
রাইজিংসিলেট- আজকাল অনেকেই শরীর খারাপ লাগলে বা কোনো উপসর্গ দেখা দিলে সরাসরি ইন্টারনেটে বা এআই প্ল্যাটফর্মে স্বাস্থ্য পরামর্শ খোঁজেন। যদিও সাধারণ তথ্য জানতে এআই উপযোগী, কিন্তু কিছু গুরুতর শারীরিক সমস্যায় এর উপর নির্ভর করা বিপদজনক হতে পারে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, কিছু ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার পরামর্শ জীবন রক্ষা করার বদলে সময় নষ্ট করে আরও ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
কারণ: এআই শারীরিক পরীক্ষা করতে পারে না
রোগীর চিকিৎসা ইতিহাস বা বর্তমান শারীরিক অবস্থা পুরোপুরি জানে না
জরুরি মুহূর্তে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ
ভুল তথ্য দিতে পারে বা ভুল রোগনির্ণয় করতে পারে
চিকিৎসা পেতে দেরি করিয়ে দেয়, যা বিপদ বাড়ায় নিচে এমন ৬টি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা তুলে ধরা হলো, যেখানে কখনোই এআইয়ের উপর ভরসা করা উচিত নয়:
১. বুকের ব্যথা- হঠাৎ বুকের ব্যথা শুরু হলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি থাকতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে এক মুহূর্তও দেরি না করে সরাসরি হাসপাতালে যেতে হবে। শুধুমাত্র ডাক্তার দ্রুত প্রয়োজনীয় পরীক্ষা ও চিকিৎসা দিতে পারেন।
২. স্ট্রোকের লক্ষণ- মুখ বেঁকে যাওয়া, কথা জড়ানো, হাত-পা দুর্বল হওয়া বা দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে যাওয়া স্ট্রোকের লক্ষণ হতে পারে। এতে প্রতিটি সেকেন্ড অত্যন্ত মূল্যবান। এআই কোনোভাবেই তাত্ক্ষণিক সঠিক চিকিৎসা দিতে পারে না।
৩. তীব্র পেটব্যথা- হঠাৎ তীব্র পেটব্যথা অ্যাপেন্ডিসাইটিস, পিত্তথলির সমস্যা বা অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের লক্ষণ হতে পারে। এগুলো এমন অবস্থা যেখানে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা ছাড়া বড় বিপদ হতে পারে। এআই শুধু অনুমানভিত্তিক পরামর্শ দিতে পারে, সঠিক কারণ নির্ণয় নয়।
৪. উচ্চ জ্বরের সঙ্গে খিঁচুনি বা অচেতন ভাব
উচ্চ জ্বরের পাশাপাশি খিঁচুনি বা বিভ্রান্তি দেখা দিলে তা মেনিনজাইটিস বা সেরকম কোনো মারাত্মক সংক্রমণের ইঙ্গিত হতে পারে। এই অবস্থায় চিকিৎসা নিতে দেরি করা জীবনের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
৫. হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া বা দীর্ঘদিনের ক্লান্তি- অনিয়ন্ত্রিত ওজন কমা বা দারুণ ক্লান্তি অনেক সময় ক্যানসার বা অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি রোগের পূর্বাভাস হতে পারে। এমন সমস্যায় এআই জীবনধারার পরামর্শ দিলেও, এর পেছনের আসল কারণ শনাক্ত করা সম্ভব নয়।
৬. শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া- শ্বাসকষ্ট অ্যাজমা, ফুসফুসের সংক্রমণ বা হার্টের সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। এতে দেরি করলে বিপদ বাড়তে পারে। এআইয়ের পরামর্শ না নিয়ে দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি।
কখন এআই ব্যবহার করা যেতে পারে? সাধারণ স্বাস্থ্য সচেতনতা, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গঠন, হালকা ব্যায়াম বা ফিটনেস পরিকল্পনা, প্রাথমিক ল্যাব রিপোর্ট বোঝার জন্য
তবে এ ক্ষেত্রেও চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত নয়।
এআই স্বাস্থ্যসেবায় এক যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে ঠিকই, তবে এটি কখনোই অভিজ্ঞ চিকিৎসকের বিকল্প নয়। জীবন-মরণ সংক্রান্ত সমস্যায় মানুষই মানুষের পাশে। তাই দেরি না করে সঠিক চিকিৎসা নেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।