ঢাকাশুক্রবার , ১ ডিসেম্বর ২০২৩
আজকের সর্বশেষ সবখবর

তেঁতুলের ঔষধি গুণ

rising sylhet
rising sylhet
ডিসেম্বর ১, ২০২৩ ১০:০২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

তেঁতুল। ইংরেজি নাম : ঞধসধৎরহফ. বৈজ্ঞানিক নাম: ঞধসধৎরহফঁং রহরফপধ. তেঁতুলে প্রচুর পরিমাণে শর্করা, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস লৌহ ও ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে। তেঁতুল একটি জনপ্রিয় ভেষজ ফল। তেঁতুল আমাদের দেশের বসন্তকালের টকজাতীয় ফল হলেও সারা বছর পাওয়া যায়। অনেকেরই ধারনা তেঁতুল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এবং তেঁতুল খেলে রক্ত পানি হয়। এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল, বরং তেঁতুলে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি ও ভেষজগুণ। তেঁতুল দেহে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হৃদরোগীদের জন্য খুবই উপকারী। তেঁতুল দিয়ে কবিরাজি, ইউনানী, হোমিও ও এলোপ্যাথি ঔষুধ তৈরি করা হয়। তেঁতুলকে হার্টের টনিক বলা হয়।

আসুন তেঁতুলের উপকারিতা জেনে নেই-তৃষ্ণা নিবারণে : পানিতে ভেজানো তেঁতুলের পাতলা রস চিনি মিশিয়ে খেলে তৃষ্ণা নিবারণ হয় ও খিদে বাড়ে। কোষ্ঠবদ্ধতা, জ্বর, শরীর জ্বালা করা প্রভৃতি রোগে পানিতে ভেজানো তেঁতুলের শরবত খেলে রোগ সেরে যায়। তেঁতুল বীজের শাঁস পুরনো পেটের অসুখে উপকারী। তেঁতুলের পাতার ক্বাথ কৃমি নাশ করে, চোখ ওঠা সারিয়ে দেয়। চোখ ওঠায় তেঁতুল পাতার ক্বাথ দিয়ে চোখ ধুলে উপকার পাওয়া যায়। পাকা তেঁতুলের শাঁস খেলে স্কার্ভি রোগ ও চর্মরোগ সেরে যায়। জ্বর, পিপাসা, সর্দি-গর্মি, পিত্তের জন্যে যে বর্মি হয় সেই সব রোগে পাকা তেঁতুলের শাঁস উপকারী। মুখের ঘায়ে বা গর্ত হলে পাকা তেঁতুল পানিতে মিশিয়ে কুলকুচি করলে উপকার পাওয়া যায়।

হাকিমি বা ইউনানী মতে : তেঁতুল সহজে হজম হয়, হার্ট ও পাকস্থলী সবল করে, পিত্ত ও বিকৃত ধাতু মলের সাথে নিষ্কাশিত করে। মৃদু জোলাপের কাজ করে অর্থাৎ মৃদু বিরোচক। পাকা তেঁতুল বমি ভাব, পিত্তের জন্যে যে বমি হয় সেই বমি ভাব সারিয়ে তোলে। তৃষ্ণা, পিত্ত বেড়ে যাওয়ার জন্যে যে জ্বর হয় তাতে তেঁতুল খেলে উপকার হয়। শরীর জ্বালা করা, মূর্চ্ছা, সব রকমের চুলকানি উপশম করে। বুক ধড়ফর করা, মাথা ঘোরা, রক্তের প্রকোপ এসব অসুখে তেঁতুল খুবই আরাম দেয়। শরীরের বিষাক্ত বায়ু ও ম্যালেরিয়ার জন্যে শরীরে যে দূষিত বায়ু সৃষ্টি হয় তা শোধন করে। ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করার জন্য সব সময়ই তেঁতুল পানিতে ভিজিয়ে পরিষ্কার পানি ছেঁকে নিয়ে পান করতে হয়।

কাঁচা তেঁতুল শুরু ও বায়ুনাশক। পিত্ত ও কফ সৃষ্টি করে। অনেকের মতে তেঁতুল খেলে রক্তের দোষ সেরে যায়।

ব্যথায় কাঁচা তেঁতুল : পান্তা ভাতের পানিতে তিলের তেল মিশিয়ে কাঁচা তেঁতুল বেটে নিতে হবে। গরম করে আঘাত পাওয়া স্থানে প্রলেপ দিলে ব্যথা সারে। কাঁচা তেঁতুল পুড়িয়ে সেই শাঁস ও লবণ বা সোডা মিশিয়ে হাড়ের ব্যথা, বাতের ব্যথায় শরীরের ফোলা অংশে প্রলেপ দিলে আরাম পাওয়া যায়।

তেঁতুল গাছের ছালের গুণ : তেঁতুল গাছের ছাল পুড়িয়ে ঠান্ডা পানিতে মিশিয়ে খেলে অম্লপিত্ত সারে এবং অম্লপিত্তের জন্য যে ব্যথা হয় তাও কমে। তেঁতুল গাছের শুকনো ছালের প্রলেপ ক্ষতস্থানে লাগালে ঘা শুকিয়ে যায়। তেঁতুল ফুলের ঔষধি ব্যবহার : তেঁতুল ফুলের রস ফোলা কমায়, শরীর স্নিগ্ধ করে এবং অর্শে উপকার দেয়।

