
সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত এক ফিলিস্তিনি নারী ইসরায়েলি কারাগারে আটক থাকা অবস্থায় বারবার যৌন নির্যাতন ও অমানবিক আচরণের শিকার হওয়ার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন । ফিলিস্তিনি মানবাধিকার সংস্থা প্যালেস্টাইন সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস (পিসিএইচআর) ওই নারীর সাক্ষ্য প্রকাশ করে এই ঘৃণিত কর্মকাণ্ডকে যৌন নির্যাতনের একটি সংগঠিত ও পদ্ধতিগত রূপ বলে বর্ণনা করেছে।
টিআরটি ওয়ার্ল্ডের খবরে বলা হয়েছে, ৪২ বছর বয়সী ওই নারী ২০২৪ সালের নভেম্বরে গাজার উত্তরাংশে একটি ইসরায়েলি চেকপোস্ট অতিক্রম করার সময় গ্রেপ্তার হন। তিনি জানান, ইসরায়েলি সেনারা তাকে একাধিকবার যৌন নির্যাতন করেছে, চারবার ধর্ষণ করেছে, নগ্ন অবস্থায় ভিডিও ধারণ করেছে, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট করেছে এবং শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছে।
সংস্থাটি আরও জানায়, পুরুষ বন্দীরাও যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন। ১৮ বছর বয়সী এক তরুণ, যিনি গাজায় মানবিক সহায়তা কেন্দ্রে কাজ করতেন, তিনি জানান—তাদের সাতজনকে হাঁটু গেড়ে বসতে বলে বোতল ঢুকিয়ে ধর্ষণ করা হয়।
ওই নারী তার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, সৈন্যরা তাকে পোশাক খুলতে বাধ্য করে এবং ধাতব টেবিলের ওপর শুইয়ে হাতকড়া দিয়ে বেঁধে ধর্ষণ করে। তিনি চিৎকার করলে তাকে পিঠে ও মাথায় আঘাত করা হয়। ধর্ষণের পর তাকে একই ঘরে নগ্ন অবস্থায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা বেঁধে রাখা হয়। এক সৈন্য তার ছবি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করার হুমকিও দিয়েছিল।
পিসিএইচআর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি অবিলম্বে এই পদ্ধতিগত নির্যাতন, গুম ও যৌন সহিংসতার নীতি বন্ধের এবং আটক সব ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। সংস্থাটি আরও দাবি করেছে, আন্তর্জাতিক রেড ক্রসকে যেন অবিলম্বে ইসরায়েলি আটক কেন্দ্র পরিদর্শনের সুযোগ দেওয়া হয়।
পিসিএইচআর সতর্ক করেছে, ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেট সম্প্রতি সন্ত্রাসবাদের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার একটি বিলের প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছে, যা হাজারো ফিলিস্তিনি বন্দীর জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে। সংস্থাটি এই নির্যাতনকে গাজায় চলমান গণহত্যার অংশ হিসেবে চিহ্নিত করছে।