
গরমের দিনে ঠান্ডা পানি যেমন স্বস্তি দেয়, তেমনি অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে – এটা কি শরীরের জন্য ক্ষতিকর? চিকিৎসকদের মতে, পানি পানের ধরন নির্ভর করে সময়, পরিবেশ ও ব্যক্তির শারীরিক অবস্থার ওপর। তাই এই প্রতিবেদন থেকে জেনে নিন ঠান্ডা ও স্বাভাবিক পানির পার্থক্য, উপকারিতা ও ঝুঁকি।
ঠান্ডা পানির সম্ভাব্য ক্ষতি
১. হজমে সমস্যা হতে পারে
ঠান্ডা পানি পাকস্থলীর পেশিকে সংকুচিত করতে পারে, যা হজমে বিলম্ব ঘটাতে পারে। যাদের আগে থেকেই হজমের সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য ঠান্ডা পানি এড়িয়ে চলা উচিত।
২. সর্দি-কাশি বাড়তে পারে
গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে, ঠান্ডা পানি শ্লেষ্মা ঘন করে ফেলে। এর ফলে শ্বাসনালিতে সমস্যা দেখা দেয়। ফ্লু বা ঠান্ডা থাকলে এমন পানি না খাওয়াই ভালো।
৩. মাইগ্রেনের সমস্যা বাড়ে
মাইগ্রেনের রোগীদের অনেক সময় ঠান্ডা পানি মাথাব্যথা বাড়িয়ে দিতে পারে।
৪. আক্যালেসিয়া রোগীদের জন্য ক্ষতিকর
যাদের খাবার গিলতে সমস্যা হয় (আক্যালেসিয়া), তাদের জন্য ঠান্ডা পানি ব্যথা বাড়াতে পারে।
ঠান্ডা পানির উপকারিতা
১. শরীরচর্চায় উপকারী
ব্যায়ামের সময় ঠান্ডা পানি শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। এতে ক্লান্তি কম হয় এবং পারফরম্যান্স বাড়ে।
২. অল্প পরিমাণ ক্যালোরি বার্ন হয়
ঠান্ডা পানি শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখতে কিছুটা ক্যালোরি খরচ করে।
৩. সফট ড্রিংকের বিকল্প
চিনিযুক্ত পানীয়ের চেয়ে ঠান্ডা পানি স্বাস্থ্যকর এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
স্বাভাবিক পানির সুবিধা
হজম সহজ করে
রক্ত চলাচল উন্নত করে
টক্সিন দূর করতে সহায়ক
তবে গরম আবহাওয়ায় অতিরিক্ত গরম পানি পান না করাই ভালো, কারণ তা তৃষ্ণা কমিয়ে দিতে পারে।
কোন পরিস্থিতিতে কোন পানি খাবেন?
গরমে বা ব্যায়ামের পর: ঠান্ডা পানি স্বস্তি দেয়
হজম সমস্যা, কাশি বা মাইগ্রেন: ঠান্ডা পানি এড়িয়ে চলুন
সাধারণভাবে: স্বাভাবিক বা উষ্ণ পানি নিরাপদ।
উপসংহার- পানি শরীরের জন্য অপরিহার্য। তবে কখন কোন ধরনের পানি খাবেন, তা নির্ভর করে শারীরিক অবস্থা ও পরিবেশের ওপর। সুস্থ থাকতে চাইলে সময় বুঝে ঠান্ডা বা স্বাভাবিক পানি পান করাই সবচেয়ে ভালো।