পুরনো তেঁতুল : পুরনো তেঁতুলের গুণ কাঁচা তেঁতুলের চেয়ে অনেক গুণ বেশি। শরীর সুস্থ রাখতে পুরনো তেঁতুল : পুরনো তেঁতুল ও মিশ্রি ভেজানো পানি খেলে আমাশা, কোষ্ঠকাঠিন্যতা ও পেট গরমে উপকার পাওয়া যায়। একবারে দুই চা চামচ পানি খেলেই চলবে। হুপিং কাশিতে পুরনো তেঁতুল ২ চা চামচ, ৪ চা চামচ আখের গুড়ের সাথে মিশিয়ে ১০০ গ্রাম পানিতে গুলে প্রতিদিন ২ চা চামচ করে খেলে উপকার পাওয়া যায়। টিবি ছাড়া অন্য যেকোনো ধরনের কাশিতে পুরনো তেঁতুলের ক্বাথ রোদ্দুরে গরম করে চুষে খেলে উপকার পাওয়া যায়। * শ্বেত চন্দন বাটার সাথে পুরনো তেঁতুল বাটা গায়ে লাগালে চুলকানি সারে। জ্বরের উপকারে

তেঁতুল : জ্বর, শরীর জ্বালা করা, বমি ও তৃষ্ণায় অল্প পরিমাণে পুরনো তেঁতুল পানিতে গুলে মিশ্রি ও পাতিলেবুর রস মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়। শরীর সুস্থ রাখতে তেঁতুলের বিচি : তেঁতুলের বীজ শরীরের ফোলা কমায়। তেঁতুলের বীজ বেটে ঘিয়ে মিশিয়ে প্রলেপ দিলে ফোলা ও মচকানির ব্যথা কমে। তেঁতুল বিচির হালুয়া বা অবলেহ : তেঁতুলের বীজ ভিজিয়ে ছাল তুলে ফেলে বেটে ঘিয়ে বেজে দুধে সিদ্ধ করে চিনি ছোট এলাচ, দারচিনি ও তেজপাতার গুঁড়ো দিয়ে হালুয়া তৈরি করে প্রতিদিন নিয়মিত চেটে চেটে খেলে শরীরের বল ও শুক্র বৃদ্ধি হয়। তেঁতুল বীজের খোসা কুটে নিয়ে গুড় মিশিয়ে ছোলার আকারে বড়ি তৈরি করে প্রত্যহ একটা করে বড়ি পরপর তিন বা চারদিন খেলে অর্শ থেকে রক্তপড়া বন্ধ হয়। শরীর সুস্থ রাখতে তেঁতুল পাতা : * কচি তেঁতুলের পাতা সিদ্ধ করে সেই পানি খেলে পেটের অসুখ সারে। কচি তেঁতুল পাতা বেটে পানিতে মিশিয়ে খেলে আমাশা, পিত্তের জন্য যে জ্বর হয় সেই জ্বর ও প্রমেহ (যৌনব্যাধি) সারে।

তেঁতুল পাতা বাটার প্রলেপ লাগালে ফুলা কমে, জ্বালাও কমে। তেঁতুল পাতা ও গোলমরিচ বাটার প্রলেপ লাগালে মাকড়সার বিষের জন্য যে ঘা হয় তাতে বিশেষ উপকার পাওয়া যায়। তেঁতুল পাতার পুঁটলি বেঁধে চোখে বুলিয়ে দিতে থাকলে চোখ ওঠায় আরাম পাওয়া যায়।

তেঁতুলের আরও গুণ : একটু তেঁতুলের পাতা ভাতের ফ্যানের সাথে বেটে খেলে পুরনো পেটের অসুখ ও আমাশা সেরে যায়। পুরনো পেটের অসুখে তেঁতুল পাতার রস চিনি মিশিয়ে খেলেও উপকার পাওয়া যায়। তেতুলের বীজের চুর্ণ ও হলুদ গুঁড়ো ঠান্ডা পানিতে মিশিয়ে পান করলে বসন্ত রোগ হয় না অর্থাৎ এটা হাম-বসন্ত ও পানি বসন্তের প্রতিষেধক।

তেঁতুলের শাঁস পানিতে গুলে ছেঁকে লবণ মিশিয়ে পান করলে মলের বেগ আসে অর্থাৎ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।প্রতি ১০০ গ্রাম তেঁতুলে আছে : জলীয় অংশ ৮৩.৬, ক্যালসিয়াম ২৪ মি:, মোট খনিজ ১.২, লৌহ ০, আঁশ ০, ক্যারোটিন (মাইক্রোগ্রাম) ০, খাদ্যশক্তি (কিলোক্যালরি) ৬২, ভিটামিন বি-১ ০.০১, আমিষ ১.১, ভিটামিন ০.০২ মি:, চর্বি ০.২, ভিটামিন সি ৬, শর্করা ১৩.৯। এছাড়াও তেঁতুল গাছের ছাল, ফুল, পাতা, বিচি ও ফল সবই ওষুধ বিসেবে ব্যবহৃত হয়। তেঁতুল বীজের শাঁস পুরনো পেটের অসুখে উপকারী। তেঁতুল পাতার রস কৃমিনাশক ও চোখ ওঠা সারায়। মুখে ঘা বা ক্ষত হলে পাতা তেঁতুল জলে কুলকুচি করলে উপকার পাওয়া যায়। তাই আমলকী কদবেল আতা কিংবা জামরুলে-পুষ্টি আছে কদবেল তাল তৈকর তেঁতুলে।

৩৯৪ বার পড়া হয়েছে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।