
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদাপাথর ও গোয়াইনঘাটের জাফলং থেকে পাথর লুটের ঘটনায় সারাদেশে তোলপাড় চলছে। এখনো প্রতিদিন উদ্ধার হচ্ছে হাজার হাজার ঘনফুট লুটের পাথর। সেগুলো আবার যথাস্থানে প্রতিস্থাপনের কাজও চলছে।
এবার স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের ইঙ্গিত দিয়েছেন সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রনালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
রবিবার (১৭ আগস্ট) সচিবালয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমনটাই জানিয়েছেন।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখানে পাথর নিয়ে যে ঐক্যটা গড়ে উঠেছে সেই ঐক্যের বিপরীতে প্রশাসন হয়তো যোগসাজশ করেছে নতুবা নীরব থেকেছে বা দুটোই করেছে। সেজন্য প্রশাসনের ব্যাপারে আমরা ব্যবস্থা নেবো কি না, দ্রুতই দেখতে পাবেন।
তিনি বলেন, সরকারের কাজ নীতিমালা প্রণয়ন করা, আমরা কিন্তু সেই নীতিটি ঠিকই প্রণয়ন করেছি- যে এই ১৭টিতে পাথর উত্তোলন করা যাবে না। পাথর আদৌ উত্তোলন হচ্ছে কি না এটি দেখবে মাঠপর্যায়ের প্রশাসন। আমরা কিন্তু বারবার প্রশাসনকে বলেছি, লিখেছি।
উপদেষ্টার এমন বক্তব্যে কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট থানা বা উপজেলা প্রশাসনের মধ্যে রীতিমতো আতঙ্ক শুরু হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
তুলনামূলক কম পাথর লুট হলেও গোয়াইনঘাট থানা ও উপজেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধেও সমালোচনা এখন তুঙ্গে। যদিও লুন্টিত পাথর উদ্ধারে গত কয়েকদিন ধরে তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং কিছুটা সফলও হয়েছেন।
ইতিমধ্যেই পাথর লুটের ঘটনায় কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি উজায়ের আল- মাহমুদ আদনান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুন্নাহারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাকে দায়ী করে কঠোর সমালোচনা শুরু হয়েছে। এমনকি গণমাধ্যমেও বলতে গেলে তাদের তুলোধুনো করা হচ্ছে।
কয়েকদিন আগেও জাফলং এবং সাদাপাথর থেকে হাজার হাজার নৌকা ও ট্রাকে করে প্রতিদিন পাথর লুট নিয়ে সিলেটভিউসহ স্থানীয় এবং জাতীয় গণমাধ্যমগুলোতে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। তখন গণমাধ্যমের চাপের মুখে লোক দেখানো অভিযান হলেও পাথর লুট বন্ধ তেমন কোনো কঠোর পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।
সিলেটের পরিবেশ ও পর্যটন খাতের উপর এত বড় আঘাতের পর সরকার প্রশাসনের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করে- সেটাই এখন দেখার অপেক্ষায় দেশের পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ এবং সচেতন দেশবাসী।
এদিকে পাথর লুটের পরপরই প্রশাসনের কোনো ত্রুটি নেই বলে মন্তব্য করেছিলেন সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মো. মাহবুব মুরাদ। পরিবেশ উপদেষ্টার মন্তব্যের পর জেলা প্রশাসনের গাফিলতি আছে কি না তাও খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।