
আব্দুল আলিম, সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি: আদর্শ, ত্যাগ ও ঈমানি দৃঢ়তার এক অনন্য দৃষ্টান্ত শহীদ খলিলুর রহমানের কবর জিয়ারত করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত এমপি পদপ্রার্থী অধ্যক্ষ মাহবুবুল আলম।
(শুক্রবার) ১৯ শে ডিসেম্বর-জুম্মার নামাজ শেষে নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার ঘোষকুড়া গ্রামে অবস্থিত শহীদ খলিলুর রহমানের কবর জিয়ারত করেন তিনি। এ সময় শহীদের রূহের মাগফিরাত কামনা করে দেশ, জাতি ও ইসলামী আন্দোলনের সার্বিক সফলতা কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
শহীদ খলিলুর রহমান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রথম বর্ষের একজন মেধাবী ছাত্র ছিলেন। তিনি ইসলামী ছাত্র শিবিরের একজন নিষ্ঠাবান ও দায়িত্বশীল কর্মী হিসেবে সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। শাহাদাতের সময় তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ আমীর আলী হল শাখা ছাত্র শিবিরের সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন।
এর আগে নাটোর শহর ও জেলা শাখায় সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করে সততা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার উজ্জ্বল স্বাক্ষর রাখেন।
১৯৯০ ইং সালের ২২ জুন রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সংঘটিত এক পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলায় তিনি গুরুতর আহত হন এবং ঘটনা স্থলেই শাহাদাত বরণ করেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, শান্তিপূর্ণ কার্যক্রম চলাকালে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে বোমা, ককটেল, আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করে ইসলামী ছাত্র শিবিরের কর্মীদের ওপর নৃশংস হামলা চালানো হয়। প্রশাসন ও পুলিশের রহস্যজনক নীরবতায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নেয়।
নয় ভাই-বোনের মধ্যে পঞ্চম শহীদ খলিলুর রহমান ছিলেন পিতৃমাতৃহীন এতিম। দরিদ্র পরিবারে জন্ম নিয়েও তিনি আলোকিত মানুষ গড়ার স্বপ্নে শিক্ষক হওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। সৎ মায়ের স্নেহ ও তত্ত্বাবধানে বেড়ে ওঠা এই তরুণের শাহাদাতের পর তাঁর মা আল্লাহর দরবারে তাঁকে শহীদ হিসেবেই কবুল করার জন্য দোয়া করেন যা ঈমানি দৃঢ়তা, ত্যাগ ও সবরের এক বিরল দৃষ্টান্ত হিসেবে আজও স্মরণীয়।
কবর জিয়ারত শেষে অধ্যক্ষ মাহবুবুল আলম বলেন, শহীদ খলিলুর রহমানের মতো আদর্শবান, সাহসী ও ত্যাগী তরুণদের আত্মত্যাগ আমাদের চলার পথে চিরন্তন প্রেরণা। তাঁদের রক্ত কখনোই বৃথা যেতে পারে না।
শহীদ খলিলুর রহমানের শাহাদাত ইতিহাসের এক বেদনা-বিধুর অধ্যায় হলেও তা আজও অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম এবং সত্য ও ন্যায়ের পথে অবিচল থাকার অনন্ত অনুপ্রেরণা হয়ে আছে।
কবর জিয়ারত শেষে অধ্যক্ষ মাহবুবুল আলম শহীদ খলিলুর রহমানের বাড়িতে যান এবং তাঁর অসুস্থ ভাই ইব্রাহিম হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তিনি তাঁর শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন এবং দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।
এ সময় স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও মুসল্লিরা উপস্থিত ছিলেন।