
রাইজিংসিলেট- ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী মানুষের মুখের কথা অনেক শক্তিশালী। কারো প্রতি অভিশাপ বা বদদোয়া করা শুধু একটি বাক্য নয়—এর রয়েছে গভীর প্রভাব এবং ভয়াবহ পরিণতি। ইসলাম ধর্মে কাউকে অন্যায়ভাবে অভিশাপ দেওয়ার বিষয়ে কঠোরভাবে সতর্ক করা হয়েছে। সহিহ হাদিসে এমন একাধিক ঘটনা বর্ণিত হয়েছে, যা থেকে বোঝা যায়—একজন মুসলমানের জবান কতটা প্রভাব বিস্তার করতে পারে।
হাদিসে কী বলা হয়েছে অভিশাপ সম্পর্কে?
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,
“যখন কেউ কাউকে অভিশাপ দেয়, তখন সে অভিশাপ আকাশে উঠে যায়, কিন্তু আকাশের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখন তা পৃথিবীর দিকে ফিরে আসে, সেখানেও দরজা বন্ধ থাকে। এরপর সেই অভিশাপ যাকে উদ্দেশ্য করে দেওয়া হয়েছিল, যদি সে তা পাওয়ার উপযুক্ত না হয়, তবে তা অভিশাপদাতার দিকেই ফিরে আসে।”
(সহিহ হাদিস, আবু দাউদ: ৪৯০৬)
অন্য এক হাদিসে এসেছে,
“মু’মিন ব্যক্তি অভিশাপকারী হতে পারে না।”
(তিরমিজি: ১৯৭৭)
এ থেকে বোঝা যায়, ইসলাম শুধু শারীরিক কাজকর্মেই নয়, কথাবার্তায়ও শালীনতা ও সংযম বজায় রাখতে নির্দেশ দেয়।
অভিশাপের সামাজিক পরিণতি
ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ ছাড়াও, কাউকে অভিশাপ দেওয়া ব্যক্তিগত ও সামাজিক সম্পর্কের অবনতি ঘটায়। মনোবিদদের মতে, ক্রোধ ও নেতিবাচক কথাবার্তা দীর্ঘমেয়াদে মানসিক শান্তি নষ্ট করে। ফলে অভিশাপ শুধু অন্যের ক্ষতির কারণ নয়, নিজের আত্মিক শান্তিরও প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায়।
ইসলাম এক শান্তির ধর্ম, যেখানে অন্যের প্রতি দয়া, সহানুভূতি ও ক্ষমাশীলতাকে উৎসাহিত করা হয়। অভিশাপের মতো নেতিবাচক আচরণ থেকে বিরত থাকা একান্তভাবে প্রয়োজন, কারণ হাদিস অনুযায়ী এর ভয়াবহ পরিণতি শুধু অন্যের ওপর নয়, নিজের ওপরও আসতে পারে। তাই ব্যক্তিগত রাগ বা হতাশা কখনো যেন আমাদের এমন পথে পরিচালিত না করে, যা আখিরাতে ও এই দুনিয়াতেও ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।