
সিলেটের গোয়াইনঘাট সীমান্তজুড়ে ভারতীয় গরু-মহিষ থেকে শুরু করে মাদক, চিনি ও সুপারি’সব ধরনের নিষিদ্ধ পণ্যের অনবরত প্রবেশ নিয়ে এলাকাজুড়ে তীব্র আলোচনা চলছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিদিন গভীর রাতে পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের লাখাট সীমান্তের নয়াগাঁও, লক্ষণছড়া ও আলীছড়া, পাশাপাশি বিছনাকান্দি ইউনিয়নের কুলুমছড়া, মুনিপুরী বস্তি, তুরুং ও দমদমা পয়েন্ট দিয়ে এসব চোরাই পণ্য দেশে প্রবেশ করে।
চোরাচালানের মূল নিয়ন্ত্রণে রয়েছে গোয়াইনঘাট থানার এক প্রভাবশালী কর্মকর্তা এসআই মহরম। অভিযোগ রয়েছে, সম্প্রতি তার ছত্রচ্ছায়ায় কোটি টাকার ভারতীয় গরু-মহিষের চালান দেশে ঢোকার পরও তা আটক না করে ফেরত পাঠানো হয়। তবে বিজিবি কয়েকটি চালান আটক করায় বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, সীমান্ত দিয়ে আসা প্রতিটি গরু-মহিষ, মাদক বা অন্যান্য পণ্যের হিসাব রাখেন কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। পরে নির্দিষ্ট ‘লাইনম্যান’দের মাধ্যমে মাঠপর্যায়ে তা দেশের ভেতরে সুরক্ষিতভাবে পৌঁছানো হয়। সব লেনদেন হয় নগদ বা বিকাশ-নগদ অ্যাকাউন্টে, যার বেশির ভাগই হয় ভুয়া নামে।
যদিও এসব অভিযোগের ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায় স্বীকার নেই। দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অনিয়মের অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেন।
এর আগে চোরাচালান নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে বদলি করা হলেও যাদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ—তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এতে সীমান্তবাসীদের মনে প্রশ্ন জেগেছে – চোরাচালানকারীরা ধরা পড়ছে, কিন্তু তাদের রক্ষাকারীরা কেন ধরা পড়ছে না?
স্থানীয়রা দ্রুত তদন্ত ও জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। না হলে গোয়াইনঘাট সীমান্ত চোরাচালানের টার্নিং পয়েন্ট হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল।