
আব্দুল আলিম , সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি: তিন দশকের শিক্ষকতা জীবনে গড়ে তুলেছেন হাজারো শিক্ষার্থী, অর্জন করেছেন সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা। সবার কাছে তিনি পরিচিত ‘হেড স্যার’ নামে। সেই শ্রদ্ধার জায়গা থেকেই এবার বৃহত্তর পরিসরে সমাজ পরিবর্তনের ডাক দিয়েছেন নওগাঁ-১ (সাপাহার-পোরশা-নিয়ামতপুর) আসনের বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যক্ষ মাহবুবুল আলম।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তিনি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে নিজের ভাবনা ও পরিকল্পনা তুলে ধরেছেন। সেখানে তিনি জোর দিয়েছেন শিক্ষা, সৎ নেতৃত্ব, দুর্নীতিমুক্ত শাসন এবং ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তার ওপর।
তিন দশকের শিক্ষকতা ও আদর্শ গড়ার কারিগর
সাপাহার আল হেলাল ইসলামী একাডেমী অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে ১৯৯৫ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত টানা ৩০ বছর একই প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালন করছেন মাহবুবুল আলম। তিনি মনে করেন, ‘হেড স্যার’ ডাকটির মধ্যেই লুকিয়ে আছে তাঁর জীবনের সমস্ত সাধনা ও ত্যাগের স্বীকৃতি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি উল্লেখ করেন, “আমি বিশ্বাস করি, একজন শিক্ষক এক স্কুলেই থাকলে সেই স্কুলটাকেই আদর্শ বানাতে পারেন।” তাঁর স্বপ্ন ছিল আল হেলাল একাডেমিকে এমন একটি পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া, যা দেখে সাপাহার, পোরশা, নিয়ামতপুর ও পত্নীতলার অন্য স্কুলগুলোও মানউন্নয়নে অনুপ্রাণিত হয়। বর্তমানে সাপাহারের বাইরে থেকেও শিক্ষার্থীরা এখানে পড়তে আসে এবং এলাকার শিক্ষার মান বৃদ্ধি পেয়েছে—এটাকেই তিনি নিজের জীবনের বড় প্রাপ্তি হিসেবে দেখছেন।
আবেগঘন ওই পোস্টে তিনি লিখেন, “রাস্তায় হাঁটলে শুধু আমার স্কুলের না, অন্য স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরাও ছুটে আসে, সালাম দেয়। সেই মুহূর্তে আমার গলা ভারী হয়ে আসে, অজান্তেই চোখ ভিজে যায়। আমি শুধু আল হেলালের ছাত্রদের হেড স্যার নই, আমি মনে করি এই এলাকার সকল ছাত্রের হেড স্যার।”
রাজনীতিতে সততা ও পরিবর্তনের অঙ্গীকার
শিক্ষকতার অভিজ্ঞতায় একটি এলাকাকে যেমন বদলে দেওয়া সম্ভব বলে বিশ্বাস করেন অধ্যক্ষ মাহবুবুল আলম, তেমনি সেই বিশ্বাস থেকেই এবার তিনি জাতীয় রাজনীতিতে পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখছেন। তাঁর নির্বাচনী ইশতেহারের মূল লক্ষ্য—সৎ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা, দুর্নীতিমুক্ত শাসন ব্যবস্থা এবং মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়া।
সাবেক শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “যেমন করে একজন শিক্ষক হিসেবে আমি তোমাদের পাশে ছিলাম, আজও তোমাদের পাশে চাই—ছাত্র হিসেবে না; আমার এলাকার সন্তান, আমার ছোট ভাই হিসেবে।”
শিক্ষার পাশাপাশি এলাকার অর্থনীতির চালিকাশক্তি ব্যবসায়ীদের জন্যও বিশেষ বার্তা দিয়েছেন জামায়াত মনোনীত এই প্রার্থী। তিনি সাপাহার, পোরশা ও নিয়ামতপুরকে একটি ব্যবসায়-বান্ধব ও বিনিয়োগমুখী অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে দেওয়া এক বার্তায় তিনি বলেন, “শিক্ষক হিসেবে যেমন সততা, শৃঙ্খলা ও ন্যায়কে জীবনের মূলনীতি বানিয়েছি, তেমনি নেতৃত্বের ক্ষেত্রেও আমি বিশ্বাস করি—সৎ নেতৃত্ব ছাড়া টেকসই ব্যবসা ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়।”
তিনি ব্যবসায়ীদের কথা দিয়েছেন, নির্বাচিত হলে এলাকায় চাঁদাবাজি ও হয়রানিমুক্ত বাজার ব্যবস্থা নিশ্চিত করবেন। যেখানে ক্ষুদ্র থেকে বড়—সব ব্যবসায়ী ভয়হীন পরিবেশে, সমান সুযোগ নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন। একটি সুশাসিত ও সমৃদ্ধ নওগাঁ-১ আসন গড়ার লক্ষ্যে তিনি ব্যবসায়ী সমাজের পরামর্শ ও সহযোগিতা কামনা করেছেন।
শিক্ষক থেকে জননেতা হয়ে ওঠার এই যাত্রায় অধ্যক্ষ মাহবুবুল আলম তাঁর দীর্ঘদিনের অর্জিত আস্থা ও ভালোবাসাকে পুঁজি করেই আগামী জাতীয় নির্বাচনে জনগণের রায় প্রত্যাশা করছেন।