
মাদকাসক্তি তরুণ প্রজন্মের জন্য অন্যতম ভয়াবহ হুমকি ।
সবচেয়ে দ্রুত বিস্তার লাভ করা ও প্রাণঘাতী মাদকের নাম ইয়াবা বড়ি। আর এই ইয়াবা বিক্রির টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী লাখ্মীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের রাতাছড়া গ্রামে খুটিতে বেঁধে ছয়ফুলকে (১৯) কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় এলাকাজুড়ে বেশ আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। হত্যার ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত ধরা-ছোঁয়ার বাইরে অপরাধীরা।
সূত্রে জানা গেছে, ভারত থেকে চোরাইপথে আনা ইয়াবা বিক্রি ২ লাখ টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে ছয়ফুল হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে।
রবিবার (৩০ নভেম্বর) কানাইঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী রাতাছড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ছয়ফুল হত্যার ঘটনায় সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকালে তার স্বজনরা ও সংঘবদ্ধ চোরাকারবারীরা হত্যাকারী সাকিল আহমদের বাড়ি-ঘর ভাংচুর করে। হত্যাকারী সাকিল আহমদের পিতা আব্দুল হান্নান হানাইকে আটক করে থানা পুলিশের কাছে সৌপর্দ করেছেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সচেতন মহল জানিয়েছেন, কাড়াবাল্লা, রাতাছড়াসহ আশপাশের সীমান্ত এলাকায় চোরাকারবারীরা বর্তমানে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এসব চিহ্নিত চোরাকারবারীদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো ধরনের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় এ নিয়ে হত্যাকান্ডসহ প্রায়ই মারামারির ঘটনা ঘটে থাকে।
স্থানীয়রা জানান, রাতাছড়া গ্রামের মৃত ছলু মিয়ার ছেলে ছয়ফুল ইসলাম ও একই গ্রামের আব্দুল হানাইর ছেলে সাকিল আহমদ ও তাদের সহযোগী সুমন আহমদ একসাথে দীর্ঘদিন থেকে সীমান্ত এলাকা দিয়ে মাদক দ্রব্য ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরনের চোরাই পণ্য দেশে এনে বিক্রি করতেন। সম্প্রতি ইয়াবা বিক্রির ২ লাখ টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে ছয়ফুল ইসলামের সাথে সাকিল আহমদ ও সুমন আহমদের বিরোধ দেখা দেয়। এরই জের ধরে গত রবিবার সন্ধ্যার দিকে ছয়ফুলকে বাড়ির সামনে থেকে সাকিল আহমদ ও সুমন আহমদ ধরে এনে সাকিলের বাড়ির বারান্দার একটি খুঁটিতে রশি দিয়ে বেঁধে রাখে।
ঐ সময় টাকা লেনদেন নিয়ে তাদের মধ্যে তীব্র বাকবিতণ্ডা শুরু হলে একপর্যায়ে সাকিল আহমদ ও তার সহযোগী সুমন আহমদ ধারালো অস্ত্র দিয়ে ছয়ফুলের মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করে গুরুতর খম করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা ছয়ফুলকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে কানাইঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কানাইঘাট থানা পুলিশ হাসপাতাল থেকে ছয়ফুলের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ মর্গে প্রেরন করেন।
কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আউয়াল জানান, ছয়ফুল হত্যাকান্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ দেয়া হয়নি। হত্যাকারীদের গ্রেফতার করতে সীমান্তবর্তী এলাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। হত্যাকারী সাকিল আহমদের পিতাকে স্থানীয় লোকজন আটক করে পুলিশে দিয়েছেন। তাকে হত্যাকান্ডের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।