সমশের মবিন চৌধুরীর, সিলেট-৬ আসনে বিএনপির নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়ে মন্তব্যের জেরে এবার কড়া সমালোচনা করেছেন বিএনপি নেতা ফয়সল আহমদ চৌধুরী ।
শনিবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে সিলেট নগরীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্যে তিনি বলেন, সমশের মবিন চৌধুরী দলছুট,নীতিহীন এবং পথভ্রষ্ট রাজনীতিবিদ।
সম্প্রতি বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেলের গোলটেবিল বৈঠকে ফয়সল আহমদ চৌধুরীর সাথে ফোনালাপ হয়েছে উল্লেখ করে সমশের মুবিন চৌধুরী বলেছিলেন, ‘বিএনপির নির্বাচনের কোনো প্রস্তুতি নেই, স্থানীয় প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রস্তুতি নিতে মানা করা হয়েছে।’ তবে সমশের মবিন চৌধুরী মিথ্যাচার করেছেন বলে দাবি করেছেন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৬ আসনের বিএনপি দলীয় প্রার্থী ফয়সল আহমদ চৌধুরী।
সমশের মবিন চৌধুরীর বর্তমান কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে ফয়সল আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘তিনি এক সময় বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। কিন্তু দলের ক্রান্তি লগ্নে সরকারের দালালি করার উদ্দেশে রাজনীতি থেকে অবসর নেন। কিছুদিনের মধ্যেই তিনি বিকল্প ধারায় যোগ দিয়ে গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার আসনে সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন। গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজারের মানুষ ঘৃণাভরে তাকে প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি ভোট পান মাত্র ১৯১টি। এরপর দীর্ঘদিন ঘাপটি মেরে বসে থাকেন। গণতন্ত্রকামী সকল রাজনৈতিক দল যখন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে আন্দোলন করছে ঠিক তখনই আন্দোলনের পিঠে ছুরিকাঘাত করার অপতৎপরতা শুরু করেছেন সমশের মবিন চৌধুরী। সরকারের ক্রীড়নক হয়ে কথিত একটি কিংস পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়ে আবারো সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হবার খায়েস নিয়ে নানা কুটচাল ও অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
ফয়সল আহমদ চৌধুরী আরও বলেন, ‘অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে সাংগঠনিকভাবে গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারে বিএনপি অনেক শক্তিশালী। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় সকল কর্মসূচি এই দুই উপজেলায় সফলভাবে পালন করা হচ্ছে। অথচ সরকারের দালালি করতে নেমে সমশের মবিন তা দেখেও না দেখার ভান করছেন। তার এই ন্যাক্কারজনক ভূমিকার প্রতিবাদে স্থানীয় বিএনপি সম্প্রতি পৃথকভাবে মিছিল সমাবেশ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে। এই দুই উপজেলায় তাকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে তাকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার আহবান জানিয়েছে। শুধু তাই নয়; ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা তার কুশপুত্তলিকা পুড়িয়েছে। আমরা স্থানীয় বিএনপির প্রতিবাদ ও তাদের দাবির প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করছি
চৌধুরী বলেন, ‘সমশের মবিন আমার ও স্থানীয় বিএনপি সম্পর্কে নানা বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করেছেন। তিনি রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ফোনে কিংবা সরাসরি আমার সঙ্গে কোনো কথা হয়নি। কিন্তু গোলটেবিল বৈঠকে তিনি চরম মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়ে আমার সাথে ফোনালাপের বিষয়ের অবতারণা করেছেন। আমি নিন্দা জানানোর পাশাপাশি অবিলম্বে এই বক্তব্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছি।’
ফয়সল চৌধুরী বলেন, ‘রাজনীতিতে আমার পথচলা তাঁর মতো ডিগবাজির মাধ্যমে নয়। আমি জাতীয়তাবাদী দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রদল থেকে রাজনীতি করে আসছি। দলে ত্যাগ ও অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে আমাকে সিলেট-৬ আসনে (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) দলের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়। কিন্তু বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকারের কারচুপি এবং দিনের ভোট রাতে করে ফেলার মাধ্যমে আমার জয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মিজান, সিলেট জেলা বিএনপির সহসভাপতি আশিক উদ্দিন আশিক, সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুল হক চৌধুরী, বিয়ানীবাজার পৌর বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান রুমেল, সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন জুয়েল, বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছরওয়ার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুর রহমান, গোলাপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি নোমান উদ্দিন মুরাদ, সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জান উজ্জ্বল, গোলাপগঞ্জ উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মামুন আহমদ রিপন, পৌর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল আজিজ মুন্না প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।