
আজ রাত থেকেই হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের যাত্রীসেবা চালু করার আশা প্রকাশ করেছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাতে বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি, যত দ্রুত পারি–আজ রাতের মধ্যেই ফ্লাইট ওপেন করব। আমদানি পণ্য রাখতে বিকল্প ওয়্যার হাউজের ব্যবস্থা করা হবে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে, তবে পুরোপুরি নির্বাপণ হয়নি। আমরা যত দ্রুত পারি বিমানবন্দর (এয়ারপোর্ট) চালু করব। কারণ, এয়ারপোর্টে এ মুহূর্তে বিমান ওঠানামা বন্ধ আছে।
এর আগে বিমানবন্দরের রানওয়ে রাত ৯টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলে জানায় বিমান কর্তৃপক্ষ। এতে ঢাকা অভিমুখী একাধিক আন্তর্জাতিক ফ্লাইটকে গন্তব্যে নামতে না পেরে পার্শ্ববর্তী আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করতে হয়েছে।
এর মধ্যে হংকং থেকে ঢাকায় আসা ক্যাথে প্যাসিফিক এয়ারলাইনসের একটি বিমান অবতরণের অনুমতি না পেয়ে দীর্ঘ সময় ঢাকার আকাশে চক্কর কাটতে থাকে। অন্যদিকে দিল্লি থেকে ঢাকাগামী ইন্ডিগোর ফ্লাইটটিকে পাঠানো হয় ভারতের কলকাতা বন্দরে। এ ছাড়া ব্যাংকক থেকে আসা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের এবং শারজাহ থেকে আসা এয়ার এরাবিয়ার ফ্লাইটকে নামানো হয় চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে।
অগ্নিকাণ্ডের কারণে ঢাকা থেকে বহির্গামী একাধিক ফ্লাইটও আটকা পড়ে। ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুরগামী বাটিক এয়ারের ওডি-১৬৩ ফ্লাইট এবং ঢাকা থেকে মুম্বাইগামী ইন্ডিগোর ৬ই-১১১৬ ফ্লাইট যাত্রীবাহী বিমান হওয়া সত্ত্বেও রানওয়ের বদলে ট্যাক্সিওয়েতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে বাধ্য হয়।
আন্তর্জাতিক রুটের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ রুটও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সৈয়দপুর থেকে ঢাকাগামী ফ্লাইট এবং চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের ফ্লাইট উড্ডয়নের পরও পুনরায় চট্টগ্রামে ফিরে যায়।
এর আগে, শনিবার দুপুর ২টা ১৫ মিনিটের দিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশনসহ বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও বিমানবাহিনীর দুটি ফায়ার ইউনিট কাজ শুরু করে। পরে পর্যায়ক্রমে অন্য ইউনিট যোগ দেয়। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট কাজ করছে।
ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের মিডিয়া সেল থেকে জানানো হয়, আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করার সময় ফায়ার সার্ভিসের ৭ সদস্যসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আগুন নেভাতে গিয়ে ২২ জন আহত হয়েছেন। এরমধ্যে ১৫ জন আনসার সদস্য এবং সাতজন ফায়ার সার্ভিসে সদস্য রয়েছেন। শনিবার বিকেলে আনসার ও ভিডিপির গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. আশিকুজ্জামান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, শাহজালাল বিমানবন্দরে এখন পর্যন্ত এক হাজার আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ জন সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৮ জনকে সিএমএইচে ভর্তি করা হয়েছে।