
চিকিৎসার জন্য বর্তমানে যুক্তরাজ্যে থাকলেও সব সময় জনগণের পাশে আছি বলেছেন,বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ।
তিনি দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি বিশ্বাস করি, আপনারা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে আরো উজ্জীবিত হয়ে আগামী নির্বাচনে সাফল্যের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন। আমাদের এতদিনকার সংগ্রাম, আত্মত্যাগ যাতে বিফলে না যায়, সে বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ঐতিহাসিক উক্তি— ‘ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়’— তা আমাদের সব সময় মনে রাখা উচিত।
তিনি উল্লেখ করেছেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও সিনিয়র নেতৃবৃন্দ দলের সুসংহতিকে ধরে রেখে, সকল নেতাকর্মীর সঙ্গে সমন্বয় করে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছেন।
খালেদা জিয়া বলেন, এখন সময় প্রতিহিংসা বা প্রতিশোধের নয়, বরং পারস্পরিক ভালোবাসা ও ভ্রাতৃত্বের মাধ্যমে আমরা আমাদের প্রিয় বাংলাদেশকে একটি বাসযোগ্য, উন্নত ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করি।
আজ বিএনপির বর্ধিত সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে নিহত সকল শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত এই সভায় তিনি আরো বলেন, দীর্ঘ ৬ বছর পর আবারও ফ্যাসিস্ট মুক্ত বাংলাদেশে একত্রিত হতে পেরেছি, এজন্য আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া আদায় করছি। তিনি জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, যারা শহীদ হয়েছেন এবং যারা আহত হয়েছেন, তাদের প্রতি জানাই আন্তরিক সমবেদনা।
খালেদা জিয়া বলেন, যুক্তরাজ্যে চিকিৎসার কারণে থাকলেও আমি সব সময় আপনাদের সঙ্গে আছি। দীর্ঘ ১৫ বছর যারা গণতন্ত্রের জন্য ও আমার মুক্তির জন্য সহকর্মী প্রাণ দিয়েছেন, নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, মিথ্যা মামলায় জর্জরিত হয়ে এখনও আদালতে ন্যায় বিচারের জন্য লড়ছেন, তাদের এই ত্যাগ জাতি চিরকাল স্মরণ রাখবে।
খালেদা জিয়া আরও বলেন, বাংলাদেশের জনগণ, বিশেষ করে তরুণ সমাজ আজ একটি ইতিবাচক গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের জন্য উন্মুখ। আমাদের কাজ করতে হবে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে, সংকীর্ণতা ভুলে। তিনি আরও জানান, ফ্যাসিস্টদের দোসররা এবং দেশের শত্রুরা গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে অর্জিত সফলতাকে নস্যাৎ করার জন্য গভীর চক্রান্ত করছে। ইস্পাত-কঠিন ঐক্যের মাধ্যমে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই চক্রান্ত ব্যর্থ করতে হবে।
অবশেষে, তিনি সকলকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমি অসুস্থ অবস্থায় হলেও আপনাদের নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে আরও ঐক্যবদ্ধ এবং সুসংহত করে তুলি, এবং আন্দোলন, সংগ্রাম ও রাষ্ট্র পরিচালনায় নেতৃত্ব প্রদানে এগিয়ে আসি।
তিনি দেশের বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে বলেন, আপনারা এবং ছাত্রদের সমন্বিত আন্দোলনের ফলেই ফ্যাসিস্ট শাসকরা বিদায় নিয়েছে, এবং একটি অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। জনগণের প্রত্যাশা, রাষ্ট্রের সংস্কার কাজ দ্রুত সমাপ্ত করে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়া এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা।