
হৃদয়ে বইছে পরিচ্ছন্নতার নতুন হাওয়া। তারুণ্যের শক্তি আর সচেতনতার আলোকে শহরের অবহেলিত জলাধারগুলো ফিরে পাচ্ছে তাদের হারানো প্রাণ। ‘তারুণ্যের উৎসব’ উপলক্ষে নগরবাসীর চোখের সামনে শুরু হয়েছে এক ভিন্নধর্মী অভিযান।
আবর্জনায় ঢেকে থাকা দিঘী-ছড়াগুলোতে ফিরছে স্বচ্ছ জল, নির্মল পরিবেশ। সিলেটের শতাধিক তরুণ-তরুণীর অংশগ্রহণে জল্লারপাড়ের ঐতিহাসিক জল্লাদিঘী পরিষ্কারের মাধ্যমে এই ৭ দিনব্যাপী পরিচ্ছন্নতা অভিযানের সূচনা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন-সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকার, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার দেবজিৎ সিংহ, পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেটের পরিচালক মো. ফেরদৌস আনোয়ার, সহকারী পরিচালক বিসল চক্রবর্ত্তী, সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের পুলিশ সুপার (অপারেশনস অ্যান্ড ট্রাফিক) মো. আমিনুল ইসলাম, সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা লে. কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ একলিম আবদীন ও নির্বাহী প্রকৌশলী রাজি উদ্দিন খান প্রমুখ। সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরাও এতে অংশ নেন।
সিলেট সিটি করপোরেশন, জাতিসংঘের শিল্প উন্নয়ন সংস্থা (ইউনিডো) ও নরওয়ের সহযোগিতায় পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের কর্মসূচির আয়োজনে বুধবার (২২ অক্টোবর) সকালে নগরের জল্লার পাড়ের জল্লাদিঘী পরিষ্কারের মধ্য দিয়ে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ও সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রশাসক খান মো. রেজা-উন-নবী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খান মো. রেজা-উন-নবী বলেন, ‘প্লাস্টিক ও পলিথিনে ঢেকে থাকা শহরের জলাধারগুলো পরিষ্কার করলে শুধু সৌন্দর্য নয়, মশার প্রজননও রোধ হবে। তরুণরাই সমাজের মূল শক্তি—তাদের হাত ধরেই পরিচ্ছন্ন সিলেট গড়ে উঠবে। তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষে আমরা শহরের খাল ও ছড়া পরিষ্কার রাখার উদ্যোগ নিয়েছি। তরুণরাই সমাজের মূল শক্তি তাদের হাত ধরেই পরিচ্ছন্ন সিলেট গড়ে উঠবে।’
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকার বলেন, ‘জলাধারগুলো সিলেট শহরের প্রাণ। দখল ও আবর্জনার কারণে এসব এখন মৃতপ্রায়। মাস্টারপ্ল্যানে এসব সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একসময় সিলেটে অসংখ্য দিঘী ও জলাশয় ছিল, যা এখন দখল ও ময়লার কারণে ব্যবহার অনুপযোগী হয়েছে। আমরা মাছুদিঘি পরিষ্কারের পর এবার জল্লারপাড়ে অভিযান শুরু করেছি। ধীরে ধীরে শহরের সব জলাধার দখলমুক্ত ও পরিষ্কার করা হবে।’
সাত দিনব্যাপী এই পরিচ্ছন্নতা অভিযানে সিসিকের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ ছাড়াও ক্লিন সিটি সিলেট, বিডি ক্লিন, স্কাউটস, সেভ সিলেট, ইউনাইটেড সুপার ওমেন, সিলেট ওয়ান্ডার ওমেন, সিলেট বাইকার্স ক্লাব, কালারফুল সিলেট, ট্র্যাভেল সিলেট, সিলেট রানার্স ক্লাব, সিলেট সাইক্লিং ক্লাব ও দ্য হিউম্যান চ্যারিটিসহ ২২টি সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অংশ নিচ্ছে।