টাঙ্গুয়ার হাওরের ‘সুনাম ক্ষুণ্ণ করে’ পর্যটকদের সেখানে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় জিডি (সাধারণ ডায়েরি) করা হয়েছে।
জিডিতে উল্লেখ করা হয়, টাঙ্গুয়ার হাওরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা ছুটে আসেন। এই হাওরকে মাদার অব ফিসারিজ অর্থাৎ সব হাওরের মা বলা হয়। এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মিঠা পানির জলাভূমি। দূরদূরান্ত থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে ধর্মপাশা, মধ্যনগর, তাহিরপুর উপজেলার রাস্তা দিয়ে মানুষজন টাঙ্গুয়ার হাওরে আসা যাওয়া করেন। পর্যটকদের আগমনে এই তিনটি উপজেলায় মানুষজনের কর্মসংস্থান দিন দিন বেড়েই চলছে, পাশাপাশি অর্থনৈতিক দিক দিয়েও এগিয়ে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) ধর্মপাশা থানায় নাজমুল হক সজীব নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা এই জিডি করেন (যান নং-৫৮২)।
জিডিতে নাজমুল হক সজীব আরও উল্লেখ করেন—ভিডিওটি মুহূর্তের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয় এবং সারা দেশের মানুষের কাছে ছড়িয়ে যায়, এতে সুনামগঞ্জ জেলার অন্যতম দর্শনীয় স্থান টাঙ্গুয়ার হাওরাঞ্চলের সুনাম ক্ষুণ্ণ হয়েছে। ভিডিও প্রচারের কারণে টাঙ্গুয়ার হাওরে পর্যটকদের আগমন কমে যাওয়া ও জনগণের আয়ের উৎস ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
ধর্মপাশা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ এনামুল হক জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওর সুনামগঞ্জের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ স্থান। হাওরের সুনাম ক্ষুণ্ণ করার বিষয়ে গতকাল (বৃহস্পতিবার) জিডি হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের তদন্ত অব্যাহত আছে, আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত ১০ জুলাই বেলা ১১টায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ব্যবহার করার সময় দেখা যায়, গত ৯ জুলাই Mohammad Iqbal (https://www.facebook.com/Mohammadiqbal.bd) নামক ফেসবুক পেজ থেকে টাঙ্গুয়ার হাওরকে নিয়ে ১ মিনিট ৩১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও পোস্ট করেন।
ভিডিওতে মোহাম্মদ ইকবাল নামে ওই ব্যক্তি বলেন, প্রতিদিন ৪০টি হাউসবোটে অনুমান ১০০০ জন পর্যটক টাঙ্গুয়ার হাওরে ঘুরতে যায়। ১০০০ জন লোক যদি তিন দিন হাওরে থাকে এবং প্রতিদিন দুইবার করে অর্থাৎ ১০০০ জনে তিন দিনে ৬০০০ বার টাঙ্গুয়ার হাওরে পায়খানা-প্রস্রাব করে…।
হাওরে আসা পর্যটকদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, যদি কেউ টাঙ্গুয়ার হাওরে যায় তাহলে হাওরের পানিতে থাকা পায়খানা-প্রস্রাব গায়ে মাখিয়ে নিয়ে আসবে, পায়খানামিশ্রিত পানি মুখে নিয়ে কুলি করবে, স্যুপ তৈরি করে খেতে হবে। সব শেষে তিনি পর্যটকদের টাঙ্গুয়ার হাওরে না যাওয়ার আহ্বান জানান।