
তারাপুর চা বাগানের দেবত্ত ভূমি দখল করতে গিয়ে বাগানের নেতার সাথে চা- শ্রমিকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে ৬ জন আহত ও একজনের অবস্থা আশঙ্খাজনক বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) বিকেলে পাঠানটুলা তারাপুর চা-বাগান এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সূত্রে মতে জানা যায়, গত ২৭ মার্চ বৃহস্পতিবার বিকেলে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আজিজ খান সজিব তার দল বল নিয়ে তারাপুর বাগানের ৯ শতক দেবত্ত ভূমি জোরপূর্বক ভাবে দখল করতে গেলে বাগান কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদেরকে সাথে নিয়ে ওই জায়গা দখল করতে বাঁধা প্রদান করে। একপর্যায়ে বাগানের চা- শ্রমিকদের প্রতিরোধে সজীবসহ-তার বাহিনী পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়।
রাতে তারাবি নামাজ চলাকালীন সময় সজিব আবারও তার দলবল নিয়ে তারাপুর বাগানের জমি পুনরায় দখল করতে গেলে বাড়ে উত্তেজনা। বাগানের চা-শ্রমিক নেতা সঙ্গিত রায় শ্রমিকদেরকে সাথে নিয়ে ফের বাঁধা প্রদান করলে সজীব বাহিনীর সাথে শ্রমিকদের বাধে সংঘর্ষ। সংঘর্ষের একপর্যায়ে সজীবের সাথে থাকা প্রায় ছয় থেকে সাত জন নেতাকর্মী আহত হয়। এরমধ্যে ফারুক আহমদ নামের এক কর্মী গুরুতর আহত হন।
এই প্রতিরোধের ফলে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আজিজ খান সজীব কোনমতে তার সহযোগীদের নিয়ে পালিয়ে আসতে সক্ষম হলেও শ্রমিকদের হামলায় গুরুতর আহত ফারুক আহমদকে রেখে পালিয়ে আসে সজীবসহ- তার বাহিনী।
গুরুতর আহত ফারুক আহমদকে বিমানবন্দর থানা পুলিশের সহযোগিতায় সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়।
তারাপুর বাগানের শ্রমিকদের দাবি, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আজিজ খান সজিব বাহিনীর কারণে তারাপুর চা বাগান এলাকায় বেশ আতংকে দিন কাটে তাদের। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাষন আমলেও আজিজ খান সজিব ছিলেন বেশ বেপরোয়া। প্রায় সময় তারাপুর চা-বাগানের দেবত্ত ভূমি দখল নিতে সজিব মরিয়া হয়ে উঠতেন। বিভিন্ন সময় বাগান কর্তৃপক্ষের সাথে তার বাধঁতো ঝামেলা। তার সন্ত্রাসী বিহিনীর হামলার ভয়ে তারাপুর চা-বাগানের কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হলে সজিব গোয়বাড়ি এলাকার জাহাঙ্গির নগরের রাস্তার পাশে তারাপুর চা-বাগানের বেশ কিছু দেবত্ত ভূমি দখল করে গড়ে তোলেন স্থাপনা।
তার অত্যাচার নির্যাতনে অতিষ্ঠ তারাপুর চা-বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সাবেক সভাপতি সমর রায় বলেন, তৎকালীন সময়েও আজিজ খান সজিব এ ধরনের কর্মকান্ডে জড়িত ছিলেন। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর স্বেচ্ছাসেবক দলের এই নেতা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেন। গড়ে তোলেন ভয়ংকর বাহিনী। বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত থাকায় তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতেও সাহস পায় না। আজিজ খান সজিবকে যদি এখনো থামানো না হয় তাহলে দল ও দেশের বিরাট ক্ষতি হবে। এরা দলের নাম ব্যবহার করে অনৈতিক সুবিধা নিতে রাজনীতি করে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাগানের এক চা শ্রমকি নেতা বলেন, সজিবের এমন আচরণে আমরা লজ্জিত। বিগত সময়েও সজিব তার দলবল নিয়ে জালালাবাদ রাগিব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে হাসপাতালের সিকিউরিটিদের সাথে সংঘর্ষে জড়ায়। সংঘর্ষে হাসপাতালে সে ও তার লোকজন ব্যাপক ভাংচুর চালায়।
এমন পরিস্থিতিতে হাসপাতালের সকল স্টাফ এক হয়ে প্রতিরোধ করলে সজিবের সাথে থাকা সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেলে সেখানে আটকা পড়েন স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আজিজ খান সজীব। একপর্যায়ে স্টাফরা মিলে সজিবকে উত্তম মধ্যম প্রদান করে। এই উত্তম মধ্যম থেকে এক পর্যায়ে এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজে নিয়ে যায় ও পরবর্তীতে তাকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। প্রায় এক মাসের চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে সে সিলেটে ফিরে।