ইন্টার্নশিপ ভাতা বৃদ্ধি ও বৈষম্য দূরীকরণের ৫ দফা দাবিতে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করেছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীরা । মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সকালে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, পাঁচ বছরের ডিগ্রির মধ্যে এক বছরের ইন্টার্নশিপ করতে হয়, ইন্টার্নশিপ চলাকালীন সময়ে মাসিক মাত্র ৯ হাজার টাকা ভাতা দেয়া হয় যা দিয়ে যাতায়াত, আবাসন ও অন্যান্য খরচ চালানো সম্ভব নয়। যেখানে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা করে ভাতা দিয়ে থাকে। সমসাময়িক অনেক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি শিক্ষার্থীদের তুলনায় আমাদের শিক্ষার্থীরা অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
ভেটেরিনারি চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহমুদুর রহমান বলেন, আমাদের ইন্টার্নশিপ ভাতা বৃদ্ধির দাবি দীর্ঘদিনের। সর্বশেষ গত ৯ জানুয়ারি আমরা উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করি এবং যথাযথ ব্যাবস্থা নেয়ার দাবি জানাই। কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও উনারা কোন ব্যাবস্থা নিতে পারেননি। আগেও প্রশাসন আমাদেরকে শুধু আশ্বাস দিয়ে গিয়েছেন কিন্তু কোন ব্যাবস্থা গ্রহন করতে আমরা দেখিনি। ফলে আমরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছি। আজ আমরা ক্লাস-পরিক্ষা বর্জন করেছি। আমাদের দাবি আদায় না হলে আমরা আরো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।
শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে ইন্টার্নশিপ ভাতা ৯,০০০ টাকা থেকে ২০,০০০ টাকায় উন্নীত করা, ইন্টার্নশিপ সময়কালে প্রতি কার্যদিবসের যাতায়াত ও অন্যান্য খরচ বাবদ দৈনিক নূন্যতম ৩০০ টাকা ভাতা প্রদান, কমপক্ষে চার মাসের ইন্টার্নশিপের জন্য সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ প্রদান, ঢাকায় অবস্থানের সময় দুই মাসের মধ্যে সীমিত রাখা, বর্তমান পরিস্থিতির কারনে এক্সটার্নশিপের জন্য ভারতের বিকল্প হিসেবে অন্যান্য দেশে সুযোগ সৃষ্টি, ইন্টার্নশিপের সম্মানি প্রতিমাসে নিয়মিত পরিশোধ।
এ বিষয়ে ভেটেরিনারি, এনিম্যাল ও বায়োমেডিক্যাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. ছিদ্দিকুল ইসলাম জানান, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে। এ মাসের ২৮ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাথে আমাদের বৈঠকের কথা রয়েছে। সেখানে শিক্ষার্থীদের দাবি তুলে ধরা হবে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আলিমুল ইসলাম বলেন, ইন্টার্নশিপ ভাতা বৃদ্ধির ব্যাপারে ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীরা একটি স্মারকলিপি দিয়েছিলো। এটি নিয়ে আমরা রাতেও কথা বলেছি এবং বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি। ভাতার পরিমাণ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) নির্ধারণ করে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বাড়তি টাকা কিভাবে দেওয়া হয় সেই বিষয়ে ইউজিসির সাথে যোগাযোগ করা হবে। আমরাও চেষ্টা করবো যাতে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের জন্যেও একইভাবে বরাদ্দ দেয়া হয়।