
কন্টাক্ট কিলার গ্রুপের সদস্য এমপি সুমনকে যা বলে ।
রবিবার (৩০ জুন) সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হবিগঞ্জ-৪ আসনের এমপি ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেছেন, ‘গত শুক্রবার আমি বাড়িতে যাওয়ার পর চুনারুঘাট থানার ওসি আমার সঙ্গে দেখা করে বলেন- একজন অজ্ঞাত ব্যক্তি আমার সঙ্গে কথা বলতে চায়। পরে ওসি নিজের ফোন দিয়ে ওই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলান। ওই ব্যক্তি আমাকে জানায়- সে একটি কন্টাক্ট কিলার গ্রুপের সদস্য। ওই কিলার গ্রুপে মেসেজ আসে- আমাকে হত্যা করতে হবে। কিন্তু অজ্ঞাত ওই ব্যক্তি আমাকে চিনে এবং আমার কাজকর্ম সম্পর্কে অবগত আছে তাই সে তার গ্রুপকে জানায়- সে এ কাজ করবে না। এছাড়া ওই অজ্ঞাত ব্যক্তি আমাকে জানায়- আমি যেন দু-তিন দিন ঘর থেকে বের না হই। ওই ব্যক্তি তার পরিচয় আমার কাছে গোপন করেছে। তবে সে তার বাড়ি সিলেটে বলেছে। তার বক্তব্য হচ্ছে- সে আমাকে সতর্ক করার জন্যই ওসির মাধ্যমে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে চেয়েছে।’
ব্যারিস্টার সুমন আরও বলেন, ‘আমার জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে জিডি করেছি। এখন দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। মৃত্যুর ভয় আমি করি না। কিন্তু আমার এলাকার মানুষকে নিয়ে চিন্তা করি। আমি মরে গেলে এলাকার মানুষের কী হবে?’
তিনি এসময় বলেন- ‘আমি থানায় জিডি করার আগেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচিত ছিল যারা হুমকি দিয়েছে তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা। কারণ তাদের থেকে আমি হুমকির তথ্য পেয়েছি। রাষ্ট্রযন্ত্র আমাকে বাঁচিয়ে রাখতে চায় কি না, সেই প্রশ্ন এখন দেখা দিয়েছে।’
এর আগে শনিবার (২৯ জুন) রাতে ‘অজ্ঞাতনামা একটি শক্তিশালী মহল হত্যার জন্য টিম নিয়ে মাঠে নেমেছে’ জেনে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় করা সাধারণ ডায়েরিতে ব্যারিস্টার সুমন উল্লেখ করেছেন, গত ২৭ জুন ঢাকায় অবস্থানকালে রাত আনুমানিক ২টার সময় আমার নির্বাচনী এলাকার চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তার সরকারির মোবাইল ফোন থেকে আমার হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করে জানান যে, ‘আপনাকে হত্যার জন্য অজ্ঞাতনামা একটি শক্তিশালী মহল গত তিন দিন আগে ৪-৫ জনের একটি টিম নিয়ে মাঠে নেমেছে। আপনি রাতে বাইরে বের হবেন না এবং সাবধানে থাকবেন।’
তখন আমি ওসির কাছে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের পরিচয় জানতে চাইলে তিনি ওই ব্যক্তির পরিচয় জানাতে অস্বীকার করেন এবং আমাকে সাবধানে থাকার পরামর্শ দেন। এই বিষয়টি জানার পরে আমি মারাত্মকভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে হবিগঞ্জ-৪ (মাধবপুর-চুনারুঘাট) আসন থেকে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন। তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একজন প্রসিকিউটর ছিলেন, এই পদ থেকে তিনি ২০১২ সালের ১৩ নভেম্বর পদত্যাগ করেন। ভার্চুয়াল প্লাটফর্ম ফেসবুকে মাধ্যমে নানা অসঙ্গতি তুলে ধরার পাশাপাশি মানবিক কাজ করে জনপ্রিয়তা পান ব্যারিস্টার সুমন।
হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. আক্তার হোসেন জানান, সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে হত্যার পরিকল্পনার বিষয়টি নিয়ে গুরুত্বসহকারে মাঠে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর টিম। শিগগিরই পুরো বিষয়টি সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরা হবে।