
দেশব্যাপী ৫৫ তম বিজয় দিবস ২০২৫ উদযাপিত হচ্ছে । এর অংশ হিসাবে – কানাইঘাট উপজেলা জমায়াতের আয়োজনে গাছবাড়ীতে জামায়াতে ইসলামির বিশাল বিজয় দিবসের বর্ণাঢ্য র্যালীর ও পথসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ৮নং ঝিংগাবাড়ী ইউনিয়ন শাখার আমির বিলাল বীন রহমতের পরিচালনায়, ৭নং দক্ষিণ বাণিগ্রাম ইউনিয়ন এর আমিরমাওলানা সুলাইমান এর সভাপতিত্বে কানাইঘাট উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা কামাল উদ্দিন এর স্বাগত বক্তব্যে প্রধান অথিতি হিসাবে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রাখেন, বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সিলেট-০৫ কানাইঘাট -জকিগঞ্জ আসনের তুমুল জনপ্রিয় সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী এবং জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও সিলেট জেলা জামায়াতের নায়বে আমির মাওলানা আনওয়ার হোসাইন খাঁন। বিজয়ের প্রকৃত সুফল জাতিকে উপহার দেওয়ার জন্য জামায়াতে ইসলামি স্বপ্ন বুনে আসছে একটি সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। “বিজয় এনেছি, বিজয় রাখবো” এই স্লোগানকে সামনে রেখে ৫৫তম বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে গাছবাড়ীতো বর্ণাঢ্য র্যালীর বাজারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অলিগলি , পরিদর্শন করে গাছবাড়ী আইডিয়্যাল ডিগ্রী কলেজে মাঠে এসে পথ সভায় অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বক্তারা বলেন,আওয়ামী দুঃশাসনের মাঝেও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি ও ছাত্রশিবিরের এই কার্যক্রম বন্ধ থাকেনি।
স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে এ লড়াই অব্যাহত ছিল, আছে, থাকবে ইনশাআল্লাহ।প্রধান অথিতির বক্তব্যে বলেন,সিলেট-০৫ কানাইঘাট -জকিগঞ্জ আসনের দাঁড়ি পাল্লা প্রতিক নিয়ে তুমুল জনপ্রিয় সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী এবং জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য সিলেট জেলা জামায়াতের নায়বে আমির মাওলানা হাফিজআনওয়ার হোসাইন খাঁন বলেন, বিজয়ের এত বছর পরও দেশ এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। দেশে যখন ৫৫তম বিজয় দিবস পালিত হচ্ছে তখন লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত এ দেশকে ক্ষমতা লোভীরা জিম্মি করে রেখেছে। যে লক্ষ্যে লাখো শহীদ জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন তা আজও পূর্ণাঙ্গ ভাবে অর্জিত হয়নি। বরং ৫৫ বছরে বহুবার গণতন্ত্র, বাক স্বাধীনতা, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। যা এখন ভয়াল রুপ ধারণ করেছে। ফলে জাতি এখন দারুন ভাবে হতাশায় নিমোজ্জিত। মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা বীরোচিত ভূমিকা রেখেছেন তাদেরকে চরম ভাবে লাঞ্চিত করা হচ্ছে। ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন এর অন্যতম মহা নায়ক ইনক্লাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির উপর লজ্জাজনক হামলা করায় হয়েছে এই বিজয়ের মাসেই।
শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নানা ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে। জাতির জন্য দূর্ভাগ্য ও লজ্জার বিষয় যাদের ত্যাগের বিনিময়ে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে তাদের বিশাল অংশ আজ অবহেলিত। তাদের উত্তরসুরিদের অনেকে মানবেতর জীবন যাপন করছে। অথচ রাষ্ট্রীয় শক্তি বিজয়ের চেতনাকে পুঁজি করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলে ব্যস্ত। মহান বিজয়ের চেতনা হওয়ার কথা ছিল এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা। কিন্তু দু:খজনকভাবে মুক্তিযুদ্ধকে স্বার্থ হাসিলের উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। জাতির গৌরবের মুক্তিযুদ্ধকে দলীয় ও ব্যক্তিগত হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। যে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য সেই মুক্তিযুদ্ধকে ব্যবহার করেই জাতিকে বিভক্ত করা হচ্ছে। যারা আজ মুক্তিযুদ্ধের একচ্ছত্র দাবীদার তাদের দ্বারাই মুক্তিযুদ্ধের মর্যাদা ভূলুন্ঠিত হচ্ছে বার বার। কিন্তুু জামায়াতে ইসলামী তার প্রত্যয় ভূলে যায়নি। বিজয়কে অর্থবহ করতে এবং একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার উদ্দেশ্যে যোগ্য নেতৃত্ব তৈরীর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
তিনি আরো বলেন, একটি মহল স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষের ধোয়া তুলে প্রকৃত পক্ষে দেশকে এক গভীর অনিশ্চিয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ক্ষমতার মসনদকে পাকাপোক্ত করতে বার বার জাতীয় স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে যাচ্ছে। স্বাধীনতার মূল উদ্দেশ্য জাতীয় ঐক্য, গণতন্ত্র, সুশাসন ও সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা আজো স্বপ্নই রয়ে গেছে। কিন্তু দেশে গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার কেড়ে নেয় এবং সার্বভৌমত্ত্ব বিলিয়ে দেয়া মুক্তিযুদ্ধের সাথে চরম প্রতারণা ছাড়া কিছু নয়। কিন্তু এ প্রতারণা নতুন প্রজন্ম মেনে নেয়নি এবং নেবেও না। ইসলামি আন্দোলনের প্রতিটি নেতাকর্মী প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে হলেও বিজয়কে অর্থবহ করা এবং স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। গণতন্ত্র ও অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রশ্নে কোন ছাড় দেয়া হবেনা।বর্ণাঢ্য র্যালীতে কানাইঘাট উপজেলা জামায়াতে মনোনীত ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী অধ্যাপক আব্দুর রহিম,বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির সিলেট জেলা শাখার সাবেক সভাপতি মারুফ আহমদ চৌধুরী, ৭নং দক্ষিণ বাণিগ্রাম ইউপির চেয়ারম্যান মাষ্টার লুকমান উদ্দিন, কানাইঘাট উপজেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী- মাওলানা মুখতার আহমদ,উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন সভাপতি – হাফিজ ফয়েজ আহমদ,৮নং ঝিংগাবাড়ী ইউপির সেক্রেটারি মাওলানা বিলাল আহমেদ,সহ সেক্রেটারি মাওলানা কামরুল ইসলাম নাদিম , গাছবাড়ী শিবিব সভাপতি – জাহেদ আহমদ ও কানাইঘাট পশ্চিম সভাপতি – হাফিজ কাওসার আহমদ প্রমুখ সহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশ গ্রহণ করেন।