
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং এলাকায় পরিবেশ সংকটাপন্ন অঞ্চল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে। এসব বালুবাহী ট্রাক ও ট্রাক্টর থেকে স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করছে একটি প্রভাবশালী চক্র।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এই চক্র। জাফলং থেকে সিলেটগামী ট্রাক ও ট্রাক্টর থামিয়ে দিনে-দুপুরে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে শ্রমিকদের লাঞ্ছিত ও মারধরের ঘটনাও ঘটছে নিয়মিত। ফলে নিরাপদে বালু পরিবহনে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, জমিদার মসজিদ এলাকার নিচের সড়কেই মূলত এসব অবৈধ কার্যক্রম চলছে। প্রতিটি হাইড্রলিক ট্রাক থেকে ১ হাজার টাকা এবং প্রতিটি ট্রাক্টর থেকে ৫০০ টাকা করে চাঁদা তোলা হয়।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য খ্যাত জাফলং এখন দখলদারদের লোভে বিপর্যস্ত। সরকার এটিকে পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করলেও প্রশাসনের চোখের সামনে চলছে অবাধ বালু লুট। স্থানীয়দের মতে, পাথর উত্তোলন বন্ধ হওয়ার পর এবার শুরু হয়েছে বালু তোলার ধুম। এতে নদী অববাহিকা ও প্রাণবৈচিত্র্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে।
ব্যবসায়ীদের দাবি, গত আগস্টে ক্ষমতার পালাবদলের পর একটি প্রভাবশালী চক্র প্রথমে পাথর লুট শুরু করে। এরপর প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করে বালু তোলায় নামছে।
প্রতিদিন শত শত ট্রাক ও ট্রাক্টর বালু নদী থেকে তুলে মজুদ করছে জমিদার মসজিদের পাশের রাস্তায়।
বিশেষ করে জাফলং এলাকায় প্রকাশ্য চলে যুবদল নেতা নামধারী মাহমুদ ও মানিক বাহিনীর ওপেন চাঁদাবাজী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিশেষ করে জাফলং এলাকায় যুবদল নামধারী দুই ব্যক্তির নেতৃত্বে প্রকাশ্যে চলছে চাঁদাবাজি। এদের প্রত্যেকের রয়েছে আলাদা আলাদা বাহিনী, যাদের মাধ্যমে পুরো এলাকাজুড়ে নিয়ন্ত্রণ করছে অবৈধ বালু-পাথর ব্যবসা ও চোরাচালান সিন্ডিকেট।
অভিযোগ আছে, এসব কার্যক্রমের পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক প্রভাবশালী মহল। প্রশাসন মাঝে মধ্যে দায়সারা অভিযান চালালেও কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আবারও আগের অবস্থায় ফিরে যায় নদী এলাকা। স্থানীয়দের মতে, প্রশাসনের এই শিথিল অবস্থান অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
পরিবেশবিদরা সতর্ক করে বলেছেন, এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে জাফলংয়ের প্রাকৃতিক ভারসাম্য সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যাবে। তাদের মতে, স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কঠোর হস্তক্ষেপ ছাড়া জাফলংকে রক্ষা করা সম্ভব নয়।
সূত্র— সবার দেশ