
ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে সিলেটজুড়ে চরম বিপর্যস্ত জনজীবন।
এক ঘণ্টা পরপর বিদ্যুৎ আসা-যাওয়ার এই চক্রে নাভিশ্বাস উঠেছে নগরবাসীর। গরমে হাঁসফাঁস করছে শিশু ও বৃদ্ধরা, বন্ধ হওয়ার উপক্রম অফিস-আদালত, কলকারখানা আর গণমাধ্যমের কার্যক্রম।দিনে-রাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় সাধারণ মানুষ পড়েছেন চরম দুর্ভোগে।
বিদ্যুতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে তাপমাত্রাও। তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে নগরবাসী। ঘরে ঘরে শিশু ও বৃদ্ধদের অবস্থা নাজেহাল। অনেক অসুস্থ রোগীর অবস্থাও অবনতি হচ্ছে বলে জানা গেছে। ফ্যান বা এসি তো দূরের কথা, কেউ কেউ ঠিকমতো পানিও পাচ্ছেন না বিদ্যুৎ না থাকায়।
শহরের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, দিনে কতবার লোডশেডিং হয়, তার হিসাব রাখা দায়। কখন বিদ্যুৎ যাবে, কখন আসবে—এ বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে কোনো সময়সূচি দেওয়া হয়নি। হঠাৎ করেই বিদ্যুৎ চলে যায়, কখনো ঘণ্টার পর ঘণ্টা থাকে না। এতে অফিস, বাসাবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সবখানে নেমে এসেছে অচলাবস্থার মতো পরিস্থিতি।
সিলেট পিডিবির বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শামস-ই আরেফিন বলেন, ‘জাতীয় গ্রিড থেকে সরবরাহ কম থাকায় নগরবাসীর চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। তবে জাতীয় গ্রিডে পর্যাপ্ত সরবরাহ এলে সমস্যা সমাধান হবে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে সিলেট নগরীতে বিদ্যুতের চাহিদা ৪০ মেগাওয়াটেরও বেশি। কিন্তু জাতীয় গ্রিড থেকে সরবরাহ দেওয়া হচ্ছে মাত্র ২৫ দশমিক ৩০ মেগাওয়াট। এর মধ্যে আম্বরখানা সাবস্টেশন পাচ্ছে ১৩ মেগাওয়াট, শেখঘাটে সরবরাহ হচ্ছে ৯ মেগাওয়াট, আর লাক্কাতুরায় যাচ্ছে মাত্র ৩ দশমিক ৩ মেগাওয়াট। চাহিদার তুলনায় এই সরবরাহ অতি নগণ্য হওয়ায় নিয়মিত লোডশেডিং করা ছাড়া বিকল্প নেই বলেই জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) মঙ্গলবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, দেশের কয়েকটি বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছে। যার ফলে সারাদেশেই বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এই পরিস্থিতি আরও দুই থেকে তিনদিন স্থায়ী হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।