
রাইজিং সিলেট- কিডনিতে পাথর: লক্ষণ, কারণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধের উপায়। কিডনি আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যার কাজ রক্ত পরিশোধন করা এবং শরীর থেকে বর্জ্য ও অতিরিক্ত পানি দূর করা। এটি লবণ ও খনিজের ভারসাম্য বজায় রাখে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তবে বিভিন্ন কারণে কিডনিতে পাথর হতে পারে, যা একটি সাধারণ ও যন্ত্রণাদায়ক সমস্যা।
কিডনিতে পাথর কী? কিডনিতে পাথর হল কঠিন স্ফটিক, যা মূত্রে থাকা খনিজ ও লবণের অতিরিক্ত ঘনত্ব থেকে তৈরি হয়। এটি ছোট দানার মতো হতে পারে বা বড় আকারও ধারণ করতে পারে।
লক্ষণ- কোমর বা পেটে তীব্র ব্যথা
প্রস্রাবে জ্বালা বা রক্ত দেখা
প্রস্রাবের গন্ধ বা ঘোলা রঙ
বমি বমি ভাব বা বমি
জ্বর বা কাঁপুনি
ঘন ঘন প্রস্রাবের বোধ
প্রস্রাব আটকে যাওয়া
ছোট পাথর অনেক সময় উপসর্গ ছাড়াই বের হয়ে যেতে পারে।
সম্ভাব্য কারণ
কম পানি পান
উচ্চ মাত্রার প্রোটিন, লবণ বা চিনি গ্রহণ
পারিবারিক ইতিহাস
ইউরিনারি ট্র্যাক্টে সমস্যা বা অপারেশন
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস
পাথরের ধরণ
ক্যালসিয়াম অক্সালেট/ফসফেট পাথর: সবচেয়ে সাধারণ
ইউরিক অ্যাসিড পাথর: অতিরিক্ত মাংসজাত খাদ্য থেকে
স্ট্রুভাইট পাথর: সংক্রমণজনিত
সিস্টিন পাথর: বংশগত
চিকিৎসা- চিকিৎসা নির্ভর করে পাথরের আকার ও অবস্থানের ওপর। ছোট পাথরের ক্ষেত্রে বেশি পানি পান ও কিছু ওষুধ কার্যকর হতে পারে। বড় পাথরের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত চিকিৎসা পদ্ধতি:
শকওয়েভ থেরাপি: তরঙ্গের সাহায্যে পাথর ভেঙে ফেলা
ইউরেটারোস্কোপি: বিশেষ টিউব ব্যবহার করে পাথর তোলা
নেফ্রোলিথোটোমি: পিঠে ছিদ্র করে কিডনি থেকে পাথর সরানো
ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারি: জটিল বা বড় পাথরের জন্য
প্রতিরোধের উপায়
প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি (২–৩ লিটার) পান
অতিরিক্ত লবণ, চিনি ও প্রোটিন এড়িয়ে চলা
অক্সালেটযুক্ত খাবার যেমন পালংশাক, বাদাম, গমের ভুষি কম খাওয়া
স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা
ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ক্যালসিয়াম গ্রহণ
বারবার সমস্যা হলে খাদ্যাভ্যাস ও ওষুধের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ
উপসংহার। কিডনিতে পাথর একটি নিয়ন্ত্রণযোগ্য সমস্যা। সময়মতো চিকিৎসা ও সঠিক জীবনযাত্রা মেনে চললে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। সচেতনতা এবং প্রতিরোধই এর সেরা উপায়।