আর কোনো ফ্যাসিস্টকে বাংলার ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হবে না বলেছেন,বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম । কোনো স্বৈরাচার লুটেরাদের জনগণ মেনে নেবে না। সকল ভোটচোর ও গণহত্যাকারীর বিচার করা হবে। দেশকে নিয়ে এখনও গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। তবে শিবির থাকাকালে কোনো ষড়যন্ত্রই বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবেনা। বরং সকল ষড়যন্ত্রকারীর শেকড় উপড়ে ফেলা হবে।
প্রধান অতিথি নুরুল ইসলাম সাদ্দাম সমাবেশে উপস্থিত ছাত্রশিবিরের সাথীদের উদ্দেশ্যে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করেন এবং ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও দায়িত্ব সম্পর্কে গুরুত্বারোপ করে আরও বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর আওয়ামী সরকার জামায়াত ও শিবিরের উপর স্টিম রোলার চালিয়েছে। দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের রক্তে ক্যাম্পাসের ঘাস ভিজেছে। আর এ কারণে আল্লাহ তাআলা শহীদের নজরানা স্বরুপ ২৪ এর বিজয় দান করেছেন।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) রাতে নীলফামারীর সৈয়দপুরে সংগঠনের সাথী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। শহরের রেলওয়ে মূর্তজা মিলনায়তনে আয়োজিত এ সমাবেশে ২০২৫ সালের জন্য নীলফামারী শহর শাখার সেট আপ সম্পন্ন করা হয়েছে। এতে পুনরায় সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মো. শফিকুল ইসলাম এবং সেক্রেটারি হয়েছেন মো. মাজেদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সকল দেশপ্রেমিক ছাত্র-জনতার ব্যাপক অবদান রয়েছে। ঐক্যবদ্ধ জাতি গঠন করে দেশকে প্রকৃত অর্থে সমৃদ্ধশালী ও কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করা হবে। এজন্যই আর কোন ফ্যাসিস্ট, স্বৈরাচার লুটেরা ও হত্যাকারীদের দেশের দায়িত্বভার দেয়া যাবেনা। এ লক্ষ্যে ঐক্যের বন্ধন আরও দৃঢ় করে চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জনে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে। আর এক্ষেত্রে পূর্বের মতই নেতৃত্ব দিতে হবে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সকল জনশক্তিকে। আর তাই সে ধরনের যোগ্যতাসম্পন্ন করে গড়ে উঠতে হবে আমাদের।
শিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি সাদ্দাম আরও বলেন, ফ্যাসিস্টরা দেশকে ধ্বংস করে নিজেদের আখের গোছায়। যা আমরা বিগত শাসনামলে প্রত্যক্ষ করেছি। দেশ আজ চরম ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। এ সময় অবশ্যই আমাদেরকে দেশের স্বার্থে সচেতনতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। যাতে করে কোনভাবেই দেশবিরোধী শক্তি নতুন করে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করাসহ দেশকে অস্থিতিশীল করার কোনো সুযোগ না পায়। সেই সঙ্গে দেশকে এগিয়ে নিতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সরকারকে সহযোগিতা করার পাশাপাশি ভূমিকা রাখতে হবে। তাই যে কোনো পরিস্থিতির জন্য ছাত্রশিবিরকে প্রস্তুত থাকতে হবে। কারণ ছাত্রশিবিরের ওপরই দেশের মানুষ আস্থা রাখছে। এ আস্থার সম্মান বজায় রাখতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নীলফামারী জেলা আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সাত্তার, জেলা নায়েবে আমির ড. হাফেজ খায়রুল আনাম, জেলা সেক্রেটারি আন্তাজুল ইসলাম, সৈয়দপুর উপজেলা আমির আব্দুল মুনতাকিম, সদর উপজেলা আমির মাওলানা আবু হানিফা শাহ। সাবেক জেলা সভাপতিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হাফিজুল ইসলাম, আব্দুল কাদের, তৌহিদুর রহমান, আহমদ রায়হান, রঞ্জু ইসলাম, ময়নুল ইসলাম, সাব্বির হোসেন ও নীলফামারী জেলা সভাপতি তাজমুল হাসান সাগর সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
ছাত্রশিবির নীলফামারী শহর সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে শাখা সেক্রেটারি মো. মাজেদুল ইসলামের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রংপুর অঞ্চল তত্ত্বাবধায়ক, কেন্দ্রীয় বিতর্ক সম্পাদক হাফেজ মিসবাহুল করিম, বিজ্ঞান সম্পাদক ডা. আবির হাসান, পরিবেশ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক ডা. মুক্তাদির বিল্লাহ।
সাথী সমাবেশে কেন্দ্রীয় সভাপতি স্বাক্ষরিত ব্যালট পেপারে সাথীদের প্রত্যক্ষ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ভোট গণনা শেষে কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল মো. নুরুল ইসলাম সর্বাধিক ভোটপ্রাপ্ত শফিকুল ইসলামের নাম সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করেন এবং পরে নবনির্বাচিত সভাপতিকে শপথবাক্য পাঠ করান। সদস্যদের পরামর্শের ভিত্তিতে নবনির্বাচিত সভাপতি শাখা সেক্রেটারি হিসেবে মাজেদুল ইসলামকে মনোনীত করেন।