
রাইজিংসিলেট- তেলেগু চলচ্চিত্রের অন্যতম বর্ষীয়ান অভিনেতা ও প্রাক্তন বিধায়ক কোটা শ্রীনিবাস রাও ২০২৫ সালের ১৩ জুলাই ভোররাতে হায়দরাবাদের ফিল্মনগর এলাকার নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন।
তিনি রেখে গেছেন স্ত্রী রুক্মিণী এবং দুই কন্যাকে। তার একমাত্র পুত্র কোটা প্রসাদ রাও ২০১০ সালে এক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান।
চলচ্চিত্রে তার দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তিনি ভিলেন, চরিত্রাভিনেতা এবং কমেডিয়ান হিসেবে অসংখ্য দর্শকের হৃদয় জয় করেছেন। শুধু তেলেগু নয়, তামিল, হিন্দি, কন্নড় ও মালয়ালম ভাষার চলচ্চিত্রেও তিনি অভিনয় করেন। তার অভিনীত চলচ্চিত্রের সংখ্যা ৭৫০-এর বেশি। এর মধ্যে তামিলে ৩০টি, হিন্দিতে ১০টি, কন্নড়ে ৮টি এবং একটি মালয়ালম সিনেমা অন্তর্ভুক্ত। তার শেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ছিল ২০২৩ সালের সুবর্ণ সুন্দরী।
১৯৪২ সালের ১০ জুলাই, অন্ধ্রপ্রদেশের কৃষ্ণা জেলার কাঙ্কিপাড়ু গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন কোটা। ছোটবেলা থেকেই মায়ের উৎসাহে নাট্যচর্চার প্রতি আগ্রহ জন্মে। ছাত্রজীবনে মঞ্চে অভিনয়ের মাধ্যমে শুরু হয় তার শিল্পযাত্রা।
চলচ্চিত্রে প্রবেশের আগে তিনি স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়াতে চাকরি করতেন এবং সমান্তরালে থিয়েটারেও যুক্ত ছিলেন। ১৯৭৮ সালে প্রাণম খারেদু ছবির মাধ্যমে তেলেগু সিনেমায় আত্মপ্রকাশ করেন।
অভিনয় জগতে অবদানের জন্য তিনি মোট ৯টি নন্দী পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৫ সালে ভারত সরকার তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করে।
চলচ্চিত্রের পাশাপাশি রাজনীতিতেও ছিলেন সক্রিয়। ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থী হিসেবে তিনি ১৯৯৯ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত বিজয়ওয়াড়া (পূর্ব) বিধানসভা আসনের নির্বাচিত বিধায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তাঁর মৃত্যুতে ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কোটা শ্রীনিবাস রাওয়ের অভিনয়, ব্যক্তিত্ব ও অবদান চলচ্চিত্রপ্রেমীদের মনে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।