হাসপাতালের আউটসোর্সিংএ জনবল নিয়োগের নামে কোটি টাকার নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে লাভলুর বিরুদ্ধে।
এসব নিয়োগ বানিজ্যের নেপথ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক কাউন্সিলর আব্দুর রকিব বাবলুর ছোট ভাই আব্দুল খালিক লাভলু।
অভিযোগ রয়েছে,বর্তমানে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসরদের যোগ সাজসে নতুন করে আউটসোর্সিং জনবলের জন্য দায়িত্ব পায় অখ্যাত কোম্পানী সৌদি সিকিউরিটি ক্লিনিং সার্ভিস লি.।
এর সাথে যুক্ত রয়েছে হাসপাতালে স্টাফদের একটি সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটকে কাজে লাগিয়ে এখন চলছে কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্য। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রায় ৯ জন আবেদনকারী ঘুষ বাণিজ্যের বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
প্রতিটি পদের বিপরীতে (পদভেদে) ৭০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত চাকুরী প্রার্থীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয়।
এই সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত রয়েছেন হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত ওয়ার্ড মাস্টার দেলোয়ার ও, হাসপাতালের বাবুচি নুর ইসলাম ও লম্বা শফিক,হাসপাতালের অফিস সহকারী কালাম ও জুমের আলী, কোম্পানীর সাবেক স্টাফ রুবেল ও সামছু। এই দুই জনের মধ্যে সামছু হলেন হাসপাতালের অফিস সহায়ক রূপসার স্বামী।
আর এদের মুল হোতা হলেন,আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক কাউন্সিলর আব্দুর রকিব বাবলুর ছোট ভাই আব্দুল খালিক লাভলু।
জানা গেছে, ২০২৪ সালের ১৭ অক্টোবর আবেদনের প্রেক্ষিতে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ২০২৪-২০২৫ ইং অর্থবছরের জন্য ২৬২ পদের বিপরীতে জনবল সরবরাহের অনুমতি পায় সৌদি সিকিউরিটি এন্ড ক্লিনিং সার্ভিস লি.।
দরপত্রের চুক্তি অনুযায়ী চলতি মাসের ১৫ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে যোগদান কার্যক্রম। ১০ ক্যাটাগরিতে ২৬২ আউটসোর্সিং জনবলের মধ্যে বাবুর্চি,সহকারী বাবুর্চী, নিরাপত্তা প্রহরী, ওয়ার্ড বয়, পরিচ্ছন্নতা কর্মী, আয়া, ওটি এটেনডেন্ট (আইসিইউ), ইমার্জেন্সি এটেনডেন্ট, ওটি এটেনডেন্ট ও ওপিটি এটেনডেন্ট পদ রয়েছে।
এর আগে সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে আউটসোর্সিং কাজে ২৬২ টি জনবলের জন্য টেন্ডার পায় দুই কোম্পানী। আল-আরাফাহ সিকিউরিটি ও গালফ সিকিউরিটি কোম্পানী।
এক বৎসর মেয়াদে ২০২২ সালে এই দুটি কোম্পানী জনবল নিয়োগ দিলেও পরবর্তীতে হাসপাতালের পরিচালকের নির্দেশে পুরনো স্টাফ হিসেবে নবায়ন ছাড়া তাদের জনবলকেই পরবর্তী নির্দেশ পর্যন্ত চূড়ান্ত হিসেবে গ্রহণ করা হয়।
জানা যায়, ২৬২ পদের বিপরীতে এই নিয়োগ বাণিজ্য করছে ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠান সৌদি সিকিউরিটি এন্ড ক্লিনিং সার্ভিস লিঃ।
দরপত্র অনুযায়ী প্রত্যেকটি পদে ৬ মাস মেয়াদ উল্লেখ করা হলেও ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠান ২ বছরের কথা উল্লেখ করে প্রত্যেক আবেদনকারীর কাছ থেকে পদ ভেদে ৭০ হাজার টাকা থেকে দেড় লাখ টাকা করে হাতিয়ে নিচ্ছে। দরপত্রে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন জনবল নিয়োগের বিষয়টিও সুস্পষ্ট লংঘন করে নতুন আবেদনকারী সংগ্রহ করে চলছে এই নিয়োগ বাণিজ্য।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিক আহমদের ব্যক্তিগত সেল ফোনে কল দেওয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় মন্তব্য আদায় করা সম্ভব হয় নি।
অভিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত ওয়ার্ড মাস্টর দেলোয়ার সিভি প্রতি টাকা গ্রহণের বিষয়টি স্বীকার করেন, তবে তিনি বলেন, দেড় লাখ নয়, ১ লাখ টাকা করে নেয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্টাফের সাথে আলাপকালে তারা বলেন, কোম্পানীর সাবেক স্টাফ রুবেল ও সামছু নতুন স্টাফদের কাছ থেকে ১ লাখ ও পুরাতন স্টাফদের কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা করে নিচ্ছেন।
যারা টাকা দিচ্ছেন তাদের সিভি নিয়ে ওয়ার্ড মাস্টার দেলোয়ারের কাছে জমা দিচ্ছেন। দেলোয়ারের টেবিলে এ সকল সিভি রয়েছে।