যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে অবৈধ অভিবাসীবিরোধী অভিযান জোরদার হয়েছে। চলছে ব্যাপক ধরপাকড়। এরই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) নিউইয়র্ক শহরের কুইন্স ও ব্রঙ্কস বরো এলাকা থেকে অন্তত ২০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস)। এর মধ্যে এক বাংলাদেশিও রয়েছেন।
গ্রেপ্তারকৃত বাংলাদেশির নাম সাব্বির আহমেদ। তিনি সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার সদরের বাসিন্দা।
ফেডারেল ল এনফোর্সমেন্ট এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
পরিবারের সদস্যরা জানান, যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন সাব্বির। ২০ দিন আগে তিনি হাতে পান আশ্রয়ের আবেদনের রিসিভ কপি। তল্লাশিকালে তার কাছে পরিচয়পত্র দেখতে চাইলে তিনি রিসিভ কপি দেখান। কিন্তু আইস কর্মকর্তারা তা গ্রহণ না করে তাকে নিয়ে যান। সে সময় আইস সদস্যদের সঙ্গে সাদাপোশাকধারী পুলিশ সদস্য ও নিউইয়র্ক পুলিশ দপ্তরের সদস্যরাও ছিলেন।
এ বিষয়ে সাব্বিরের বড় ভাই শামীম আহমেদ বলেন, ভোর ছয়টার দিকে দরজায় জোরে ধাক্কার শব্দ শোনা যায়। পরে বাসার লোকজন ঘুম থেকে উঠে দরজা খুলে দেন। এরপর একজন সাদাপোশাকধারী পুলিশ ঘরে ঢোকেন। সাব্বিরের ছবি দেখিয়ে জানতে চান, কেউ তাকে চেনেন কি না? ‘না’ বলতেই আইসের পোশাকধারী তিন-চারজন পুলিশ ঘরে ঢুকে পড়েন। তখন তারা পুরো বাড়িতে তল্লাশি চালান এবং সবার পরিচয়পত্র দেখতে চান। সে সময় সবাইকে দুই ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। শেষে বাড়ির বেসমেন্টে গিয়ে তারা সাব্বিরকে পেয়ে যান। সে তখন সেখানে ঘুমাচ্ছিল।
তিনি আরও বলেন, সাব্বিরকে জেলে নেওয়া হয়েছে, হয়তো তাকে আমেরিকা ছাড়তে হবে।
এ ব্যাপারে অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা সব সময় সবাইকে সতর্ক করে বলেছি, এই ক্রান্তিকালে কেউ দরজা ধাক্কা দিলে খুলবেন না। আর দরজা না খুললে কোনো বাহিনী দরজা ভেঙে আপনার বাসায় ঢোকার অধিকার রাখে না। সব সময় যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখবেন।
জানা গেছে, ২০২২ সালের ২১ জানুয়ারি ব্রাজিল হয়ে মেক্সিকো বর্ডার দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিলেন সাব্বির। এরপর থেকে নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে পরিবারের সঙ্গে একই বাড়িতে থাকতেন তিনি। তবে কাগজপত্র না থাকায় নিয়মিত কাজ করতে পারতেন না। খণ্ডকালীন চাকরি করে চলতেন।
প্রসঙ্গত, ৪৭ তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে নথিপত্রহীন অভিবাসীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আইসের তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে সাড়ে তিন হাজারের বেশি নথিপত্রহীন অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।