
নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করে সুরমা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে। এতে জনমনে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সিলেটের নবাগত জেলা প্রশাসক সারওয়ার আলম গত ২৬ আগস্ট এক আদেশে (নং ১৯-২৭) সিলেট জেলার সর্বত্র অবৈধ বালু-মাটি উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। এই নিষেধাজ্ঞা মেনে নিয়ে সিলেট জেলার সবক’টি নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ হলেও সুরমার বালুখেকোরা এ ব্যাপারি নির্বিকার। তারা তাদের কাজ চালিয়েই যাচ্ছে।
রবিবার (২১ সেপ্টেমবর) কানাইঘাট ও জকিগন্জ উপজেলারবাসীর পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক বরাবরে এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক বরাবরে দেওয়া আবেদনে দুই উপজেলার জনসাধারণ তাদের ঘরবাড়ি কৃষিজমি এবং সরকারী-বেসরকারি স্থাপনা রক্ষায় সুরমা নদীর কানাইঘাট-জকিগঞ্জ এলাকা থেকে অবিলম্বে অবৈধ বালু-মাটি উত্তোলন বন্ধ এবং ‘লুটেরা’ মিজানুর রহমান ডিপজলদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জোর দাবি জানিয়েছেন।
অভিযোগে প্রকাশ, সিলেট মহানগরীর আখালিয়ার বর্তমান বাসিন্দা ও কানাইঘাট উপজেলার বড়বন্দ এলাকার জনৈক মিজানুর রহমান ওরফে ডিপজল সুরমা নদীর কানাইঘাট- জকিগন্জ বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে বালু-মাটি উত্তোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
নদীর প্রায় ৭০ একর ইজারা অযোগ্য এলাকা থেকে ২০/২৫ টি নিষিদ্ধ সাকশান ড্রেজার ও বাল্কহেড দিয়ে নদীর দুই ধার থেকে অবৈধভাবে বালু-মাটি লুটপাট করছেন মিজান। উত্তোলিত লাখ লাখ ঘনফুট বালু-মাটি বিক্রি করে তিনি অবৈধভাবে কামাই করছেন কোটি কোটি টাকা। ফলে সুরমা নদীর কানাইঘাট-জকিগঞ্জ এলাকার উভয় তীরে ভাঙ্গন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। ভরা সুরমা নদীতে তলিয়ে যাচ্ছে ঘরবাড়ি কৃষিজমি ও সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা। পাউবো’র সুরমা ডাইকের বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে প্রচুর ফাটল। বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে তুলনামূলক নিচু এই দুই উপজেলা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সুরমা নদী থেকে ব্যাপক আকারে বালু-মাটি উত্তোলনের কোনো ইজারা বা অনুমতি মিজানুর রহমান ডিপজলের নেই। শুধুমাত্র জকিগঞ্জ উপজেলার জেএল ০৮ নং মৌজায় ‘সুরমা নদী (নয়াগাঁও)’ নামে মাত্র ২.৫০ (আড়াই) একরের একটি মহালের ইজারা নিয়েছেন মিজান। এটা দেখিয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে ভুল বুঝিয়ে কানাইঘাট জকিগঞ্জ দুই উপজেলাধীন সুরমা নদীর বিশাল এলাকার বালু-মাটি লুটে নিচ্ছেন মিজান।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখা লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করেছে।