
রাইজিংসিলেট- সাম্প্রতিক সময়ের খাদ্যাভ্যাসে কোমল পানীয় যেন এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। অফিসের লাঞ্চ হোক বা সন্ধ্যার হালকা খাবার—প্রতিদিনই মিষ্টি সোডার উপস্থিতি দেখা যায়। প্রথমে ব্যাপারটা নিরীহ মনে হলেও, নিয়মিত সোডা পান ধীরে ধীরে লিভারের উপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন এক গ্লাস চিনিযুক্ত সোডা খাওয়ার অভ্যাস তরুণ বয়সেই লিভার ড্যামেজের ঝুঁকি বাড়ায়। ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের মধ্যে ফ্যাটি লিভারের হার বেড়েই চলেছে এবং এর পেছনে অন্যতম কারণ হলো অতিরিক্ত কোমল পানীয় গ্রহণ।
বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. ভিভিয়ান জানান, অনেক তরুণ-তরুণী আছেন, যাদের তেমন কোনো শারীরিক সমস্যা নেই, কিন্তু তারা না জেনেই ফ্যাটি লিভারের শিকার হচ্ছেন শুধুমাত্র এই এক অভ্যাসের কারণে। তিনি বলেন, “লিভার সাধারণত খুব সহজে কোনো উপসর্গ দেয় না। যখন বোঝা যায়, তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে।”
গবেষণায় কী বলা হয়েছে?
‘ওয়ার্ল্ড জার্নাল অব গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি’-তে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, টানা ৫-৭ বছর নিয়মিত সোডা পান করলে লিভারে দেখা দিতে পারে:
ফ্যাটি লিভার ডিজিজ
লিভারে চিহ্ন বা ফাইব্রোসিস
দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ এবং ক্ষয়
বয়সের সঙ্গে এই রোগের সম্পর্ক থাকলেও বর্তমানে তরুণদের মধ্যেও এর প্রসার লক্ষণীয়। যদিও সম্প্রতি কিছু ওষুধ ফ্যাটি লিভারের চিকিৎসায় অনুমোদিত হয়েছে, বিশেষজ্ঞরা এখনো সবচেয়ে কার্যকর উপায় হিসেবে প্রতিরোধকেই গুরুত্ব দেন।
কীভাবে রক্ষা করা যায় লিভারকে?
মাত্র কয়েকটি দৈনন্দিন অভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমেই লিভার সুস্থ রাখা সম্ভব। যেমন:
কোমল পানীয় বাদ দিয়ে পানি, স্পার্কলিং ওয়াটার বা চিনি ছাড়া চা পান করুন
প্রতিদিন চিনিযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলুন
স্বাস্থ্যকর পানীয়কে জীবনের অংশ বানান
সচেতনতা-ই প্রতিরোধের মূল চাবিকাঠি
লিভারের সমস্যা শুধু বয়স্কদের নয় তরুণরাও ঝুঁকিতে রয়েছে। তাই সময় থাকতে সচেতন হওয়া জরুরি। প্রতিদিন এক গ্লাস সোডা হালকা বিষয় মনে হলেও, সেটাই হতে পারে ভবিষ্যতের মারাত্মক বিপদের শুরু। তাই নিজের এবং প্রিয়জনদের জন্য আজ থেকেই ছোট ছোট ভালো অভ্যাস গড়ে তুলুন।