
রাইজিংসিলেট- সাদুল্লাপুর উপজেলার একটি মসজিদে সুদ-ঘুষ ও অন্যায়-অত্যাচারীর বিরুদ্ধে বয়ান দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে মুসল্লিরা। অবশেষে সেই মুসল্লিদের তোপের মুখে চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন মসজিদের ইমাম হাফেজ মো. হামিদুল ইসলাম।
সম্প্রতি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের চিকনী সরকার পাড়া জামে মসজিদে জুমার নামাজের আগে বয়ান দিতে গিয়ে মুসল্লিদের কাছে লাঞ্ছিত হন ওই ইমাম। সোমবার (১৫ জুন) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান শুভ।
জানা যায়, প্রায় বছর চারেক আগে সাদুল্লাপুর উপজেলার চিকনী সরকার পাড়া জামে মসজিদে ইমামতির দায়িত্ব পান উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের চাঁদ করিম গ্রামের মজমল মিয়ার ছেলে হাফেজ মো. হামিদুল ইসলাম। গত বছরের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে মুসল্লিদের উদ্দেশে জুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে বয়ান দেয়ায় তাকে ‘রাজাকারের বাচ্চা’ আখ্যায়িত করে গালি দেয়া হয়। মসজিদটির কিছু দায়িত্বশীল ব্যক্তি এই গালি দেন বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর কিছুদিন আগে সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে মসজিদে বয়ান দেন ইমাম হাফেজ মো. হামিদুল ইসলাম। এতেও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন কতিপয় মুসল্লি। ইমাম হামিদুল ইসলামের সঙ্গে অশোভনীয় আচরণের প্রতিবাদ করায় জাহাঙ্গীর আলম সরকার হারুন নামের এক মুসল্লিকে সমাজ ছাড়তে হয়েছে।
এ বিষয়ে হাফেজ মো. হামিদুল ইসলাম বলেন, ‘চার বছর আগে উপজেলার চিকনী সরকার পাড়া জামে মসজিদে ইমাম হিসেবে যোগদান করি। এরই ধারাবাহিকতায় মুসল্লিদের উদ্দেশে জুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে বয়ান দেয়ায় আমাকে রাজাকারের বাচ্চা বলে গালি দেয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে বয়ান দেয়ায় আমার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন তারা। মসজিদটির দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের এমন আচরণের কারণে আমি ইমামতি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছি।’
চিকনী সরকার পাড়া জামে মসজিদ পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ছামছুল সরকার বিদ্যুৎ বলেন, ‘আমাদের ইমাম হাফেজ মো. হামিদুল ইসলামকে রাজাকারের বাচ্চা বলে গালি দেয়ার ঘটনাটি সত্য। ইমামের সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে বয়ানকে কেন্দ্র করে আর কোনো ঝামেলা না বাড়ানোই ভালো।’
জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান শুভ বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে সংশ্লিষ্টরা আমাকে জানাননি। লোকমুখে শুনেছি। ঘটনাটি ধিক্কারজনক।’