ সালে তিনি প্রথম সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) থেকে সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন এবং একই বছরের ফেব্রুয়ারিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ইতিপূর্বে তিনি সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি জেলা বিএনপির আহবায়ক ও কেন্দ্র নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়ীত্ব পালন করছেন। আওয়ামীলীগ সরকারের দমন-পীড়ন এর দীর্ঘ ১৬ বছরে তিনি জেলার বিভিন্ন থানায় ৯টি রাজনৈতিক মামলার আসামি হয়েছেন। এছাড়া ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগের বিতর্কিত নির্বাচনেও তিনি প্রায় এক লাখ ভোট পেয়েছিলেন। ২০১৮ সালে মনোনয়ন বঞ্চিত হলেও বিএনপির কঠিন সময়ে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে পিচ পা হননি। টেলিভিশন টকশো ও গণযোগাযোগের মাধ্যমেও দলের পক্ষে আর সরকারের বিপক্ষে কথা বলেছেন। ২০১৩ সালের ৮ ডিসেম্বর ছাতকের রাজপথে সংঘর্ষে তিনি নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির আওয়ামীলীগের একতরফা নির্বাচনের প্রতিবাদে চলমান আন্দোলন সংগ্রামেও তিনি উল্লেখযোগ্য ভুমিকা রেখেছেন। ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে বিএনপির কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে জেলা ও থানা পর্যায়ে একাদিক মামলার আসামি হয়েছেন তিনি। উল্লেখ্য জেলার মদনপুরে গাড়ি ভাংচুরের অভিযোগে বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়েরী মামলায় তিনি ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নুরুলসহ মোট ৫৯ জনকে আসামি করা হয়েছিল। এসব ঘটনার ব্যপক প্রেক্ষাপট জেলার রাজনৈতিক পরিবেশকে প্রভাবিত করেছে।
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও নেতা কর্মীদের ধারণা নিজ উপজেলার পাশাপাশি জেলাও বিভাগের দলীয় কার্যক্রম ও মামলা হামলার শিকার হয়েও রাজনীতিতে সক্রিয় থাকায় কলিম উদ্দিন মিলন কে সঠিক মুল্যায় করেছে বিএনপি।
মনোনয়ন প্রাপ্তির বিষয় নিশ্চিত করে উপজেলার দলীয় নেতাকর্মী ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানান।