ভোলা প্রতিনিধি:বিয়ের পর রোকসানা হোসেন সুমির থেকে জাকিরকে স্বর্ণালঙ্কার, আসবাবপত্রও নগদ টাকাও দেওয়া হয়। বিয়ের পরবর্তী ১৯ বছর সংসার জীবনে এক মেয়ে তাসফি (১৬) ও দুই ছেলে তাহমিদ হাসান (১২) তাহসিম হাসান (৮) সহ স্ত্রীকে নিয়ে সুখেই কাটছিল তাদের সংসার জীবন। কিন্তু সেই সুখের সংসারে অভিশাপ হয়ে উঠে পটুয়াখালী ধুমকি উপজেলার রাজাখালী নরুল ইসলাম তালুদার এর মেয়ে নাছরিন আক্তার রিমি (২৮)। বদলিজনিত কারণে এসআই জাকির নাছরিন আক্তার রিমি সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। স্ত্রী রোকসানা হোসেন সুমি ও তিন সন্তানকে তাড়িয়ে দিতে শুরু হয় নির্যাতন। শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের পরও স্ত্রী সুমি তাকে ছেড়ে না আসায় যৌতুক দাবি করেন এসআই জাকির। এ নিয়ে উভয় পরিবারের মাঝে শুরু হয় অশান্তি।
এ অভিযোগে বুধবার (৩ জুলাই) এসআই জাকির হোসেনের স্ত্রী রোকসানা হোসেন সুমি বাংলাদেশ পুলিশ হেডকোয়াটার্স এ পুলিশের মহাপরিদর্শক বরাবর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্ত এই পুলিশ কর্মকর্তা বরিশাল গৌরনদী কমলাপুর আব্দুর রহিম হাওলাদার এর ছেলে জাকির হোসেন (৪২) বর্তমানে মনপুরা থানায় পুলিশ পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত আছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিয়ের কয়েক বছর পর থেকেই এসআই জাকির বিভিন্ন নারীদের সাথে পরকিয়া প্রেমে লিপ্ত হয়। বিষয়টি তার পরিবারকে জানালে তারা বিষয়টি মিলমিশ করে দেয় এবং আর কোনদিন এরকম কার্যকলাপে জড়াবে না বলে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দেন। গত ১ বছর যাবৎ নাছরিন আক্তার রিমি (২৮) নামের এক নারীর সাথে পরকিয়া প্রেমে লিপ্ত হয়। বিষয়টি তার স্তী জানতে পেরে এসআই জাকির’কে জিজ্ঞাস করলে এবং মেয়ের সাথে কথা বলতে নিষেধ করায় বিভিন্ন সময় স্ত্রী সুমি’কে শারিরিক ও মানুষিক নির্যাতন করেন।
গত ২০২৩ সালের ২১শে নভেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পটুয়াখালীর গলাচিপা থানার হোটেল আদনানের ৪র্থ তলায় ৪০৩ নং কক্ষে ওই মেয়ের সাথে খারাপ অনৈতিক কাজ করার সময় স্ত্রী সুমির সহযোগীতায় স্থানীয় সাংবাদিক ও লোকজন মিলে এসআই জাকির ও নাছরিন আক্তার রিমিকে আপত্তিকর অবস্থায় ধরেন। এসময় উপস্থিত সাংবাদিকদের ক্যামেরার সামনে এসআই জাকিরের স্ত্রী সুমি’কে ব্যাপক মারধর করেন। পরে খবর পেয়ে গলাচিপা থানা পুলিশ জাকিরসহ ওই নারী এবং স্ত্রী সুমি’কে থানায় নিয়ে যায়। ঘটনা সম্পর্কে জেনে এসআই জাকিরের কর্মস্থলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবহিত করে সবাইকে নিজ এলাকায় ফিরে যেতে বলেন। পরে চাকুরী বাচাঁনোর জন্য নাসরিন আক্তার রিমিকে বিয়ে করে বৈধ স্ত্রী ঘোষনা করেন।
পরে, পুলিশ সুপার কাছে প্রথম স্ত্রীর দায়ের করা অভিযোগে ভোলার শশীভূষণ থানা থেকে তাকে ভোলা পুলিশ নাইনে সংযুক্ত করেন। এছাড়াও ভোলা জজ কোর্টে যৌতুক নির্যাতন দমন আইন মামলা নং-সিআর ২/২৪, ও নারী নির্যাতন দমন আইন মামলা নং-জি.আর ১৬১/২০২৪ দায়ের করার পর এসআই জাকির ও তার পরিবারসহ প্রথম স্ত্রীর বাসায় এসে ২য় স্ত্রীকে ডিভোর্স দেওয়ার শর্তে আপোষ মিমাংসায় আসেন। পরে ভোলা কোর্টের উকিল এডভোকেট মনিরুল ইসলামের মাধ্যমে ২য় স্ত্রীকে ডিভোর্স দেওয়ার পর প্রথম স্ত্রীর দায়ের করা সকল মামলা ও অভিযোগ তুলে পূর্বের পূর্ণ পদে স্ত্রীর সহযোগিতায় বহালে আসেন। মুহুর্তে ফের নিজের রুপ পরিবর্তন করে প্রথম স্ত্রীকে বিভিন্ন সময় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকেন।
এছাড়াও স্ত্রী রোকসানা হোসেন সুমি অভিযোগ করে বলেন, একজন আইনের লোক হয়ে কীভাবে তালাকপ্রাপ্ত নারীর সাথে বিভিন্ন সময় হোটেলে রাত্রিযাপন ও অবৈধ কার্যকালাপ করেন! তিনি পুলিশ প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে সঠিক বিচার দাবি করেন।
এ বিষয়ে জানতে এসআই জাকির হোসেনকে মুঠোফোনে ফোন দিলে সাংবাদিক পরিচয় দিলে তিনি ফোন কেটে বন্ধ করে রাখেন।
পুলিশ হেড কোয়ার্টারে শারীরিক ও মানষিক নির্যাতনের অভিযোগ বিষয়ে ভোলা পুলিশ সুপার মাহিদুজ্জামান এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, এ ধরনের অনেক ফাইল থাকাতে সঠিক তথ্য দিতে পারছিনা। তবে অফিসে আসলে ফাইল দেখে তথ্য দেওয়া যাবে।