
রাইজিংসিলেট- শীতে প্রায় সবাই গরম পোশাকে থাকেন। এ সময় সকালের দিকে লেপ-কম্বল থেকে কেউ বের হতেই চান না। প্রথমত শীত এবং দ্বিতীয়ত আলসেমি হয়। এ সময় যে শুধু শীতের তীব্রতাই আমাদের কষ্ট দেয়, বিষয়ট এমন নয়। শীতে অনেককেই দেখা যায় তীব্র ব্যথায় ছটফট করছেন। এ ক্ষেত্রে যন্ত্রণার শেষ থাকে না।
কখনো কখনো হঠাৎ করে পেশিতে টান বা হাত-পায়ের আঙুল বেঁকে যাওয়ার মতো হয়। শীতে এমনটা হলে স্বাভাবিকভাবে কষ্ট বেশি হয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এ পরিস্থিতিতে কী করণীয়, কীভাবে ব্যথা দূর হতে পারে? এসব ব্যাপারে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন কলকাতা শহরের বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. অরিন্দম বিশ্বাস।
নিয়ম অনুযায়ী সতর্ক থাকা: ডা. অরিন্দম বিশ্বাসের মতে, এমন পরিস্থিতিতে যতটা সম্ভব দ্রুত গরম পানি, ফলের রস খেয়ে শরীরে পানি ও মিনারেলের ভারসাম্য ফেরাতে হবে। শীতে ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে পানি পানের পরিমাণ কমিয়ে দেয়া যাবে না। আর এমন সমস্যা যদি বারবার হয় তাহলে চিকিৎসকের দ্বারস্থ হতে হবে।
সমস্যা হওয়ার কারণ: শরীরে পানির ঘাটতি হওয়ার জন্য ব্যথা অনুভব হতে পারে। কেননা, পানির ঘাটতি হলে পেশিতে টান ধরার সমস্যা হয়। এ জন্য শীতে শত ঠান্ডা হওয়ার পরও পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হয়। তবে এ সমস্যা শুধু শীতে নয়, গ্রীষ্মেও হয়ে থাকে। হাত-পায়ে পেশি টানের তীব্র ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত পানি পানের অভ্যাস করতে হবে।
অন্য যে কারণে হতে পারে: অনেকেই শ্বাসকষ্টের জন্য ইনহেলার নেন। তাদের পেশিতে টান ধরার মতো ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ডা. অরিন্দম বিশ্বাসের মতে, ইনহেলার নিলে অনেক সময় শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রার তারতম্য হয়। এদিকে মাংসপেশির সঞ্চালনে পটাশিয়াম, সোডিয়ামের মতো মিনারেলের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। এ জন্য কখনো যদি গুরুত্বপূর্ণ দুটি উপাদানের পরিমাণে তারতম্য হয়, তখন হঠাৎ করেই টান ধরতে পারে।
ওয়ার্ম আপ জরুরি: শীতে মাসল স্টিফ হয়। এ জন্য ফিজিক্যাল অ্যাকটিভিটি বাড়ালে মাংসপেশির সম্প্রসারণে জটিলতা হয়ে থাকে। ফলে পেশিতে টান ধরার মতা সমস্যা হয়। এ জন্য শরীরচর্চার আগে ওয়ার্ম আপ করার পরামর্শ দিলেন ডা. অরিন্দম বিশ্বাস। তার ভাষ্যমতে, শীতের সময় ভোরে মর্নিং ওয়াক বা কোনো ভারী কাজ করার আগে অবশ্যই ওয়ার্ম আপ করতে হবে। এতে নানা উপকার পাওয়া যায়।
ব্যথা শুরু হলে করণীয়: হঠাৎ ক্র্যাম্প ধরলে প্রথমে ব্যথার জায়গায় আঙুল দিয়ে চেপে ধরে ম্যাসাজ করতে থাকেন। যেন শক্ত হওয়া পেশি ধীরে ধীরে নরম হয়। এরপর টান ধরা পা স্ট্রেইচের চেষ্টা করুন। এতে কিছুক্ষণ পর ব্যথা কমে যাবে। আবার ব্যথা কমলে আবার স্বাভাবিকভাবে আগের মতো কাজ শুরু করা যাবে না। এ সময় কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয়া উচিত।
এ ব্যাপারে ডা. অরিন্দম বিশ্বাস জানান―হঠাৎ পেশিতে টান ধরে ব্যথা শুরু হলে এক গ্লাস ফলের রস পান করুন। এতে কিছুক্ষণের মধ্যেই উপকার পাবেন। কারণ, ফলের তরল রসে বিভিন্ন ভিটামিন উপাদান রয়েছে। যা শরীরে পানি ও মিনারেলের ঘাটতি মেটায় এবং এতে ধীরে ধীরে ব্যথা হ্রাস পায়।