
রাইজিংসিলেট- লাক্কাতুরা চা বাগান এলাকায় অজ্ঞাত এক নারীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। পুলিশ জানায়, একটি মেমোরি কার্ড থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে হত্যার রহস্য উন্মোচন করা সম্ভব হয়েছে। এই ঘটনায় নিহত নারীর স্বামীকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
গত ১৪ অক্টোবর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে লাক্কাতুরা চা বাগানের ভাইগণ টিলার জঙ্গলে আংশিক পচনধরা এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ। মৃত নারীর পরনে ছিল লাল ছাপা শাড়ি, হালকা গোলাপি বোরকা এবং গলায় পেঁচানো ছিল একটি হলুদ ওড়না। ঘটনাস্থলে পাওয়া একটি নারীদের ব্যাগ থেকে কিছু জামাকাপড় ও একটি ছোট মেমোরি কার্ড উদ্ধার করা হয়।
মরদেহ শনাক্তে পিবিআই ও সিআইডি আঙুলের ছাপ বিশ্লেষণ করলেও তা থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। পরে মেমোরি কার্ডের অডিও রেকর্ড এবং মোবাইল কলের তথ্য বিশ্লেষণ করে নিহত নারীর পরিচয় নিশ্চিত করে পুলিশ। নিহত নারী হলেন সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার থানার মওলারপাড় গ্রামের রাবেয়া বেগম।
তদন্তে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় রাবেয়ার স্বামী ফারুক আহমেদকে চিহ্নিত করে পুলিশ। তিনি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার রাঙ্গারচর গ্রামের বাসিন্দা এবং ওমান প্রবাসী। ১৭ অক্টোবর তাকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রথমে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ অস্বীকার করলেও জিজ্ঞাসাবাদে উপস্থাপিত তথ্যের ভিত্তিতে ফারুক স্ত্রী হত্যার কথা স্বীকার করে। সে জানায়, স্ত্রীর পূর্বের একটি বিয়ে গোপন রাখা এবং পরকীয়ার অভিযোগে তাদের দাম্পত্য জীবনে টানাপোড়েন চলছিল। ১৩ অক্টোবর শাহজালাল (রহ.)-এর মাজারে জিয়ারত শেষে লাক্কাতুরা এলাকায় বেড়াতে গিয়ে ফুফাতো ভাই আলআমিনের সহায়তায় রাবেয়াকে গলা টিপে হত্যা করে।
ঘটনার পর নিহতের চাচা রিপন মিয়া বাদী হয়ে এয়ারপোর্ট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ১৮ অক্টোবর আদালতে ফারুক ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।