
রাজনীতিতে শেখ হাসিনার ভবিষ্যতে আরও একটি ধাক্কা?
ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতেই এই বিচার সম্পন্ন হয়েছে এবং এই রায়ের ফলে ভারত তাকে ফিরিয়ে দেবে এমন সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে।
বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করার পর একটি বড় প্রশ্ন সামনে আসছে— এর ফলে তার বাংলাদেশে রাজনীতিতে ফিরে আসা, এমনকি দলের নেতৃত্ব দেওয়া কতটা কঠিন হয়ে উঠবে বা আদৌ কঠিন হবে কি না?
ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের ফলে অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য তাকে ফিরিয়ে আনতে আবারো ভারতের কাছে দাবি জানানোর পথ জোরালো হলো। যদিও শেখ হাসিনা এই রায়কে ‘পক্ষপাতদুষ্ট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে বর্ণনা করেছেন এবং ট্রাইব্যুনালকে ‘ক্যাঙ্গারু কোর্ট’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
ভারতের কাছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রত্যর্পণ আবেদন ছিল আদালত অবমাননার লঘুদণ্ডের কারণে। তারা যে অনুরোধ পেয়েছে সেটি স্বীকার করা ছাড়া এ নিয়ে আর কোন কথা বলেনি ভারত।
এর মধ্যেই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে আহ্বান জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
এ রায়ের আগেই গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার ‘উস্কানিমূলক বক্তব্য’ প্রকাশে একটি নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত, যার নিন্দা জানিয়েছিল তার দল আওয়ামী লীগ। দলটির কার্যক্রমও নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
পরবর্তীতে একটি নির্বাচিত সরকার এসেও যদি এই চাপ অব্যাহত রাখে, তবে ভারতের জন্যও চুপ থাকা কিংবা শেখ হাসিনা সেখান থেকে যেভাবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন, তাতে রাশ না টানা কঠিন হয়ে উঠতে পারে।
এখন রায়ের পর যদি শেখ হাসিনার বক্তব্য বা আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের ওপর আরো বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, তবে আওয়ামী লীগের ওপর চাপ আরও বাড়বে।
ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে দমনপীড়ন ও নির্যাতনের যেসব অভিযোগ করছে আওয়ামী লীগ, এই রায়কে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক পরিসরে তারা নিজেদের ওপরে ‘হুমকি’র দাবি আরো জোরালো করে তুলতে পারে।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বের বিষয়ে দলের মধ্যে কোন বিতর্ক নেই। তবে আইনগত বিধিনিষেধ এবং তাকে প্রত্যর্পনের জন্য ভারতের ওপর আরো চাপ পড়লে দলটি ভিন্ন কোনো কৌশল নেয় কিনা সেটিও সামনের দিনগুলোতে দেখার বিষয় হয়ে থাকবে।