সোনারগাঁয়ে সৌদি প্রবাসীর ধর্ষণে ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনা ধামাচাপা দিতে শালিস বৈঠকে ১৩ লাখ টাকা রফাদফা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
বারদী ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের দুই বিএনপি নেতা এ রফাদফা করে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ টাকা থেকে তারা দু’জন তিন লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিচার শালিসের বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানায়, ১৩ লাখ টাকা রফাদফার পরও বিএনপির দুই নেতাকে আরো ৩ লাখ টাকা দেয়ার প্রতিশ্রুতিতে এই শালিস বৈঠক হয়। এই তিন লাখ টাকা তারা ভাগবাটোয়ারা বা আত্মসাৎ করার জন্য এ বিচার শালিসে এমন রায় প্রদান করে।
ভূক্তভোগী কিশোরীর ভাবি ফাহিমা আক্তার জানান, ধর্ষক আব্দুর রবের মেয়ের সঙ্গে ভূক্তভোগী কিশোরী প্রতিদিন রাতে ঘুমাতো। সেই সুযোগে সে তাকে ধর্ষণ করে। বিষয়টি জানাজানি হলে তাদের পরিবারকে জানানো হয়। পরে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। গড়িমসি করার কারনে কিশোরী ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। সমাধান না করায় শালিসী বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে ১৩ লাখ টাকা রফাদফা হয় ৩ লাখ টাকা নগদ দেয়ার পরও কিশোরীর পরিবার এক টাকাও পায়নি। পাশাপাশি সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার পর আব্দুর রবকে দিয়ে দেয়া হবে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বারদী ইউনিয়নের নুনেরটেক মধ্যপাড়া গ্রামের সুলতান মিয়ার ছেলে সৌদি প্রবাসী আব্দুর রব পার্শ্ববর্তী বাড়ির আহম্মদ মিয়ার ১৬ বছর বয়সী মেয়ে নুনেরটেক মাদ্রাসার ৮ম শ্রেণীর ছাত্রীকে তার বাসায় একা পেয়ে ধর্ষণ করে। তার ধর্ষণে ওই কিশোরী ৭ মাসের অন্তঃসত্তা হয়ে পড়ে। বিষয়টি জানাজানি হলে ওই গ্রামে গত সোমবার সন্ধ্যায় শালিসী বৈঠকে বসে। ওই বৈঠকে বারদী ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান মিয়া ও বারদী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য ও বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ও স্বপনসহ তাদের লোকজন ঘটনা ধামাচাপা দিতে উঠে পড়ে লাগে। শালিসী বৈঠকে ধর্ষক প্রবাসী আব্দুর রবকে ১৩ লাখ টাকা দেয়ার জন্য রফাদফা করে। বৈঠকে ধর্ষক আব্দুর রব মিয়া নগদ ৩ লাখ টাকা বিএনপি নেতা শাহজাহানের কাছে দেয়। ওই টাকা বুধবার পর্যন্ত ভূক্তভোগী কিশোরীর পরিবার পাননি বলে দাবি করেছেন। তবে ওই টাকা বিএনপি নেতা শাহজাহানের কাছে গচ্ছিত রয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের। বাকি ১০ লাখ টাকা আগামী ২০ জানুয়ারী তারিখে দেয়ার কথা রয়েছে।
অভিযুক্ত আব্দুর রবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার স্ত্রী জোহরা বেগমের দাবি, তার স্বামী এ অপরাধের সঙ্গে জড়িত না। তবে কেন ৩ লাখ টাকা দিয়েছেন এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
বারদী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো.শাহজাহান মিয়া বলেন, শালিসী বৈঠক হয়েছে। কিশোরী ও অভিযুক্তদের কথা শুনে বৈঠকে এলাকাবাসী ১৩ লাখ টাকা রায় দিয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল বারী বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
