 
রাইজিং সিলেট :: সিলেটে জেলার গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কানাইনঘাট সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন দেশে প্রবেশ করছে ভারতীয় চোরাচালানের হরেক রকম পণ্য। মাদক, অস্ত্র, চিনি, কাপড়, কসমেটিক্স কিছুই বাদ যাচ্ছেনা। রাত ১২ টা হলে সিলেট শহরে প্রবেশ করতে থাকে চোরাচালানের মালামাল ভর্তি ডিআই ট্রাকগুলো।
সীমান্তের বর্ডারগার্ড বিজিবি, জেলা পুলিশের তিনটি থানা ও ডিবি পুলিশ। মহানগর পুলিশের শাহপরাণ থানা, এসএমপি ডিবি পুলিশ, শাহপরাণ পুলিশ ফাঁড়িসহ কোতয়ালী পুলিশকে ম্যানেজ করে নগরীর কালিঘাটে প্রায় ৩ শতাধিক মালামাল ভর্তি ডিআই ট্রাকগুলো প্রবেশ করে। সীমান্ত থেকে এসব মালামাল ভর্তি ট্রাকগুলো জৈন্তাপুর এবং হরিপুর বাজারে জড়ো হতে থাকে রাত ১০ থেকে। রাস্তায় থাকে প্রায় ৪০/৫০ জনের লাইনম্যান যারা রাতে মটরসাইকেল নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। বিভিন্ন রকমের গাড়ি নিয়ে সিলেট মুখে আসতে থাকে চোরাকারবারিরা। গ্রিন সিগন্যাল পেলে দ্রুত গতিতে মাল বুঝাই ট্রাকগুলো নগরীর কালি ঘাটে প্রবেশ করে আনলোড করা হয়।আবার ঐ ট্রাকগুলো মাল আনার জন্য হরিপুরে চলে যায়।
বটেশ্বর থেকে বন্দরবাজার পর্যন্ত রাস্তার মোড়ে মোড়ে দাড়িয়ে থাকে পুলিশের টহল দল। ট্রাক বা লাইনম্যান কাছে এসে নোটি ধরিয়ে দিলেই কাজ খতম পুলিশ গাড়িতে বসে থাকবে। তাদের সম্মুখ দিয়ে অনাসেই বিনা বাধায় ট্রাকগুলো নগরীতে প্রবেশ করতে থাকে। সম্প্রতি সময়ে এসব অবৈধ চোরাচালাসের গাড়ি ছাত্রলীগের কতিপয় নেতাকর্মীর পাহারায় নগরীতে প্রবেশ করতে দেখা যায়। এছাড়া বেশীর ভাগ গাড়ির সামনে পিছনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দেখা যায়।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে গাড়ির ড্রাইভারগণ বলেন, ছাত্রলীগের পাহারায় বিনা বাধায় সিলেট নগরীতে প্রবেশ করতে পারি। প্রতিরাতে দুটি করে ট্রিপ দিতে পারি। মাঝে-মাঝে রাস্তায় টহলরত পুলিশ এসব ভোঙ্গার গাড়ির গতিরোধ করতে হাতে থাকা লাইট দিয়ে ইসারা করলেও গাড়ি গুলো কথনো থামে আবার চলে যায়। পরে প্রাইভেটকার বা মোটর সাইকেলে এসে পুলিশ সদস্যদের সাথে হাত মিলিয়ে চলে যান । দৃশ্যটি নিত্যদিনের।
সরজমিনে দেখা গেছে- বটেশ্বর, শাহপরাণ গেইট ও মেজরটিলা ডিউটিতে থাকা শাহপরাণ থানা পুলিশের ডিউটিরতটিম এসব ভোঙ্গার গাড়ির গতিরোধ করে চালকে জিজ্ঞেস করেন কার মাল!মাল মালিকের নাম বলেই গাড়িগুলো তাদের নিজস্ব গতীতে চলে যায়,খাতায় নোট করতে তাকেন কার কত গাড়ি মাল যাচ্ছে। এসব ভোঙ্গার মাল ১৫/২০ জন চোরাকারবারি নিয়ে আসেন বিধায় পুলিশ তাদের সুবিধার স্বার্থে তা খাতায় নোট করে রাখেন। মাল যাওয়া শেষ হলে মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকারযোগে একে একে আসতে শুরু করেন চোরাকারবারি- আবুল, সোহেল রানা, কয়েছ, সালমান, আব্দুর রশিদ চেয়ারম্যান এর ছেলে মইনুল, দেলোয়ার, মারুফ, বিলাল, মামুন, মনির, ফেরিঘাটের তাজুল, আকবর, শ্যামপুরের আলামিন ও নাহিদ। তারা ডিউটিতে থাকা পুলিশকে বুঝিয়ে দেন গাড়ি বাবত টাকার হিসাব। তবে প্রত্যেক গাড়ি বাবত ৫শ’ টাকা করে টহলরত পুলিশকে দেন। তারা যাহার সব তথ্য প্রমাণ প্রতিবেদকের নিকট সংগ্রহকৃত। এছাড়া শাহপরাণ পুলিশ ফাঁড়ির আইসি মনিরুজ্জামান ও থানার ওসি আবুল খায়েরের চোরাচালানের টাকা কালেকশন করেন শাহপরাণ পুলিশ ফাঁড়ির গাড়ি চালক কনস্টেবল বোরহান। শাহপরাণ পুলিশ ফাঁড়ির গাড়ি চালক কনস্টেবল বোরহানের মাধ্যমে চোরাকারবারিদের নিকট হইতে ফাঁড়ির আইসি ও থানার ওসি প্রতিসপ্তাহে ১৫ হাজার করে কালেকশন করেন এবং সুরমাগেইট বাইপাসের নামধারী কিছু ছাত্রলীগ নেতাকে দৈনিক প্রতি গাড়ি প্রতি ৩ হাজার করে দেন একাধিক চোরাকারবারি প্রতিবেদকে নিশ্চিত করেছেন। যাহার কল রেকর্ড প্রতিবেদকের নিকট সংগ্রহকৃত। এদিকে বাদ নেই স্থানীয় কয়েকজন কথিত সাংবাদিকও তারা প্রতি রাতে বখরা পান বলে জানান চোরাকারবারিরা।
অনুসন্ধানে ওঠে আসে, বিগত ৩১ জানুয়ারি ২০২৩ইং তারিখ ভোর রাত অনুমাণ ৩:৫৩ মিনিটের সময় বটেশ্বরে ডিউটিতে শাহপরাণ পুলিশ ফাঁড়ির গাড়ি চালক কনস্টেবল বোরহানসহ পুলিশের একটি টিম ভারতীয় চিনি বুঝাই একটি ডিআই গাড়ি আটক করেন সিনেমাহল গেইটে। কিন্ত পরে ১০ হাজার টাকার রফাদফায় গাড়ি ছেড়ে দেন তারা। যাহার ভিডিও প্রতিবেদকের নিকট সংগ্রহকৃত। বিগত ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ইং তারিখ রাত অনুমাণ ৯:৪০ মিনিটের সময় হাজিবিলা মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির সামনে শাহপরাণ পুলিশ ফাঁড়ির আইসি মনিরুজ্জামান ও গাড়ি চালক কনস্টেবল বোরহানসহ পুলিশের একটি টিম দুইটি ভারতীয় চিনি বুঝাই ডিআই ও দুইটি ভারতীয় গরু বুঝাই ডিআই আটক করলেও রফাদফার মাধ্যমে ভারতীয় চিনি বুঝাই দুইটি ডিআই ছেড়ে দেন এবং ভারতীয় গরু বুঝাই দুইটি ডিআই আটক করে থানায় নিয়ে যান। তবে অদৃশ্য কারণে ওই রাতে থানা থেকেও ভারতীয় গরু বুঝাই দুইটি ডিআই গাড়ি ছেড়ে দেন থানা পুলিশ। যাহার ভিডিও প্রতিবেদকের নিকট সংগ্রহকৃত।
এদিকে, গত ৩০ মে ২০২৩ইং তারিখ ভোর রাত অনুমাণ ৩:৫৮ মিনিটের সময় পিরের বাজার পাম্পের সামনে ভারতীয় চিনি বুঝাই একটি ডিআই গাড়ি চাকা নষ্ট হয়ে সেখানে থেমে গেলে স্থানীয় সচেতন মহল ফাঁড়ি এলাকা বিধায় প্রাথমিকভাবে বিষয়টি শাহপরাণ পুলিশ ফাঁড়ির আইসি মনিরুজ্জামানকে অবগত করলে তিনি জানান এসব গাড়ি যাতে আটক না করা হয় তা কমিশনার স্যারের নির্দেশ। পরে স্থানীয় জনগণ স্থানীয় সাংবাদিকদের বিষয়টি অবগত করলে তারা এসেও শাহপরাণ পুলিশ ফাঁড়ির আইসি মনিরুজ্জামানকে অবগত করলে তিনি সাংবাদিকদের কথারও কর্ণপাত করেন নি যাহার সকল তথ্য প্রমাণ প্রতিবেদকের নিকট সংগ্রহকৃত।
অন্যদিকে, গত ৬ জুন ২০২৩ইং তারিখ ভোর রাত অনুমাণ ০৫ ঘটিকার সময় পিরের বাজারে কয়েজন লেগুনা চালক কয়েকটি লেগুনা গাড়ি সড়কে এলোপাতারি করে রেখে প্রায় ৬টি ভারতীয় চিনি ও পান বুঝাই গাড়ির আটক করে প্রাথমিকভাবে বিষয়টি শাহপরাণ পুলিশ ফাঁড়ির আইসি মনিরুজ্জামানকে অবগত করলে তিনি ফোর্স পাঠাবো-পাঠাচ্ছি বলে তালবাহানা করতে থাকলে লেগুনা চালকরা স্থানীয় সাংবাদিকদের বিষয়টি অবগত করলে তারা ঘটনাস্থলে এসে শাহপরাণ পুলিশ ফাঁড়ির আইসি মনিরুজ্জামানকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি ফোর্স পাঠাবো-পাঠাচ্ছি বলে তাদের সঙ্গেও তালবাহানা করেন। সাংবাদিকরা জানতে পারেন জৈন্তাপুর উপজেলার ঘাটেরছটি নামক স্থানে সিলেটের দিকে বেপরোয়া গতীতে আসা ভারতীয় চিনি বুঝাই ডিআই গাড়ি একটি লেগুনা গাড়িকে রংভাবে চাপ দিয়ে তাকে নিয়ন্ত্রণ হারাতে বাধ্য করে পরে ওই লেগুনার চালক পিরের বাজার এসে এসব গাড়ি গুলোর গতিরোধ করেন এবং বাজারে গন্ডগোল সৃষ্টি হলেও অদৃশ্য কারণে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠান নি শাহপরাণ পুলিশ ফাঁড়ির আইসি মনিরুজ্জামান, যাহার সমূহ তথ্য প্রমাণ প্রতিবেদকের নিকট সংগ্রহকৃত।
 
 
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                                                             
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                 
                                 
                                 
                                