পটুয়াখালীর গলাচিপায় মুমূর্ষু স্কুলছাত্র মো. মাজহারুল ইসলাম বাঁচতে চায়। বয়স ১৭ বছর। দুই বছর ধরে মেরুদন্ডের নিচের অংশ স্পাইনাল কর্ড ভেঙ্গে মুমূর্ষু অবস্থায় ভূগছে। মানুষের কাছ থেকে সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে ও জায়গা জমি বিক্রি করে দুই বছর ছেলের চিকিৎসা খরচ চালিয়েছেন। ব্যয় বহুল চিকিৎসা খরচ যোগাড় করতে পারছেন না তার পরিবার। উপজেলার গলাচিপা সদর ইউনিয়নের পশ্চিম রতনদী গ্রামের মুছা হারুন মোল্লার ছোট ছেলে মো. মাজহারুল ইসলাম। মাজহারুল ইসলাম গলাচিপা মডেল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিল। বাবা মুছা হারুন মোল্লা একজন দিনমজুর। বিভিন্ন কার্গো জাহাজ ও লঞ্চ থেকে মালামাল উঠানামা করে সংসার চালান। বাড়ি ছাড়া তার কিছুই নেই। সম্পত্তি থাকলে তা বিক্রি করে ছেলের চিকিৎসা করাতেন। অসহায় মুছা হারুন মোল্লা ছেলের চিকিৎসার টাকা যোগাড় করতে না পারায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। মা মোর্শেদা বেগম জানান, ২০২০ সালে করোনাকালীন সময়ে স্কুল বন্ধ থাকায় সংসারে অভাব দূর করতে এবং বাবার কাজে সহযোগিতা করতে গিয়ে জাহাজ থেকে বস্তা মাথায় নিয়ে নামতে গিয়ে সিঁড়ি থেকে পড়ে দুই পায়ে এবং হাতে মারাত্মক জখম হয়। বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হলেও আমার ছেলে এখনও সুস্থ হয়ে ওঠেনি। ডাক্তার বলেছে ওর মেরুদন্ডের নিচের অংশ স্পাইনাল কর্ড ভেঙ্গে প্যারালাইসিসের সৃষ্টি হয়েছে। ওর উন্নত চিকিৎসা করাতে দেশের বাহিরে নিতে পারলে ভাল হয়। কিন্তু এত টাকা আমরা কোথায় পাব। জাহাজ মালিক আমাদের কিছু টাকা সহযোগিতা করলেও এ পর্যন্ত আমাদের ৭/৮ লাখ টাকার মত ব্যায় হয়েছে। প্রতিদিন ওর ৪-৫শত টাকার ঔষধ দরকার। জায়গা জমি বিক্রি করেছি। আত্মীয় স্বজন ভাই বোনসহ বিভিন্ন জনের কাছে ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়েছি। এখন আমাদের আর কোন উপায় নাই। তিনি কান্না কন্ঠে আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সহ সমাজের বিত্তবানদের সদয় দৃষ্টি কামনা করছি। সবার সহযোগিতার হাত পেলে হয়ত আমার ছেলেটা আবার স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেতে পারে। বাবা মুছা হারুন মোল্লা বলেন, আমার ছেলের চিকিৎসা করাতে অনেক টাকার প্রয়োজন। আমি এখন সর্বশান্ত হয়ে গেছি। আমার পক্ষে ছেলের চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছে না। আমার ছেলের দিকে তাকানো যায় না। ওর কষ্ট সহ্য করার মত না। আমার ছেলের জীবন বাঁচাতে সমাজের স্ব-হৃদয়বান ব্যক্তি, সংস্থার নিকট সাহায্য সহযোগিতা এবং প্রধানমন্ত্রী সুদৃষ্টি কামনা করছি। আমার ছেলের কাছে সাহায্য পাঠানোর বিকাশ নং ০১৮৫৬-৬৯২৫৬৯৯, নগদ ০১৭৯১-৪০০৩৩১। এ বিষয়ে গলাচিপা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মু. শাহিন বলেন, মুছা হারুন মোল্লা একজন উপজেলা শ্রমিক লীগ নেতা ও একজন গরিব মানুষ। তার ছেলে দুর্ঘটনায় অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে আছে। গলাচিপা সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন টুটু বলেন, মুছা হারুন মোল্লা একজন শ্রমিক। তার পক্ষে তার ছেলের চিকিৎসা খরচ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সরকার মুছা হারুন মোল্লাকে সহযোগিতা করলে তার ছেলেটা বেঁচে যেত পারত। গলাচিপা উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি মো. ইব্রাহিম দফাদার ও সাধারণ সম্পাদক মো. আল আমিন বলেন, একজন শ্রমিকলীগ নেতার ছেলে গুরুতর অসুস্থ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহ সকলের সদয় দৃষ্টি কামনা করছি। যাতে ছেলেটা সুস্থ হয়ে যেতে পারে।