চেঙ্গেরখাল নদী থেকে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন, সরেজমিনে দেখতে গিয়ে হামলা ও লাঞ্ছনার শিকার হলেন সাংবাদিক আখতার হোসেন।
সিলেট সদর উপজেলার চেঙ্গেরখাল নদী থেকে অবৈধভাবে ছোট বড় ৮/১০ টি ড্রেজার মেশিন দিয়ে চলছে বালু উত্তোলনের মহোৎসব। প্রতি বছর কোটি কোটি টাকার সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয় থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হলেও এখন পর্যন্ত স্থানীয় প্রশাসনের নজরে পড়েনি। ফলে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে৷
এ ব্যাপারে সাংবাদিক মোঃ আক্তার হোসেন এর কাছ থেকে বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি বলেন,গত ১৫ অক্টোবর বিকালে আমার মোটোফোনে চেঙ্গেরখাল নদীর আশপাশ এলাকার কয়েকজন ফোনকরে জানান যে, জালালাবাদ থানাদ্বীন চেঙ্গেরখাল নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে এতে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উক্ত এলাকার সচেতন মহল, দয়া করে আপনি একটা সংবাদ প্রচার করেন যেনো আইনের নজরে আসে বিষটি।
তখন আমি বলি আগামী ১৮ অক্টোবর বিকালে সরেজমিনে অনুসন্ধান করে সংবাদ প্রচার করতে হবে, এছাড়া সংবাদ প্রচার করা যাবে না।
তাই ১৮ অক্টোবর পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে আমি সরেজমিনে সিলেট জালালাবাদ থানাদ্বীন কালারুকা এলাকার চেঙ্গেরখাল নদী হয়ে ধুমখাল ও বাছাই গাং নদী পর্যন্ত ঘুরে দেখি যে আসেলেই আশপাশের অনেক এলাকার কৃষক এর আবাদি জমি নদীগর্ভে বীলিন হয়ে গেছে এবং তখনো ড্রেজার মেশিন এর মাধ্যমে নদী থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
এটা দেখে আমি সেই ড্রেজার মেশিন নৌকার কাছে যাই এবং সেখানে থাকা শ্রমিকদের কাছ থেকে জানতে চাই আপনারা যে বালু উত্তোলন করতেছেন এটা কি বৈধ, ইজারা নেওয়া হয়েছে কি না? তারা সবাই বলেন আমরা কিছুই জানি না।
সংবাদ সংগ্রহ শেষ করে ফিরার পথে শীবেরবাজার এর পাশাপাশি আশা মাত্রই দেখি উক্ত এলাকার জমির উরফে লেংরা জমির, সাবউদ্দিন, আমিনুল হক সহ আরো কয়েকজন। একটা সি,এন,জি গাড়ি নিয়ে আমার ও আমার সঙ্গীয় আবাদুর রহমান, এমার খাঁন, ছাদিক মিয়া, সহ আরো কয়েকজনের উপরে হামলা করে৷ এবং পুরান কালারুকা এলাকার নজির মিয়া নামের এক ব্যাক্তি আমার হাতে থাকা মোবাইল ফোন কেরে নিয়ে সংগ্রহীত সকল তথ্য মুছে ফেলে, কিন্তু আমার ক্যামেরায় থাকা তথ্যগুলি মুছতে পারেনাই ৷
এ সময় আমি জাতীয় ইমার্জেন্সি কল সেন্টার ৯৯৯ এ ফোন করলে জালালাবাদ থানাদ্বীন শিবগঞ্জ ফাঁড়ি থেকে আইনশৃংখলা রক্ষাবাহিনির সদস্যগন উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন৷
এবং হামলাকৃত ২ আহত ব্যাক্তিদের চিকিৎসার জন্য সিলেট সরকারি এম, এ, জি ওসমানী মেডিকেলে প্রেরন করা হয়৷
আপনি চেঙ্গেরখাল নদী থেকে সরেজমিনে আর কি কি দেখলেন এমন প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিক আক্তার হোসেন আরো বলেন,জালালাবাদ থানা থেকে ৬/৭ কিলোমিটার দূরে কালারুকা এলাকার আশপাশ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে সরকারের কোটি টাকার রাজস্ব হরিলুট হলেও যেন দেখার কেউ নেই।
১ নং জালালাবাদ ইউনিয়নের কালারুকা এলাকার চেঙ্গেরখাল, ধুমখাল ও বাছাই গাঙ্গ নদীর মুখ পর্যন্ত ঘুরে এ ধ্বংসযজ্ঞ দেখা যায়।
