
ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি- সুনামগঞ্জের ছাতকে নিয়মিত মামলার আসামি ধরতে গেলে চোরাচালানের গডফাদার উপজেলার টেঙ্গারগাঁও গ্রামের আলতাফ আলীর ছেলে শাহিনের নেতৃত্বে পুলিশের উপর হামলার ঘটনা ঘটে।
এতে দুই পুলিশ সদস্যকে দা দিয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছে হামলাকারীরা। এসময় ঘটনার সাথে জরিত অন্তত ৪জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জানা যায় গত ৫ আগষ্টের পুর্বে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের রাজনিতিতে সক্রীয় ছিল শাহিন সহ তার ভাইয়েরা। চোরাচালান ব্যবসায় দলীয় সুবিদা নিলেও গণঅভ্যুত্থানের পর চোরাচালান ব্যবসা চালু রাখতে নিজেকে আওয়ামী বিরোধী দাবী করে খোলস পরিবর্তন করেছেন। এরপর গত ১৮ জুলাই প্রায় ১৯ লক্ষ টাকা মুল্যের ভারতীয় চোরাচালান আটক করে সেনাবাহিনী। এ ঘটনায় ছাতক থানায় মামলা দায়ের হলে সংবাদ প্রকাশ করায় স্থানীয় দুই সাংবাদিক মোবাইল ফোনে হুমকী দেয় শাহিন। এসময় সে বলে নিজের টাকায় চোরাচালান ব্যবসা করি সাংবাদিকের কি হয়েছে। তার মালামাল আটক করার দায় সাংবাদিকের উপর চাপিয়ে প্রাণনাশের হুমকী দেন। এরখম একটি কল রেকর্ড সহ শাহিনের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলেও তথ্যকালিন ওসি তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি। যে কারণে সে ও তার ভাউয়েরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
এরপর গত ২৫ আগষ্ট রাত ১১ টার দিকে নিয়মিত এ মামলার আসামী গ্রেফতার করার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই/মোঃ রোমেন মিয়া, সঙ্গীয় ফোর্স সহ ছাতক পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের টেঙ্গারগাঁও গ্রামে অভিযান চালান। এসময় গ্রামের আলতাফ আলীরপুত্র ও চোরাচালান ব্যবসায়ী শাহিনের ভাই জয়নাল মিয়া আসামি ধরতে পুলিশকে বাধা দেয়৷ এছাড়া মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে ৪০-৫০ জন লোক নিয়ে পুলিশকে হেনস্তাসহ জিম্মি করে ফেলে।
খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পৌছান ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ শফিকুল আলম খান সহ পুলিশের আরেকটি দল। এসময় পালিয়ে যাওয়ার জন্য শাহিনের নেতৃত্ব পুলিশের উপর হামলা চালায় তার ভাই জয়নাল মিয়া(৩০),আক্তার মিয়া (২৭), মিলন মিয়া (২৫),মোঃ সাইমন মিয়া (২২) ও তার পিতা মোঃ আলতাফ মিয়া (৬০),একই এলাকার নুরুল হকের পুত্র মোস্তাকিন, লাল মিয়ার পুত্র মান্না সহ ৪০/৫০ জনের একটি দল। হামলাকারীরা দা দিয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে কুপিয়েছে এসআই সাহাব উদ্দিন ও কনস্টেবল মোস্তাক আহমদ কে। যে কারণে পালিয়ে যায় মামলার অন্যান্য আসামিরা। তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল থেকে ৪ হামলাকারীকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। হামলায় আহত এসআই সাহাব উদ্দিন ও কনস্টবল মোস্তাক আহমদ কে উদ্ধার করে ছাতক উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে গুরুত্বর আহত কনস্টবল মোস্তাক আহমদকে উন্নত চিকিৎসার সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। এসআই সাহাব উদ্দিন কে ছাতক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
পরে অন্যান্য আসামিদের ধরতে রাত ২ টায় পৃথক অভিযান চালায় যৌথবাহিনী এসময় তাদেরকে না পেলেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই নারীকে আটক করা হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ শফিকুল আলম জানান,নিয়মিত মামলার আসামি ধরতে গেলে পুলিশের উপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এঘটনায় ৪ হামলাকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।