বাংলাদেশসহ পৃথিবীর প্রায় সব দেশের শিক্ষার্থীদের পছন্দের একটি গন্তব্য অস্ট্রেলিয়া। সম্প্রতি বিদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে দেশটিতে। সেখানকার বিভিন্ন শীর্ষ প্রতিষ্ঠানে ভর্তি শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশই বিদেশি।
টাইমস হাইয়ার এডুকেশনের একটি প্রতিবেদনের অনুযায়ী, অস্ট্রেলিয়ার শিক্ষা মন্ত্রী জেসন ক্লেয়ার বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ার শিক্ষার্থীদের মোট ভর্তি সংখ্যার ৫০ শতাংশের বেশি হওয়া উচিত।
তবে, এবার বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি সীমিত করার পরিকল্পনা হাতে নিতে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়ান সরকার। দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাসে দেশীয় শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি রাখার নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
স্কাই নিউজকে ক্লেয়ার বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো অস্ট্রেলিয়ান শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দেওয়া।
এমন সময় ক্লেয়ার এ কথা বললেন যখন সিডনি ইউনিভার্সিটি, মারডক ইউনিভার্সিটি আরএমআইটি ইউনিভার্সিটির মতো প্রতিষ্ঠানগুলোতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা মোট আসনের অর্ধেকের বেশি আসন দখল করছে।
ইকোনমিক টাইমস জানায়, সিডনি ইউনিভার্সিটিতে ২০২৪ সালে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫১ শতাংশ, যা ২০২৩ সালে ছিল ৪৯ শতাংশ এবং মহামারির আগে ছিল ৪৩ শতাংশ।
অন্যদিকে মারডক ইউনিভার্সিটিতে এখন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫৭ শতাংশ আর আরএমআইটি ইউনিভার্সিটির গত বছরই ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে এই সংখ্যা।
বিদেশি শিক্ষার্থীর ওপর অস্ট্রেলিয়ার এই বাড়তি নির্ভরতা মূলত আর্থিক চাপের কারণে, যা প্রায় দশ বছর আগে শুরু হয়। তখন সরকারের অর্থায়নের অনিশ্চয়তার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অতিরিক্ত রাজস্ব উৎস খুঁজতে শুরু করে।
২০১৩ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে সিডনি ইউনিভার্সিটি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়ে ১২ হাজার ৩০০ থেকে হয়েছে ২৬ হাজার।
অস্ট্রেলিয়ার অন্য শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পরিস্থিতিও প্রায় একই রকম। ২০২৪ সালে নিউ সাউথ ওয়েলস ইউনিভার্সিটিতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৪৭ শতাংশ, ওলংগং ইউনিভার্সিটিতে ৪৬ শতাংশ, মনাশ ইউনিভার্সিটিতে ৪৫ শতাংশ আর মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটিতে ৪৪ শতাংশ।
অস্ট্রেলিয়ান সরকারের বার্তা হচ্ছে, অস্ট্রেলিয়ার শিক্ষার্থীদেরকে দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দুতে রাখা জরুরি। তবে, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরাও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর রাজস্ব ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের জন্য এখনও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।