
সাইফুল ইসলাম নামে এক সাংবাদিককে প্রকাশ্যে পুড়িয়ে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে চরফ্যাশন পৌরসভা শ্রমিকলীগ সভাপতি সাইফুল ইসলাম সবুজের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাতে ভুক্তভোগী ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম হত্যার হুমকির ঘটনায় নিরাপত্তা চেয়ে চরফ্যাশন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। এর আগে, এদিন সকালে চরফ্যাশন পৌরসভা ৭নং ওয়ার্ডের সাংবাদিক সাইফুল ইসলামের বসতবাড়ি সংলগ্ন মসজিদের সামনে এ হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। তিনি চরফ্যাশন রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক বাংলা পত্রিকার চরফ্যাশন উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন।
সাংবাদিক মো. সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, শ্রমিকলীগ নেতা সবুজের স্ত্রী একটি সরকারি প্রাইমারি স্কুলে সহকারী শিক্ষক। চলতি বছরের জানুয়ারিতে তার স্ত্রী শ্রেণিকক্ষে দ্বিতীয় শ্রেণির ক্লাসে তার শিশু কন্যাকে টেবিলে বসিয়ে বাকবাকুম পায়রা কবিতা পাড়িয়ে ভিডিও চিত্র ধারণ করে তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করে ক্যাপশন লিখেন ‘ম্যাডাম যখন দ্বিতীয় শ্রেণির ইংরেজি ক্লাসে বাকবাকুম পায়রা কবিতা শেখায়’। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এ ঘটনায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। আমি সবুজের প্রতিবেশী। তার স্ত্রীকে নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশে আমার ইন্ধন রয়েছে এমন অভিযোগ তুলে সে আমার ওপর ক্ষিপ্ত হন এবং একাধিকবার মামলা হামলার হুমকি দেয়।
তিনি আরও বলেন, মঙ্গলবার সকালে শ্রমিকলীগ নেতা সবুজের সঙ্গে মসজিদের সমানে দেখা হলে ওই ঘটনার জের ধরে আমার সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। স্থানীয়দের সামনে প্রকাশ্যে তিনি আমাকে ও আমার বাবাকে পুড়িয়ে হত্যার হুমকি দেন। এ ঘটনার স্বাক্ষী রয়েছে। এর আগেও আমাকে একাধিকবার হত্যার হুমকি দিয়েছে সে। কিন্তু ফের আমাকে আগুনে পুড়িয়ে হতার হুমকি দেওয়ায় আমি এবং আমার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। পরে রাতে চরফ্যাশন থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক ও স্থানীয়রা জানান, অভিযুক্ত শ্রমিকলীগ নেতার স্ত্রী হাফছা খানম চরফ্যাশন উপজেলার ৩৯নং হাজারীগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি তার স্ত্রীর তাদের তিন বছর বয়সী কন্যা শিশুকে শ্রেণিকক্ষের শিক্ষকের টেবিলের ওপর হাতে বেত দিয়ে বসিয়ে পাঠদান করোনোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় নানা আলোচনা-সমালোচনা। যা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। আর এতেই ক্ষিপ্ত হন ওই শ্রমিকলীগ নেতা।
চরফ্যাশন থানার ওসি মিজানুর রহমান হাওলাদার জানান, হুমকির ঘটনায় সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম একটি সাধারন ডায়েরী করেছেন। ঘটনাটি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অভিযুক্ত শ্রমিকলীগ নেতা সবুজ হুমকির বিষয় অস্বীকার করে জানান, তাদের সঙ্গে আমার কোন বিরোধ নাই। তাকে হুমকি কেন দিবো।