গাজা উপত্যকার গুরুত্বপূর্ণ শহর রাফাহ পুরোপুরি দখল করে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। দাবি অনুযায়ী, খান ইউনিস ও রাফাহর মধ্যকার অঞ্চলের ‘মোরাগ’ করিডর পুরোপুরি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে শহরটিকে অবশিষ্ট গাজা থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে দখলদার বাহিনী। ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি শুরুর আগে প্রায় সাড়ে ১৫ মাস ধরে ইসরায়েলি আগ্রাসন চলাকালে বাস্তুচ্যুত গাজাবাসীর অন্যতম আশ্রয়স্থল ছিল এই রাফাহ।
শনিবার (১২ এপ্রিল) পৃথক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা ও বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এরইমধ্যে দখলকৃত অঞ্চলটি থেকে গাজার বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশনাও দিয়েছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী।
গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের অপসারণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ তিনি বলেন, যেসব গাজাবাসী স্বেচ্ছায় অন্য দেশে চলে যেতে চায়, তাদের যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে।
রাফাহর নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে শনিবার কথা বলেছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ। তিনি বলেছেন, রাফাহকে গাজার বাকি অংশের সঙ্গে যুক্তকারী দক্ষিণ গাজার একটি রুট ‘মোরাগ করিডোর’ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে তার সেনাবাহিনী। পুরো রাফাহকে ঘিরে রেখেছে তারা।
কাটজ আরও বলেন, গাজা উপত্যকাকে দুই ভাগে বিভক্ত করা আরেকটি রুট নেটজারিম করিডোরকেও প্রসারিত করা হবে।
রাফাহ এখন ইসরায়েলের ‘নিরাপত্তা অঞ্চলের’ অংশ বলে এক বিবৃতিতে জানান তিনি। একইসঙ্গে গাজায় বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, যুদ্ধ বন্ধ করে হামাসকে নির্বাসিত করার এবং সমস্ত জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার এটাই শেষ সুযোগ। যদি গাজার বাসিন্দারা কথামতো কাজ না করে, তবে পুরো উপত্যকা জুড়ে ইসরায়েলি অভিযান ছড়িয়ে পড়বে।
প্রসঙ্গত, গাজায় গত ১৯ জানুয়ারি শুরু হওয়া সবশেষ যুদ্ধবিরতি দুই মাস কার্যকর রাখার পর গত ১৮ মার্চ চুক্তি লঙ্ঘন করে আবারও ব্যাপক হামলা চালানো শুরু করে ইসরায়েল। এর আগে, সিরিয়ায় আসাদ সরকারের পতনের পরপরই গাজার সীমান্তবর্তী ফিলাডেলফি করিডর দখল করে রেখেছিল ইসরায়েলি সেনারা। এরপর খান ইউনিসের কাছে একটি মোরাগ করিডর তৈরি করে ইসরায়েল। এবার এই করিডরটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার মাধ্যমে খান ইউনিস থেকে আলাদা হয়ে গেছে রাফাহ। একইসঙ্গে পুরো অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে ইসরায়েলের।