আমি নিজে খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি , উক্ত জায়গাটি কোনো সময়ই ইজারা দেয়নি কর্তৃপক্ষ। সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে নিজের স্বার্থ হাসিল করতে সিলেটের জেলা প্রশাসকের নাম ভাঙ্গিয়ে অবৈধভাবে কোটি টাকার বালু উত্তোলন করে বাণিজ্য করছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল।
আমি স্থানীয়দের কাছ থেকে আরো কিছু জানতে চাইলে তারা জানান, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্থানীয় একটি সংঘবদ্ধ প্রভাবশালী চক্র। বালু তুলতে বাধা দিলে এলাকাবাসীকে এই মহল প্রাণে মারা, হাত পা ভেঙে দেয়ার হুমকী দেয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন দিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করলেও স্থানীয় প্রশাসন ওই ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বালু উত্তোলনের ফলে ওই এলাকার আশপাশের অনেক কৃষকের আবাদি জমি ভেঙে গেছে। গত দুই বছরে কালারুকা গ্রামের অনেক কৃষকের
আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। বর্তমানে আরো প্রায় ৮০ শতাংশ আবাদি জমি ভাঙনের মুখে রয়েছে। আরো বলেন, ‘কত লেখালেখিও হয় কিন্তু বালু তুলা বন্ধ হয় না।
এ ব্যাপারে সিলেট নৌ পুলিশ সুপার এর কার্যালয়, এবং জালালাবাদ থানায় হামলায় শিকার পুরান কালারুকা গ্রামের আব্দুর রহমান বাদী হয়ে অভিযোগ করা হয়েছে৷
আমি নিজেও সিলেট পুলিশ সুপার, নৌ-পুলিশ সুপার সিলেট ও জালালাবাদ থানায় অভিযোগ করবো।
এ বিষয়ে আপনি কি চান,
এই প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিক আক্তার হোসেন বলেন!
আমি আমার প্রানপিয় কলম যোদ্ধা সাংবাদিক মহল সহ ও সবার কাছে সহযোগিতা চাই, এমন অন্যায় এর কাছে কখনো মাথা নত করা যায় না, তারা অবৈধ কাজ করতেছে তার উপরে তারা সাংবাদিকের উপরে হামলা করেছে৷ আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই৷
এ ব্যাপারে সিলেট জেলা প্রশাসককে অবগত করার জন্য ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি৷
সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুঠো ফোনো জানানো হলে তিনি বলেন,চেঙ্গেরখাল নদীথেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হয় এমন অভিযোগ এর আগেও আমরা পেয়েছি, এবং আমরা তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি, এইতঁ কিছুদিন আগেও আমাদের এসিলেন্ট বিলাল আহমদ এর নেতৃত্বে ঐ এলাকায় ২ লক্ষটাকা জরিমানা করেছি৷
আর সাংবাদিক উপরে হামলা হয়েছে এর জন্য আমি দুঃখপ্রকাশ করছি, আমরা আবারো এদের বিরুদ্ধে বড়ভাবে ব্যাবস্থা নিবো ইনশাআল্লাহ৷এলাকাবাসী সহ সবার সহযোগিতা কামনা করছি তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করবেন৷
উক্ত বিষয়ে জালালাবাদ থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন কালারুকা এলাকায় চেঙ্গেরখাল নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়ে গত ২২ অক্টোবর অভিযোগ করা হয়েছে।
জাতীয় দৈনিক স্বাধীন দেশ ও অপরাধ অনুসন্ধানীমূলক জাতীয় দৈনিক প্রাইভেট ডিটেকটিভ পত্রিকার ক্রাইম রিপোর্টার এবং সিলেট বিভাগীয় প্রেসক্লাবে এর দপ্তর সম্পাদক-সহ মোঃ আক্তার হোসেন পেশাগত দায়িত্ব পালন করে আসছেন।